শেয়ার সূচকের উত্থান দিয়ে শুরু হয়েছে সম্বৎ ২০৮২। তবে দীপাবলির মুরত লেনদেনে সেনসেক্স প্রথমে যে গতিতে উঠছিল, তা ধরে রাখতে পারেনি। শেষমেশ আগের দিনের তুলনায় ৬৩ পয়েন্ট (০.১০%) এগিয়ে থিতু হয় ৮৪,৪২৬ অঙ্কে। পরের লেনদেনের দিনেও (বৃহস্পতিবার) গোড়ায় বেশ খানিকটা তেতে ৮৬৪ উঠে সূচকটি পৌঁছে গিয়েছিল ৮৫,২৯০-এ। যা সর্বকালীন উচ্চতা থেকে মাত্র ৫৪৬ পয়েন্ট নীচে। কিন্তু পরে শেয়ার বিক্রির চাপে নামে ৮৪,৫৫৬ অঙ্কে। উত্থান ১৩০। টানা ওঠার পরে গত শুক্রবার ৩৪৫ নামলেও বাজারে তেজি ভাব বহাল।
এক বছর ঢিমেতালে চলার পরে যে সব কারণে বাজারে কিছুটা প্রাণ ফিরেছে, তার মধ্যে অন্যতম বহু পণ্য-পরিষেবায় জিএসটি ছাড়। এতে ২২ সেপ্টেম্বর থেকে দীপাবলির মধ্যে চাহিদা বিপুল বেড়েছে। বিক্রি ৬ লক্ষ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। গাড়ি বিক্রি বেড়েছে ২০% থেকে ২৫%। টাটা মোটরস নবরাত্রি থেকে দীপাবলি পর্যন্ত ১ লক্ষ গাড়ি বেচেছে। আশা, আগামী দিনেও চাহিদায় ভাটা পড়বে না। যে কারণে বিশ্ব ব্যাঙ্ক এবং ডেলয়েট চলতি বছরে ভারতের সম্ভাব্য জিডিপি বৃদ্ধির হার বাড়িয়েছে। মূল্যবৃদ্ধির নিয়ন্ত্রণে থাকাও প্রত্যাশা বাড়াচ্ছে। সেপ্টেম্বরে তা হয়েছে ১.৫৪%। অক্টোবরেও এতটা নীচে থাকলে ডিসেম্বরে সুদের হার আরও কমানোর দাবি উঠবে। সুদ কমলে শিল্পের লাভ হয়। সাধারণ ঋণগ্রহীতাদের ঋণ শোধের খরচ কমে।
পাশাপাশি এ বছর ভাল বর্ষা দেশে কৃষি উৎপাদন বাড়াবে। তাতে নিয়ন্ত্রণে থাকবে খাদ্যপণ্যের দাম। আয়কর এবং জিএসটি কমায় মানুষের হাতে থাকবে বাড়তি টাকা। আশা, এই পরিস্থিতিতে জিনিসের দাম কম থাকলে চাহিদা হবে ঊর্ধ্বমুখী। অর্থনীতি সম্পর্কে কিছু ভাল ইঙ্গিত বাজারে শক্তি ফেরাচ্ছে। ফিরিয়ে আনছে বিদেশি লগ্নিকারীদেরও। কোনও নেতিবাচক খবর না এলে অচিরেই সূচক নতুন নজির গড়বে।
তবে উত্থানে বাধা হতে পারে ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং বিশ্ব বাজারে তেলের দাম বৃদ্ধি। বড় মাপের যুদ্ধ বাঁধলে বহু হিসাব পাল্টে যাবে। রাশিয়ার দু’টি তেল সংস্থায় আমেরিকা নিষেধাজ্ঞা বিশ্ব বাজারে জোগান কমিয়ে দাম বাড়াতে পারে তেলের। রাশিয়া থেকে তেল কেনা কমাচ্ছে রিলায়্যান্স-সহ অন্যান্য ভারতীয় সংস্থাও। এতে তাদের খরচ বাড়বে। আমেরিকার শুল্কে মার খাচ্ছে রফতানি। ডলারও উঁচুতে। যুদ্ধের আবহে প্রতিরক্ষা খাতে অনেক দেশের সঙ্গে ভারতকেও খরচ বাড়াতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি স্বস্তিদায়ক নয়।
(মতামত ব্যক্তিগত)
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)