জাতীয় সড়কের উপর টোলগুলিতে লেনদেন সহজ করার লক্ষ্যে ফাস্ট্যাগের নিয়মে বড় বদল করল কেন্দ্র। এই নিয়ে ন্যাশনাল পেমেন্টস কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া বা এনপিসিআইয়ের তরফে জারি হয়েছে নতুন সার্কুলার। সেখানে বলা হয়েছে, ফাস্ট্যাগে কম ব্যালান্স, টাকা দিতে দেরি বা ট্যাগটি কালো তালিকাভুক্ত হলে দিতে হবে অতিরিক্ত জরিমানা। ফলে এ ব্যাপারে গ্রাহকদের সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে এনপিসিআই কর্তৃপক্ষ।
চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি ফাস্ট্যাগ নিয়ে নতুন সার্কুলার জারি করে নরেন্দ্র মোদী সরকার। ওই সার্কুলার অনুযায়ী গত ১৭ ফেব্রুয়ারি চালু হয় নয়া নিয়ম। এনপিসিআইয়ের তরফে বলা হয়েছে, প্রায়ই টোল প্লাজ়াগুলির সামনে দেখা যাচ্ছে গাড়ির লম্বা লাইন। ফলে চালকদের দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে। তাঁদের এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিতে নিয়ম বদল করা হয়েছে। পাশাপাশি, টোলের লেনদেন সহজ করা এবং জালিয়াতি আটকানোও প্রশাসনের উদ্দেশ্য বলে সার্কুলারে উল্লেখ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, কোনও গাড়ির চালক টোল অতিক্রম করার আগে ৬০ মিনিটের বেশি এবং টোল অতিক্রম করার পর ১০ মিনিটের বেশি ফাস্ট্যাগকে নিষ্ক্রিয় রাখেন, তা হলে তাঁর লেনদেন বাতিল করা হবে। সেখানে চালকের কাছে আসবে ‘সিস্টেম এরর কোড ১৭৬’। এ ছাড়া চার্জব্যাক প্রসেস এবং কুলিং পিরিয়ডের নিয়ম বদল করেছে এনপিসিআই।
নয়া নিয়মে কোনও গাড়ি টোল রিডারের মধ্যে দিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে ১৫ মিনিটের বেশি সময় নিলে, চালককে অতিরিক্ত চার্জ দিতে হবে। আবার টোল প্লাজ়ায় লেনদেনের ক্ষেত্রে বিলম্ব হলে বা গ্রাহকের ফাস্ট্যাগ অ্যাকাউন্টে কম ব্যালান্স থাকলে, টোল অপারেটরকে জবাবদিহি করতে হবে। আগে গ্রাহকেরা টোল বুথে ফাস্ট্যাগ রিচার্জ করে গাড়ি নিয়ে এগিয়ে যেতে পারতেন। কিন্তু নতুন নিয়মে তাঁদের আগে থেকে ফাস্ট্যাগ রিচার্জ করতে হবে।
এ ছাড়া নতুন সার্কুলার অনুযায়ী, ব্যাঙ্ক কোনও গ্রাহকের ফাস্ট্যাগ অ্যাকাউন্ট থেকে ভুল চার্জ কেটে নিলে, গ্রাহক সেই টাকা ফেরত চেয়ে আবেদন করতে পারবেন। তবে কালো তালিকাভুক্ত বা কম ব্যালেন্সের ফাস্ট্যাগ ব্যবহারকারীদের আবেদন করতে হবে ১১৫ দিন পর।
এনপিসিআইয়ের তরফে, গ্রাহকদের ফাস্ট্যাগ ওয়ালেটে পর্যাপ্ত ব্যালান্স রাখতে বলা হয়েছে। কোনও কারণে ভুল চার্জ কাটা হয়ে গেলে তাঁদের অপেক্ষা করতে হবে ১৫ দিন। এ ছাড়া নিয়মিত ফাস্ট্যাগের স্ট্যাটাস পরীক্ষা করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় সংস্থাটির প্রকাশ করা তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের নভেমরে ফাস্ট্যাগ লেনদেনের সংখ্যা ছিল ৩,৫৯০ লক্ষ। এক মাসের মাথায় (পড়ুন ডিসেম্বের) ছ’শতাংশ বেড়ে সেই অঙ্ক পৌঁছয় ৩,৮২০ লক্ষে। নভেম্বর ও ডিসেম্বরে ফাস্ট্যাগ থেকে আয় পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ৬,০৭০ কোটি এবং ৬,৬৪২ কোটি টাকা। অর্থাৎ, এক মাসে আয় বৃদ্ধি পেয়েছে ন’শতাংশ।