E-Paper

দুপুরে পেশ, বিকেলে পাশ গেমিং বিল

কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন, অনলাইন গেমিংয়ে টাকা দিয়ে জুয়া খেলা অনেকের কাছেই নেশায় পরিণত হচ্ছে। বহু মানুষ সারা জীবনের সঞ্চয় খোয়াচ্ছেন। প্রতারণা হচ্ছে। কারণ অনলাইনে কার সঙ্গে কে জুয়া খেলছে, তা বোঝা যায় না।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০২৫ ০৮:৪৬
অনলাইন গেম শিল্প থেকে কেন্দ্রের বছরে ২০-২২ হাজার কোটি টাকা আয় হয়।

অনলাইন গেম শিল্প থেকে কেন্দ্রের বছরে ২০-২২ হাজার কোটি টাকা আয় হয়। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

অনলাইন গেমে টাকা দিয়ে বাজি ধরা বা জুয়া খেলা নিষিদ্ধ করার রাস্তাতেই হাঁটল মোদী সরকার। এ ক্ষেত্রে শিল্পমহলের চাপ সত্ত্বেও বুধবার দুপুরে লোকসভায় বিল পেশ করল তারা। তার পরে বিকেলেই লোকসভায় তা পাশ করিয়ে নেওয়া হল। বৃহস্পতিবার রাজ্যসভাতেও এই বিল পাশ করিয়ে আইন তৈরির পথে হাঁটবে বৈদ্যুতিন ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক।

আজ কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন, অনলাইন গেমিংয়ে টাকা দিয়ে জুয়া খেলা অনেকের কাছেই নেশায় পরিণত হচ্ছে। বহু মানুষ সারা জীবনের সঞ্চয় খোয়াচ্ছেন। প্রতারণা হচ্ছে। কারণ অনলাইনে কার সঙ্গে কে জুয়া খেলছে, তা বোঝা যায় না। সর্বস্ব খুইয়ে অনেকেই আত্মহত্যার রাস্তা বেছে নিচ্ছেন। শুধু কর্নাটকেই গত ৩১ মাসে ৩২টি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একে মানসিক রোগের তকমা দিচ্ছে। তাই কেন্দ্রীয় সরকার অনলাইন গেমে টাকা দিয়ে জুয়া খেলা নিষিদ্ধ করে একে শাস্তিযোগ্য অপরাধের তালিকায় যোগ করছে। অশ্বিনীর বক্তব্য, এ ক্ষেত্রে কেন্দ্র অনলাইন গেমকে দু’টি ভাগে ভাগ করছে। বিনোদন বা শিক্ষামূলক ই-স্পোর্টস ও দাবা, সুদোকুর মতো অনলাইন গেমের প্রচার ও প্রসারে সরকার সাহায্য করবে। কিন্তু যেখানে টাকা দিয়ে অনলাইন গেমে জুয়া খেলা হচ্ছে, তা নিষিদ্ধ করা হবে।

শিল্পমহল এর বিরোধিতা করে বলেছিল, অনলাইন গেম শিল্প থেকে কেন্দ্রের বছরে ২০-২২ হাজার কোটি টাকা আয় হয়। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা এই বিলে অনুমোদন দেওয়ার পরেই অনলাইন গেম সংস্থাগুলির তিনটি সংগঠন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি লিখে তাঁর হস্তক্ষেপ দাবি করেছিল। যুক্তি ছিল, ২ লক্ষ কোটি টাকার এই শিল্প থেকে বছরে ৩১,০০০ কোটি টাকার আয় তৈরি হয়। বছরে ২০,০০০ কোটি টাকার বেশি কর দেয় এই শিল্প। ভারতে অনলাইন গেমারদের সংখ্যা গত পাঁচ বছরে ৩৬ কোটি থেকে বেড়ে ৫০ কোটি হয়েছে। প্রায় ২৫,০০০ কোটি টাকার বিদেশি লগ্নি এসেছে। এই ক্ষেত্রে ২ লক্ষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর্মসংস্থান হয়। কিন্তু লোকসভায় বিল পাশের সময় অশ্বিনী বলেন, ‘‘মোদী সরকার এখানে শিল্পের স্বার্থের থেকে মধ্যবিত্ত মানুষের স্বার্থকে প্রাধান্য দিচ্ছে। সরকারের রাজস্ব ক্ষতির থেকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে সামাজিক স্বার্থকে।

‘অনলাইন গেমিং নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়ন বিল’ অনুযায়ী, কেউ টাকা দিয়ে অনলাইনে গেম খেলার ব্যবস্থা করলে বা এ নিয়ে আর্থিক লেনদেন করলে তিন বছর পর্যন্ত জেল এবং ১ কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানার ব্যবস্থা থাকছে। বহু নামজাদা ব্যক্তি টাকা দিয়ে অনলাইন গেমের বিজ্ঞাপনে যুক্ত। ভবিষ্যতে এর বিজ্ঞাপনে দু’বছর পর্যন্ত জেল ও ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হবে। প্রয়োজনে আদালতের পরোয়ানা ছাড়াই তল্লাশি, গ্রেফতারির ক্ষমতা দেওয়া হবে তদন্তকারী সংস্থাকে। জাতীয় স্তরে এ জন্য নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা তৈরি হবে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

New Bill Indian Parliament

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy