Advertisement
E-Paper

চ্যালেঞ্জ তেল ও টাকা, উঁচু বাজারে লগ্নি হোক ঝুঁকি মেপেই

আশঙ্কার মেঘ জমাট লগ্নিকারীদের মনে। এক দিকে টানা পড়ছে ডলারের সাপেক্ষে টাকার দাম। অন্য দিকে লাফিয়ে মাথা তুলছে তেলের দর। ফলে আশঙ্কা বাড়ছে মূল্যবৃদ্ধি মাত্রাছাড়া হওয়ার।

অমিতাভ গুহ সরকার

শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৬:৫৯

টাকার নাগাড়ে পতন, পেট্রল ও ডিজেলের লাগামছাড়া দাম আর মাথা তোলা বাণিজ্য ঘাটতি— এত সব প্রতিকূল ঘটনা সত্ত্বেও গত সপ্তাহে নতুন নজির গড়েছে সেনসেক্স ও নিফ্‌টি। দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ৩৮,৬৪৫ ও ১১,৬৮০ পয়েন্টে। তবু আশঙ্কার মেঘ জমাট লগ্নিকারীদের মনে। এক দিকে টানা পড়ছে ডলারের সাপেক্ষে টাকার দাম। অন্য দিকে লাফিয়ে মাথা তুলছে তেলের দর। ফলে আশঙ্কা বাড়ছে মূল্যবৃদ্ধি মাত্রাছাড়া হওয়ার। প্রশ্ন উঠছে বাণিজ্য ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে তো? তাই এখন খুশি হওয়ার চেয়ে বেশি জরুরি দুশ্চিন্তার দিকগুলিতে কড়া নজর রাখা। যাতে পরিস্থিতি অনুযায়ী ও আশঙ্কা মেপে লগ্নির সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়।

চলতি সপ্তাহে বাজারে জ্বালানি জোগাতে পারে এই অর্থবর্ষের প্রথম তিন মাসের বৃদ্ধি ৮.২% ছোঁওয়া। এই হার প্রায় সব পূর্বাভাসকে ছাপিয়ে গিয়েছে। টপকেছে চিনকেও। এতে মদত জুগিয়েছে কৃষি, কারখানা এবং নির্মাণ শিল্পে উৎপাদন বৃদ্ধি। প্রকৃত বৃদ্ধি কতটা হয়েছে, তা নিয়ে অবশ্য সন্দেহ প্রকাশ করেছে সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ। যুক্তি দিয়েছে, নোটবন্দির দরুন গত বছর এই সময় বৃদ্ধির ভিত (৫.৬%) এতটাই আলগা ছিল যে, তুলনায় এ বারের হারকে বেশি ঝকঝকে দেখাচ্ছে। তবে কেন্দ্রের বক্তব্য, অগ্রগতির এই হার উন্নয়নশীল দেশগুলির মধ্যে প্রথম সারিতে এনেছে ভারতকে। যা এখানে পুঁজি ঢালার ক্ষেত্রে বিদেশি লগ্নিকারীদের উৎসাহিত করবে।

তবে যে কারণেই সূচক এত উঠে থাকুক, নিশ্চিত থাকা যাচ্ছে না কিছুতেই। কারণ—

• তেল ও ডলারের দামে নজির।

• বাড়ছে বাণিজ্য, চলতি খাতে ঘাটতি।
• চেপে বসছে রাজকোষ ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে না থাকার ভয়।

• আশঙ্কা, আগামী দিনে মূল্যবৃদ্ধিকে বাগে রাখা কঠিন হতে পারে।

• অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলছে কেরলে বন্যা। ইতিমধ্যেই অগস্টে কিছু গাড়ি সংস্থার বিক্রি কমেছে।

• বর্ষাতেও ঘাটতি রয়েছে প্রায় ৭%। যা কৃষির পক্ষে চিন্তার ব্যাপার।

এখন অনুষ্ঠিত হচ্ছে বহু সংস্থার বার্ষিক সাধারণ সভা। ঘোষিত হচ্ছে ডিভিডেন্ড। তা চলবে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। ডিভিডেন্ডের সিংহভাগ এখন সরাসরি পৌঁছে যায় সদস্যদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। মরসুম শেষে ভাল করে দেখে নেওয়া প্রয়োজন অ্যাকাউন্টে সব ডিভিডেন্ড ঢুকল কি না। সামগ্রিক ভাবে অনেক সংস্থারই আর্থিক ফল ভাল হওয়ায়, এ বার বণ্টিত ডিভিডেন্ডের পরিমাণ আগের বছরের তুলনায় বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।

সুদ ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় বাজারে আসছে কয়েকটি আকর্ষণীয় বন্ড ইস্যু। ৩, ৫ এবং ১০ বছর মেয়াদি এই সব ইস্যুতে সুদ দেওয়া হতে পারে ৯% পর্যন্ত। বর্তমান বাজার অনুযায়ী বেশ আকর্ষণীয়। শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সেবি-ও চাইছে, সংস্থাগুলি তাদের প্রয়োজনীয় তহবিল বাজার থেকে সংগ্রহ করুক বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে। স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে সারা বছর ‘অন-ট্যাপ’ পদ্ধতিতে বন্ড ইস্যুর অনুমতি দেওয়ার কথা খতিয়ে দেখছে সেবি। প্রস্তাবটি বাস্তবায়িত হলে প্রসপেক্টাস দাখিল করে বছরভর সংস্থা স্টক এক্সচেঞ্জ মারফত বন্ডের সাহায্যে অর্থ জোগাড় করতে পারবে।

২০১৮-১৯ আর্থিক বছরে বিলগ্নিকরণের পথে ৮০,০০০ কোটি টাকা তুলতে চায় সরকার। এখন পর্যন্ত পেরেছে ৯,২০০ কোটি। লক্ষ্য, ডিসেম্বরের মধ্যে ৬০,০০০ কোটি সংগ্রহ। তা পূরণ করতে এ বার শেয়ার বিক্রির তালিকায় আছে এনটিপিসি, কোল ইন্ডিয়া, এনবিসিসি হাডকো, ভারত ইলেকট্রনিক্স ইত্যাদি সংস্থা। মাস দুয়েকের মধ্যে বাজারে ছাড়া হতে পারে নতুন একটি কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থাগুলির (সিপিএসই) ইটিএফ।

(মতামত ব্যক্তিগত)

Investment Rupee GDP Fuel Price
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy