জিএসটি-র হার কমানোর ফলে কোন রাজ্যের কতখানি রাজস্ব ক্ষতি হবে এবং কী ভাবে এই বিষয়ে তাদের উদ্বেগ দূর করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা শুরু করল অর্থ মন্ত্রক। সূত্রের খবর, কর ছাঁটাইয়ের ফলে চলতি অর্থবর্ষে প্রায় ৪০,০০০ কোটি টাকার রাজস্ব আয় কমবে। এর মধ্যে কতটা ক্ষতি কেন্দ্রের আর কোন রাজ্যের কতটা, সেই হিসাব জিএসটি সচিবালয়ের আমলারা অঙ্ক কষে বের করছেন। তবে মন্ত্রক সূত্রের যুক্তি, এই রাজস্ব লোকসানের পরিমাণ দীর্ঘস্থায়ী হবে না। কারণ জিএসটি কমায় পণ্যের দাম কমবে। তার জেরে কেনাকাটা বাড়বে। তার হাত ধরে বাড়তে থাকবে জিএসটি খাতে আয়ও।
অর্থ মন্ত্রকের এক শীর্ষকর্তা বলেন, ‘‘বাজারে কেনাবেচা বাড়ানো দরকার। সাধারণত দুর্গাপুজো, দশেরা, দীপাবলির এই উৎসবের মরসুমে চাহিদা বেড়ে যায়। কিন্তু জিএসটি কমলে পণ্যের দাম কমবে, এই আশায় অনেকেই দামি জিনিস কেনার জন্য অপেক্ষা করছেন। তাই তাড়াতাড়ি রাজ্যগুলির উদ্বেগ দূর করে জিএসটি কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলতে হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী লাল কেল্লা থেকে বলেছিলেন, দীপাবলিতে জিএসটি কমার উপহার আসবে। সম্ভব হলে সিদ্ধান্ত নিতে হবে দশেরার আগেই।’’
আগামী ৩-৪ সেপ্টেম্বর জিএসটি পরিষদের বৈঠক। গত সপ্তাহে করের হার কমানোর প্রস্তাবে রাজ্যের মন্ত্রিগোষ্ঠীর বৈঠকে সায় মিলেছে। কিন্তু এর সঙ্গেই মাথা তুলেছে রাজ্যের রাজস্ব আয় কমা নিয়ে উদ্বেগ। তারা সেই দুশ্চিন্তা তুলে ধরে সমাধানের জন্য কেন্দ্রের জবাব চেয়েছে। অর্থ মন্ত্রক সূত্রের ব্যাখ্যা, বিহার, গুজরাত, হরিয়ানা, মহারাষ্ট্র, রাজস্থান-এই পাঁচটি বিজেপি বা এনডিএ শাসিত রাজ্যের নিজস্ব আয়ের বড় অংশ জিএসটি থেকে আসে। পঞ্জাব, পশ্চিমবঙ্গের মতো ঋণের বোঝা নিয়ে চলা রাজ্যগুলিও জিএসটি থেকে আয় কমলে সমস্যায় পড়বে। এখন রাজ্য জিএসটি থেকে পশ্চিমবঙ্গের রাজস্ব আয়ের হার ৪৪.২%। এতদিন রাজ্যগুলির রাজস্ব আয়ের ক্ষতি মেটানোর জন্য সেস ছিল। তার মেয়াদও ২০২৬-এর ৩১ মার্চ শেষ হয়ে যাবে। কেন্দ্র জিএসটি-তে ১২% এবং ২৮% হার তুলে দিয়ে মূলত ৫% ও ১৮% হার রাখতে চাইছে।
মন্ত্রকের এক কর্তার যুক্তি, এসবিআই রিসার্চের রিপোর্ট অনুযায়ী জিএসটি-র হার কমিয়ে করের বোঝা কমানোর ফলে বছরে প্রায় ৮৫ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব লোকসান হবে। কিন্তু কর ছাঁটাইয়ের পদক্ষেপে বছরে প্রায় ২ লক্ষ কোটি টাকার কেনাকাটাও বাড়বে। ফলে প্রথমে আয় কমলেও পরে জিএসটি থেকে রোজগার আসলে বাড়তে শুরু করবে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)