E-Paper

‘ভারত আমাদের পণ্যে শুল্ক শূন্যে নামাতে চাইছে’, শুল্ক-যুদ্ধে নয়া দাবি ট্রাম্পের

রবিবার এক সাক্ষাৎকারে নাভারোর বলেছেন, ‘‘রাশিয়ার তেলে ব্রাহ্মণেরা লাভবান হচ্ছেন। ভারতবাসীকে তা বুঝতে হবে।”

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৯:০৫
ডোনাল্ড ট্রাম্প।

ডোনাল্ড ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র।

অন্তত ২৫ বার ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষ থামানোর দাবি। বহু বার দাবি বাণিজ্য বোঝাপড়া প্রায় চূড়ান্ত হয়ে যাওয়া নিয়েও। এ বার সেই তালিকায় নতুন সংযোজন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। সোমবার নিজের সমাজমাধ্যম ট্রুথ সোশালে তাঁর বক্তব্য, ভারত আমেরিকার প্রায় সমস্ত পণ্যের আমদানি শুল্ক শূন্যে নামাতে চাইছে। কিন্তু অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে।

এ দিন ট্রাম্প লিখেছেন, ‘‘খুব কম মানুষই বুঝতে পারেন, আমরা ভারতের সঙ্গে খুব কম ব্যবসা করি। কিন্তু ভারত আমাদের সঙ্গে প্রচুর ব্যবসা করে। কারণ, তারা আমাদের থেকে চড়া আমদানি শুল্ক নেয়।... পুরোটাই একমুখী বিপর্যয়। এমনকি, তারা বেশিরভাগ তেল এবং প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রাশিয়া থেকে কেনে। আমাদের থেকে কেনে খুব কম। এখন তারা বলছে, তারা আমাদের পণ্যের শুল্ক শূন্যে নামিয়ে আনতে তৈরি। কিন্তু এখন অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। এটা তাদের অনেক আগেই করা উচিত ছিল।’’ সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, বাতাসে বিভিন্ন বার্তা ভাসিয়ে দিয়ে জল মাপা ও কূটনৈতিক চাপ বাড়ানোয় ট্রাম্পের জুড়ি নেই। এ বারের কৌশলও তার থেকে আলাদা কিছু নয়। ভারত, রাশিয়া এবং চিনের রাষ্ট্রপ্রধানদের ঘনিষ্ঠতা বাড়ানোর চেষ্টাই ট্রাম্পের এই দফার মন্তব্যের প্রেক্ষাপট। তার আগে ভারতের উদ্দেশে সুর চড়িয়েছেন হোয়াইট হাউসের বাণিজ্য পরামর্শদাতা পিটার নাভারো। পাল্টা আক্রমণ শানিয়েছেন তেলমন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরীও। ফলে সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, এই বাক্যযুদ্ধের মধ্যে সব মিলিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বাণিজ্য আলোচনার রাস্তা আরও অমসৃণ হল।

রবিবার এক সাক্ষাৎকারে নাভারোর বলেছেন, ‘‘রাশিয়ার তেলে ব্রাহ্মণেরা লাভবান হচ্ছেন। ভারতবাসীকে তা বুঝতে হবে।... মস্কো বিশ্ব বাজারে তাদের তেল বিক্রির মাধ্যম হিসেবে ভারতকে ব্যবহার করে চলেছে।’’ নাভারোর এই দফার বক্তব্য রূপকে ভরপুর। তিনি কাদের ‘ব্রাহ্মণ’ বলতে চেয়েছেন তা স্পষ্ট নয়। অনেকে মনে করছেন, তাঁর নিশানা ভারতীয় তেল সংস্থাগুলির দিকে। আবার এই কূটনীতিবিদ বলেছেন, ‘‘তেল বিক্রির জন্য ক্রেমলিন ভারতকে কাপড় কাচার যন্ত্রের মতো ব্যবহার করছে।’’ প্রত্যেকটি অভিযোগ অবশ্য স্পষ্ট ভাষায় খারিজ করেছেন পুরী।

সোমবার এক নিবন্ধে নাভারোর নাম না করে পুরীর পাল্টা বক্তব্য, ‘‘কেউ অভিযোগ করছেন, আমরা রাশিয়ার তেলকে ‘শুদ্ধ’ করছি। এর চেয়ে বড় অসত্য আর হতে পারে না।... ভারত দীর্ঘদিন ধরেই বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম পেট্রোপণ্য রফতানিকারী। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পরে সেই পরিমাণ ও মুনাফা খুব বেড়েছে এমন নয়।’’ পুরীর আরও যুক্তি, ভারত তেল আমদানির ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বিধি ভাঙেনি। ইরান এবং ভেনেজুয়েলার তেলে যেমন নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, রাশিয়ার তেলে তা নেই। জি৭ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন তার দামের ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দিয়েছে মাত্র। মুনাফার অভিযোগ উড়িয়ে তাঁর পাল্টা বক্তব্য, ইউক্রেনের যুদ্ধ শুরুর পরে দেশবাসীকে দামের আঁচ থেকে রক্ষা করতে এক সময়ে লিটারে ১০ টাকা ক্ষতিতেও ডিজ়েল বেচেছে তেল সংস্থাগুলি। রুশ তেল কেনাতেই বিশ্ব বাজারে তেলের দামে স্থিতি ফেরে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Donald Trump america US Tariff India US Tariff War

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy