Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

নেট দুনিয়ায় দশ বছরে অপরাধ বেড়েছে ১৯গুণ

নেট-নির্ভর প্রজন্মের পিলে চমকে দিয়ে ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো জানিয়েছে গত এক দশকে দেশে সাইবার অপরাধ বেড়েছে ১৯গুণ। আর তার শীর্ষে রয়েছে প্রতারণা। ২০০৫ থেকে ২০১৪। দশ বছরে সাইবার অপরাধের সংখ্যা ৪৮১ থেকে বেড়ে ৯,৬২২। বেড়েছে গ্রেফতারের সংখ্যাও। কিন্তু অপরাধ কমেনি এক চুলও।

গার্গী গুহঠাকুরতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০১৬ ০৩:২০
Share: Save:

নেট-নির্ভর প্রজন্মের পিলে চমকে দিয়ে ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো জানিয়েছে গত এক দশকে দেশে সাইবার অপরাধ বেড়েছে ১৯গুণ। আর তার শীর্ষে রয়েছে প্রতারণা। ২০০৫ থেকে ২০১৪। দশ বছরে সাইবার অপরাধের সংখ্যা ৪৮১ থেকে বেড়ে ৯,৬২২। বেড়েছে গ্রেফতারের সংখ্যাও। কিন্তু অপরাধ কমেনি এক চুলও। বরং ২০১৫ সালে নেটব্যাঙ্কিং, এটিএম ও অন্যান্য ব্যাঙ্কের লেনদেনে সাইবার অপরাধের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১২ হাজার।

এই প্রতারণা শুধু ব্যাঙ্ক ও অন্যান্য আর্থিক সংস্থার কাজেই সীমাবদ্ধ নয়। নিত্যনতুন উপায় উঠে আসছে নেটের মাধ্যমে বিভিন্ন লেনদেনেও। সাইবার অপরাধীদের নজরে রয়েছে নেট বাজার। এই তথ্য ই-কমার্স ব্যবসায়ীদের কপালে ইতিমধ্যেই ভাঁজ ফেলেছে।

ব্যবসায়িক সাফল্যের নানা উপকরণ মজুত থাকলেও দুশ্চিন্তা ঝেড়ে ফেলতে পারছে না ই-কমার্স দুনিয়া। ২০২০ সালে নেট বাজারের ক্রেতা সংখ্যা ১৭ কোটি ছাড়াবে। আর চলতি মাসের শেষে দেশে গ্রাহকের সংখ্যা ছোঁবে ৪৬ কোটি।

নেটবাজারের রকেট গতির উত্থানের পীঠস্থান এখন ভারত। শুধুই লাফিয়ে বাড়তে থাকা নেট-নির্ভর প্রজন্মের ক্রেতা নয়। আছে দেশি-বিদেশি উদ্যোগ-পুঁজির নজর। উন্নত প্রযুক্তির দৌলতে বাড়ছে নেট দুনিয়ার রমরমা। কিন্তু তার মাঝেই ঈশান কোণে মেঘ জমতে শুরু করেছে। প্রতারণার ছোট-বড় ঘটনা প্রায়ই ক্রেতা-বিক্রেতার আস্থা নড়বড়ে করে দিচ্ছে।

প্রতারণার তালিকায় উঠে এসেছে চোরাই ও নকল জিনিসের লেনদেনও। সরাসরি সাইবার অপরাধ না-হলেও প্রযুক্তির হাত ধরেই দেশের নেটবাজার হয়ে উঠছে চোরাই ও নকল জিনিস বিক্রির স্বর্গরাজ্য। সম্প্রতি এ ব্যাপারে একটি সমীক্ষা করেছে বণিকসভা ফিকি ও আন্তর্জাতিক পরামর্শদাতা সংস্থা গ্রান্ট থর্নটন। সমীক্ষায় উঠে এসেছে অনলাইন বাজারের এই দুর্বলতা। গ্রান্ট থর্নটন ইন্ডিয়ার পার্টনার বিদ্যা রাজারাওয়ের মতে, অনলাইন বাজারকে নতুন পথ হিসেবে বেছে নিচ্ছে চোরাই ও নকল ব্যবসার জগত। তিনি বলেন, ‘‘অনলাইন বাজারের মাধ্যমে বিরাট সংখ্যক ক্রেতার কাছে পৌঁছতে পারছে এই সব জিনিসের বিক্রেতারা। নির্দিষ্ট আইনের অভাবে নেটবাজার সহজেই শিকার হচ্ছে এই বেআইনি ব্যবসার।’’

সাইবার অপরাধের তালিকায় প্রতারণার পরে রয়েছে মহিলা ও ছোট বাচ্চাদের প্রতি অসম্মান, যৌন নির্যাতন, প্রতিহিংসামূলক মানসিক নিগ্রহের মতো বিষয়। রয়েছে ‘অনলাইন বুলিং’ বা নেটে দাদাগিরি। সফট্ওয়্যার নিরাপত্তা সংস্থা নরটনের আন্তর্জাতিক একটি সমীক্ষা বলছে অনলাইন বুলিং-এ চিন ও সিঙ্গাপুরের পরেই ভারত। এবং ছোটরাই এর সবচেয়ে বড় শিকার। ৩২% বাবা-মা জানান তাঁদের বাচ্চার এ রকম তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে। মূলত বিভিন্ন ‘সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট’-এর মাধ্যমেই সমস্যা হচ্ছে, দাবি সমীক্ষায়।

আর সাইবার অপরাধ এত বাড়ায় ভুগছেন সাধারণ মানুষ। নরটনের দাবি, এই অপরাধের গড় মূল্য ১৬০০০ টাকা। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে যার শিকার ১১ কোটির বেশি মানুষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE