মাথাব্যথা বাড়াচ্ছে ডিজিটাল প্রতারণা

নোট বাতিলের পরে জোর দেওয়া হয়েছিল ডিজিটাল লেনদেনে। জনপ্রিয়তা দ্রুত গতিতে বেড়েছে কোভিডের সময় থেকে। তবে তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ডিজিটাল প্রতারণাও। ফলে প্রযুক্তি যেমন সাধারণ মানুষকে ঘরে বসে নিমেষের মধ্যে টাকা দেওয়া-নেওয়ার সুবিধা করে দিয়েছে, তেমনই বাড়িয়েছে যে কোনও মুহূর্তে তা খোয়ানোর উদ্বেগ। সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় প্রকাশ, দেশে রিয়েল টাইম লেনদেন, অর্থাৎ লেনদেনের ক্ষেত্রে নেট মারফত সঙ্গে সঙ্গে টাকা হস্তান্তরের ব্যবস্থায় প্রতারণার শিকার হয়েছেন এক তৃতীয়াংশ লেনদেনকারী। বহু ক্ষেত্রে তাঁদের পরিবার-পরিজনও একই ঘটনার মুখে পড়েছেন।

রিয়েল টাইম লেনদেনে মোবাইল বা কম্পিউটারের মাধ্যমে মধ্যস্থতাকারী সংস্থার মাধ্যমে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে প্রেরকের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা প্রাপকের অ্যাকাউন্টে যায়। এ জন্য কয়েক ঘণ্টা বা কয়েক দিন কিংবা চেক ক্লিয়ার হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হয় না। ২৪ ঘণ্টা কাজ করে এই ব্যবস্থা। এমনকি, ছুটির দিনেও হস্তান্তর সম্ভব।

এই লেনদেনের ক্ষেত্রেই ১০০০ জন ভারতীয়-সহ ১৪টি দেশের ১১,০০০ ক্রেতা-গ্রাহককে নিয়ে সমীক্ষাটি চালিয়েছিল সফটওয়্যার বিশ্লেষক সংস্থা ফিকো। রিপোর্ট বলছে, ভারতে ৩৪% সঙ্গে সঙ্গে টাকা দিলেও পণ্য বা পরিষেবা পাননি। কিছু ক্ষেত্রে লগ্নির টাকা মার গিয়েছে। ৬০% মোবাইলে প্রতারণামূলক বার্তা (এসএমএস বা অন্য মাধ্যমে) পেয়েছেন। ৫৪ শতাংশের পরিবার বা বন্ধুবান্ধব প্রতারণার মুখে পড়েছেন। তবে গত বছর সামগ্রিক ভাবে দেশে ডিজিটাল প্রতারণায় হওয়া লোকসান তুলনায় কিছুটা কমেছে। যদিও ৮ লক্ষ টাকার বেশি চোট হয়েছে, এমন ঘটনা মোট জালিয়াতির ২% থেকে বেড়ে হয়েছে ৪%। আর ৫৬% ৫০,০০০ টাকা বা তার কম লোকসান করেছেন।

এশিয়ায় ফিকো-র ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডাট্টু কমপেল্লার মতে, বেশির ভাগ মানুষ কম অঙ্কের টাকা হারানোর কথা বলেছেন। কিন্তু সেটুকুও বহু পরিবারের পক্ষে উদ্বেগের। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, চড়া মূল্যবৃদ্ধির জেরে অনেকেরই আয় কমেছে। চড়েছে খরচ। ফলে সরকার ডিজিটাল লেনদেনে জোর দিলেও সাধারণ মানুষের মধ্যে এ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।