সোনার দাম বাড়ায় চিন্তিত বিশেষত ছোট গয়না বিক্রেতারা। ফাইল ছবি।
আন্তর্জাতিক মূলধনী বাজারে আমেরিকার সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্ক এবং সিগনেচার ব্যাঙ্কের দেউলিয়া হয়ে বন্ধ হওয়ার জের এখনও কাটেনি। ওই সমস্যাই লগ্নিকারীদের সোনার বাজারমুখো করেছে। লগ্নি বৃদ্ধির জেরে লাফিয়ে বাড়ছে তার দাম। তিন দিনে কলকাতায় প্রতি ১০ গ্রাম পাকা সোনা (২৪ ক্যারাট) চড়েছে ২৪৫০ টাকা। গত বৃহস্পতিবার সোনা ছিল ৫৫,৮৫০ টাকা। মঙ্গলবার হয় ৫৮,৩০০ (শনি, রবি বাজার বন্ধ ছিল)। ফলে নতুন করে দুশ্চিন্তা দানা বেঁধেছে গয়নার বাজারে। ব্যবসায়ীদের আশঙ্কা, দাম আরও বাড়তে পারে।
স্বর্ণশিল্প বাঁচাও কমিটির কার্যকরী সভাপতি সমর দে বলেন, “আমেরিকার ব্যাঙ্ক দু’টি দেউলিয়া হওয়ায় গোটা ব্যাঙ্কিং শিল্প দুশ্চিন্তায় পড়েছে। চড়া সুদে আর কারা বিপর্যস্ত হচ্ছে, সেই খোঁজ চলছে সর্বত্র। বিশ্ব বাজারে এই সঙ্কট না কাটা পর্যন্ত সোনার দাম বাড়তে পারে।’’ সোনা ব্যবসায়ী জেজে গোল্ডের ডিরেক্টর হর্ষদ আজমেরার দাবি, ‘‘শেয়ার বাজারে ধস নামলে সুরক্ষিত লগ্নি হিসেবে গণ্য সোনায় তহবিল ঢালেন লগ্নিকারীরা। এখন আবার সেই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সোনায় বিনিয়োগ বাড়ছে বলেই দ্রুত চড়তে শুরু করেছে দাম। আন্তর্জাতিক মূলধনী বাজারের হাল ফেরা প্রয়োজন।’’
চিন্তিত বিশেষত ছোট গয়না বিক্রেতারা। তেমনই এক ব্যবসায়ী এবং বঙ্গীয় স্বর্ণশিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক টগর পোদ্দার বলেন, “বহু দিন যাবৎ গয়নার বাজার খারাপ ছিল। গত মাসেই ৫৯,০০০ পেরিয়ে নতুন নজির গড়ে সোনা। চড়া মূল্যবৃদ্ধির জমানায় বার বার সোনার দামে এমন লাফ বিক্রি বৃদ্ধির পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। কত ছোট দোকান বছর তিনেকের মধ্যে বন্ধ হয়ে গিয়েছেএই কারণে।’’
জেম অ্যান্ড জুয়েলারি ডোমেস্টিক কাউন্সিলের চেয়ারম্যান আশিস পেথের মন্তব্য, “সোনার দাম কোন দিকে যায়, তা দেখে নিয়ে তার পর গয়নার বাজারে পা রাখার কথা ভাবছেন অনেক ক্রেতা।’’ গয়না বিক্রি কমলেই আর্থিক ভাবে চাপে পড়েন সেগুলির কারিগরেরা। কারণ, তাঁদের বরাত কমে। বৌবাজারের গয়নার কারিগর সুদর্শন ঘোষ জানান, “বরাতের অবস্থা খুবই খারাপ। সাধারণ মানুষের হাতে অত টাকা নেই যে এই চড়া বাজারেও তাঁরা গয়না কিনতে আসবেন।’’
এ দিকে, সোনার দাম এতটা বেড়ে যাওয়ায় তার চোরাচালান আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন টগরবাবু। তিনি বলেন, “১২% হারে আমদানি শুল্ক এবং ৩% হারে জিএসটি বসে। তার উপর দাম এত বেশি। চোরাপথে আনা সোনার দাম প্রতি কেজি ৮-৯ লক্ষ টাকা কম।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy