প্রতীকী চিত্র।
করোনার মধ্যেও গত অর্থবর্ষে (২০২০-২১) প্রত্যক্ষ কর আদায় সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ছাপানোয় আশা জেগেছিল যে পরোক্ষ আদায়ও ভাল হবে। তা সত্যি করে মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রক জানাল, অতিমারির আবহে গত বছরে পরোক্ষ কর আদায় শুধু সংশোধিত লক্ষ্যই ছাড়ায়নি, টপকে গিয়েছে তার আগের অর্থবর্ষের আয়কেও। ২০২০-২১ সালে জিএসটি, উৎপাদন শুল্ক-সহ বিভিন্ন খাতে কেন্দ্রের মোট কর আদায় দাঁড়িয়েছে ১০.৭১ লক্ষ কোটি টাকা। যা ২০১৯-২০ সালের ৯.৫৪ লক্ষ কোটি টাকার চেয়ে ১২.৩% বেশি। আর এই বৃদ্ধির অন্যতম কারিগর কেন্দ্রীয় উৎপাদন শুল্ক এবং পরিষেবার কর। যা দেখে সংশ্লিষ্ট মহলের অনেকেই বলছেন, করোনার মধ্যে আমজনতার দুর্ভোগ বাড়িয়ে পেট্রল-ডিজেলের শুল্ক রেকর্ড বাড়িয়েছিল কেন্দ্র। আর সেই করের টাকা দিয়ে নিজেদের কোষাগার ভরেছে মোদী সরকার।
গত বছর ফেব্রুয়ারিতে বাজেট পেশের পরে মার্চে করোনা যুঝতে দীর্ঘ লকডাউন জারি হয় দেশে। যার জেরে থমকে যায় জনজীবন। আয় কমে কেন্দ্রেরও। সব দিক বিচার করেই তারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ করের লক্ষ্যমাত্রা কমাতে বাধ্য হয়। এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার আয়কর দফতর জানিয়েছিল, সেই সংশোধিত লক্ষ্যের চেয়ে ৫% বেশিই প্রত্যক্ষ কর আদায় করা গিয়েছে। এ বার অর্থ মন্ত্রক জানাল, ৯.৮৯ লক্ষ কোটির সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা পেরিয়েছে পরোক্ষ করও।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, আদায় হওয়া ১০.৭১ কোটির মধ্যে জিএসটি খাতে (কেন্দ্রীয় ও সম্মিলিত জিএসটি এবং ক্ষতিপূরণ সেস মিলিয়ে) এসেছে ৫.৪৮ লক্ষ কোটি টাকা। যা তার আগের বছরের ৫.৯৯ লক্ষ কোটির চেয়ে ৮% কম। আমদানি শুল্কের হাত ধরে রাজকোষে ঢুকেছে ১.৩২ লক্ষ কোটি। যা ২১% বেশি। তবে সব চেয়ে উল্লেখযোগ্য ৫৯.২% বৃদ্ধির মুখ দেখেছে কেন্দ্রীয় উৎপাদন শুল্ক এবং পরিষেবার কর (এরিয়ার)। ২০১৯-২০ সালের ২.৪৫ লক্ষ কোটি থেকে তা গত বছর বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩.৯১ লক্ষ কোটি টাকায়।
গত অর্থবর্ষের প্রথমার্ধে বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড প্রায় থমকে থাকায় জিএসটি আদায় মুখ থুবড়ে পড়েছিল। তার পরে দ্বিতীয়ার্ধে টানা ছ’মাস ১ লক্ষ কোটির বেশি জিএসটি আদায় হয়েছে। অর্থ মন্ত্রকের দাবি, কেন্দ্রের বিভিন্ন পদক্ষেপ এতে সাহায্য করেছে। তার উপরে চলতি ২০২১-২২ অর্থবর্ষে আমদানি শুল্ক খাতে ১.৩৬ লক্ষ কোটি, ৩.৩৫ লক্ষ কোটির উৎপাদন শুল্ক এবং ৬.৩০ লক্ষ কোটির জিএসটি আদায়ের লক্ষ্য নিয়েছে কেন্দ্র। পরোক্ষ কর ও আমদানি শুল্ক পর্ষদের চেয়ারম্যান এম অজিত কুমার বলেন, এই লক্ষ্য খুব বেশি নয়। আশা গত কয়েক মাসের ধারা এপ্রিলেও বজায় থাকবে।
তবে ডেলয়েট ইন্ডিয়ার সিনিয়র ডিরেক্টর এম এস মণির মতে, আর্থিক কর্মকাণ্ড চালু হওয়ায় জিএসটি আয় যেমন বেড়েছে, তেমনই ভুললে চলবে না যে তেলে উৎপাদন শুল্ক বৃদ্ধিও অর্থবর্ষের দ্বিতীয়ার্ধে কর আদায়ে সাহায্য করেছে। উল্লেখ্য, গত বছর মার্চে পেট্রল-ডিজেলে রেকর্ড উৎপাদন শুল্ক বাড়িয়েছিল সরকার। এমনকি সিজিএ-র রিপোর্টও জানিয়েছিল এই খাতে বিপুল অর্থ কোষাগারে তুলেছে কেন্দ্র। এ বার পরোক্ষ কর আদায়ের পরিসংখ্যান দেখাল সেই একই ছবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy