এ বছর রাজ্য জুড়ে তাপমাত্রা চড়ায় পাল্লা দিয়ে বেড়েছে বিদ্যুতের চাহিদা। রাজ্য সরকার সেই চাহিদা মেটানো হচ্ছে বলে দাবি করলেও গ্রাহক মহলের একাংশের অভিযোগ, মাঝে-মধ্যেই বেশ কিছুটা সময় পরিষেবা থাকছে না। আর বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পরিষেবার মূল ভিত তৈরি হয়েছিল রাজ্যে বাম এবং কেন্দ্রের প্রথম ইউপিএ জমানায়। আপাতত চাহিদা মেটাতে রাজ্যে সে ভাবে নতুন বড় শিল্প গড়ে না ওঠার কিছুটা সুবিধা মিললেও, কাঠামোগত সংস্কার করা না হলে অদূর ভবিষ্যতে চাপ বাড়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। আর সে ক্ষেত্রে আরও চাহিদা বাড়লে বিদ্যুৎ সংস্থাগুলির পক্ষেও তা পূরণ করা কঠিন হবে।
মঙ্গলবার রাতে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার এলাকায় মোট চাহিদা নজির গড়ে পৌঁছোয় ৯০২৪ মেগাওয়াটে। রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বুধবার জানান, এটি স্বাধীনতার পর থেকে সর্বকালীন নজির। গত বছর সর্বোচ্চ চাহিদা (৭৮৩২ মেগাওয়াট) ছিল ১৭ অগস্ট। মঙ্গলবার সিইএসসি-র এলাকাতেও সর্বোচ্চ চাহিদা ওঠে ২৫২৪ মেগাওয়াটে। সেটিও নজির। তাঁর দাবি, রাজ্যের ২.২২ কোটি গ্রাহককে নিরবচ্ছিন্ন ভাবে বিদ্যুতের জোগান দেওয়া সম্ভব হয়েছে সংশ্লিষ্ট বিদ্যুৎ সংস্থাগুলির কর্মদক্ষতায়।
যদিও বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, এখন সুষ্ঠু ভাবে বিদ্যুৎ পরিষেবা দেওয়ার মূল ভিত তৈরি করেছে বাম এবং প্রথম ইউপিএ জমানায় পর্যায়ক্রমে নেওয়া নানা সংস্কারমুখী সিদ্ধান্ত। তাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন, সংবহন ও বণ্টন ব্যবস্থা শক্তিশালী হয়েছিল। কিন্তু এখন মূলত সন্ধ্যা ও রাতে শপিং মলের মতো বাণিজ্যিক এবং কৃষিকাজের গ্রাহকদের বাড়তি চাহিদা মেটাতে বণ্টন সংস্থা এলাকায় রাজ্যের বাইরে থেকে স্বল্পমেয়াদে কিছুটা বিদ্যুৎ আমদানি করা হয়। সারা দিনে ততটা চাহিদা থাকে না। এখন থেকেই আরও বেশি দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি না করলে অদূর ভবিষ্যতে বাড়তি বিদ্যুৎ আমদানি করতে সমস্যার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
তবে বণ্টন সংস্থাগুলির পাল্টা দাবি, বহু গ্রাহক চুক্তি খেলাপ করে বাড়তি বিদ্যুৎ নেওয়ায় ট্রান্সফরমার বা ফিডার লাইনে বিভ্রাটের জন্য সাময়িক কিছু সমস্যা হচ্ছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)