অতিমারির জেরে অর্থনীতি স্তব্ধ হয়ে যাওয়ার গুরুতর প্রভাব পড়েছে আবাসন শিল্পে। মূল্যায়ন সংস্থা ইন্ডিয়া রেটিংস অ্যান্ড রিসার্চের পূর্বাভাস, চলতি অর্থবর্ষে (২০২০-২১) দেশে ছোট-মাঝারি নির্মাতাদের বাড়ি ও ফ্ল্যাট বিক্রি কমতে পারে ৩৪%। আর এই সঙ্কোচনের উপরে ভিত্তি করে ২০২১-২২ অর্থবর্ষে তা বাড়তে পারে ৩০%। অতিমারি ও রুজির অনিশ্চয়তায় এ বছর বিক্রি কমার হিসেব হয়তো অপ্রত্যাশিত নয়। তবে উদ্বেগের বিষয় হল, আগামী অর্থবর্ষে এতটা ঘুরে দাঁড়ানোর পরেও ২০১৯-২০ সালের চাহিদার ধারেকাছে পৌঁছতে পারবে না আবাসন ক্ষেত্র। অন্তত ১৪% পিছিয়ে থাকবে।
করোনার ধাক্কায় রোজগার কমায় কিংবা অনেকের ক্ষেত্রে তা অনিশ্চিত হয়ে পড়ায় বাড়ি কেনার পরিকল্পনা স্থগিত রেখেছেন অথবা বাতিল করেছেন বহু মানুষ। যার ফলে আবাসন নির্মাতা সংস্থাগুলির হাতে জমছে বিক্রি না-হওয়া ফ্ল্যাট-বাড়ি। নির্মাণের কাজও আটকে যাওয়ায় বিরূপ প্রভাব পড়েছে ইস্পাত, সিমেন্ট-সহ বিভিন্ন শিল্পের উপরেও। উপায় হিসেবে এক সময়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গয়াল আবাসন শিল্পকে পরামর্শ দিয়েছিলেন, সরকারি সাহায্যের প্রত্যাশায় না-থেকে কম মুনাফা রেখে হাতে থাকা আবাসন বিক্রি করে দিতে। যা শিল্প মহলে অসন্তোষ তৈরি করেছিল।
ইন্ডিয়া রেটিংসের রিপোর্ট বলছে, ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে দেশে ৩২.৬ কোটি বর্গফুট ‘ফ্লোর স্পেস’ বিক্রি হয়েছিল। কিন্তু চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ন’মাসে বিক্রি হয়েছে তার ৪১% কম। যা অর্থবর্ষের শেষে দাঁড়াতে পারে ৩৪% সঙ্কোচনে। এই নিচু ভিতের উপরে দাঁড়িয়েই আগামী অর্থবর্ষে বিক্রি বাড়তে পারে। কিন্তু আদতে ঘুরে দাঁড়ানোর আশা সামান্যই। তবে গৃহঋণের সুদের হার অনেকটা কমে আসায় হাতে টাকা থাকলে বাড়ি কেনার আদর্শ সময় এটা।
তবে সমীক্ষায় দাবি, চলতি অর্থবর্ষে বড় আবাসন নির্মাতাদের বিক্রি বাড়তে পারে ৪.৩%। পরের অর্থবর্ষে আরও কিছুটা।