প্রভিডেন্ট ফান্ডের তহবিল থেকে অগ্রিম নেওয়ার জন্য এ বার আর কোনও নথি জমা দিতে হবে না। শুধু আবেদন করলেই হবে। কী কারণে অগ্রিম টাকা নেওয়ার জন্য আবেদন করা হচ্ছে, সে ব্যাপারে আবেদনকারীর নিজস্ব ঘোষণাই যথেষ্ট। তার ভিত্তিতেই আবেদন মঞ্জুর করা হবে। এপ্রিল মাস থেকেই নতুন এই নিয়ম চালু হয়েছে।
সরল করা হয়েছে আবেদন করার পদ্ধতিও। আগে চাকরি ছাড়ার পরে টাকা তোলা অথবা বিভিন্ন ধরনের আগাম নেওয়ার জন্য আবেদন করার জন্য পৃথক পৃথক ফর্ম নির্দিষ্ট করা ছিল। এখন টাকা তোলা হোক অথবা ওই সব অগ্রিম নেওয়া, সমস্ত ক্ষেত্রের জন্য একটি মাত্র ফর্মে আবেদন করতে হবে। নতুন এই ফর্মের নাম দেওয়া হয়েছে ‘কম্পোজিট ফর্ম’।
পিএফ প্রকল্পকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলার উদ্দেশ্যেই টাকা তোলার নিয়ম শিথিল করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন আঞ্চলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড কমিশনার রাজীব ভট্টাচার্য।
আগে পিএফ থেকে বিভিন্ন প্রয়োজনে আগাম নেওয়ার জন্য নানা রকম নথি জমা দিতে হত। তা ঠিক না-থাকলে বাতিল হত আবেদন। যেমন, জমি, বাড়ি, ফ্ল্যাট ইত্যাদি কেনা বা তৈরির জন্য আবেদনপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হত বাড়ির দলিল, বায়না-নামার প্রতিলিপি, নির্মাণ খরচের খতিয়ান, সংশ্লিষ্ট জমি, ফ্ল্যাট বা বাড়ি বন্ধক আছে কি না, সে ব্যাপারে ‘সার্চ সার্টিফিকেট’ ইত্যাদি। আবার যেমন নিজের, মেয়ের বা বোনের বিয়ের জন্য অগ্রিম নিতে হলে নিমন্ত্রণপত্রের কপি জমা দিতে হত। চিকিৎসার জন্য ঋণ নিতে হলে দিতে হত ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন, হাতপাতালে ভর্তি হওয়া, চিকিৎসার খরচের নথি ইত্যাদি। নতুন ব্যবস্থায় কিছুই জমা দিতে হবে না। তবে অগ্রিম বাবদ কোন ক্ষেত্রে কত টাকা পাওয়া যাবে, সে ব্যপারে পুরনো নিয়মই চালু থাকছে।
আরও পড়ুন:এপ্রিলে বিক্রি ১৫% বাড়ল যাত্রী গাড়ির
এ বার প্রশ্ন উঠছে, কেউ যদি মিথ্যা ঘোষণা করেন, তা হলে কী হবে? যেমন, কেউ হয়ত বাড়ি কিনছেন না, কিন্তু সে রকম ঘোষণা করে অগ্রিমের জন্য আবেদন করলেন। সে ক্ষেত্রে কী হবে? রাজীববাবু বলেন, ‘‘আমরা কোনও রকম যাচাইয়ের মধ্যেই যাব না। আবেদনকারীর নিজস্ব ঘোষণাকেই সত্য বলে ধরে নিয়ে আগাম দেওয়া হবে।’’ উল্লেখ্য, পিএফ থেকে যে-টাকা তোলা হয়, তা ফেরত দিতে হয় না। এর জন্যই একে ঋণ বলা হয় না। বলা হয় অগ্রিম।
তবে পেনশন পাওয়ার জন্য আগের মতোই ১০ডি ফর্মে আবেদন করতে হবে। কিন্তু পিএফের যে-সব সদস্য ১০ বছরের কম সময় চাকরি করে তা ছেড়ে দেবেন, তাঁদেরও ওই কম্পোজিট ফর্মেই আবেদন করতে হবে। ওই ক্ষেত্রে নিয়ম হল, সংশ্লিষ্ট সদস্য পেনশন পাবেন না। থোক একটা টাকা পাবেন।