Advertisement
E-Paper

জিএসটি জমানার খুঁটিনাটি

রাজ্যসভায় পণ্য-পরিষেবা করের (জিএসটি) সংবিধান সংশোধনী বিল পাশ হওয়ায় এই আইন প্রণয়নের পথে সব থেকে কঠিন বাধা পেরোনো গেল। অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির দাবি, এ যাবৎ এটিই সব থেকে বড় আর্থিক সংস্কার। এখনও পেরোতে হবে বেশ কিছু ছোট- বড় বাধা। হাতে সময় আট মাসেরও কম।

অমিতাভ গুহ সরকার

শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৬ ০৩:২৩

রাজ্যসভায় পণ্য-পরিষেবা করের (জিএসটি) সংবিধান সংশোধনী বিল পাশ হওয়ায় এই আইন প্রণয়নের পথে সব থেকে কঠিন বাধা পেরোনো গেল। অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির দাবি, এ যাবৎ এটিই সব থেকে বড় আর্থিক সংস্কার। এখনও পেরোতে হবে বেশ কিছু ছোট- বড় বাধা। হাতে সময় আট মাসেরও কম। সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ থাকলেও অর্থমন্ত্রীর লক্ষ্য, আগামী ১ এপ্রিল থেকে জিএসটি চালু করে দেওয়া।

জিএসটি বিল নিয়ে যথেষ্ট সংশয় ছিল বাজারে। এই কারণে ভোটাভুটির দিন সেনসেক্স নামে ২৮৪ পয়েন্ট। এই আইন চালু হলে তার পরিণতি কোন দিকে যাবে তা বুঝতে না পেরে বহু লগ্নিকারীকে শেয়ার বিক্রি করে লাভ ঘরে তুলতে দেখা যায়। বিল পাশ হওয়ার পরে শুরু হয় জোর বিশ্লেষণ। তারপর একটিমাত্র পরোক্ষ কর চালু হলে বেশ কয়েকটি শিল্প উপকৃত হবে, বিভিন্ন মহল থেকে বাজার এই বার্তা পাওয়ায় শুক্রবার তেড়েফুঁড়ে ওঠে সেনসেক্স ও নিফ্টি। সপ্তাহের শেষ দিন মুম্বই সূচক ৩৬৪ পয়েন্ট উঠে পৌঁছয় ২৮,০৭৮ অঙ্কে। যে সব শিল্প উপকৃত হবে বলে মনে করা হচ্ছে, সেগুলির অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন সংস্থার শেয়ারের দামও বাড়ে তীব্র গতিতে।

জিএসটি নিয়ে বিশ্লেষণ চলতে থাকবে এবং তার প্রভাব আরও কিছু দিন থাকবে শেয়ার বাজারের উপর। জিএসটি-র হার কী হবে সেটা সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। তা ১৮ থেকে ২০ শতাংশের মধ্যে থাকলে খুব একটা মূল্যবৃদ্ধি হবে না বলে মনে করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে শিল্পকে এখন গড়ে ২৩-২৪% পরোক্ষ কর দিতে হয়। পণ্য পরিষেবা কর যদি এর থেকে কম হয় এবং শিল্প যদি করের সুফল ক্রেতাদের হাতে তুলে দেয়, তবে সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে। দাম কমায় বাড়বে পণ্যের চাহিদা।

অন্য দিকে, পরিষেবা কর বাবদ গুনতে হতে পারে বর্তমানের তুলনায় অনেকটাই বেশি টাকা। ব্যাপারটি অবশ্যই সুখকর হবে না। অর্থনীতি, সরকার, শিল্প এবং ক্রেতা সকলের উপরেই ভাল রকম প্রভাব থাকবে জিএসটির। পুরোদস্তুর চালু হলে অবশ্য এই নতুন পরোক্ষ কর ব্যবস্থা সবার জন্যই ভাল হবে বলে মনে করা হচ্ছে। কার উপর কী রকম প্রভাব হতে পারে, তা দেখা হল সঙ্গের সারণিতে।

জিএসটি-র প্রভাব শুক্রবার দেখা গিয়েছে বিভিন্ন শেয়ারে। মাঝারি এবং ছোট মাপের নামী বেশ কিছু সংস্থা নতুন কর ব্যবস্থায় উপকৃত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। অসংগঠিত শিল্পে এই কর লাগু হলে তাদের উৎপাদিত পণ্যের দাম বাড়বে। অন্য দিকে করের হার ১৮-২০ শতাংশের মধ্যে থাকলে নামী মাঝারি সংস্থার উৎপাদিত পণ্যের দাম কমতে পারে। ফলে প্রতিযোগিতায় এরা লাভবান হবে। বেড়ে উঠতে পারে এদের পণ্যের চাহিদা। যে সব সংস্থা উপকৃত হতে পারে, সেই তালিকায় সম্ভবত থাকবে এক্সাইড, বাটা, ক্রম্পটন গ্রিভস, গ্রিন প্লাই, সুপ্রিম ইন্ডাস্ট্রিজ, সিম্ফনি ইত্যাদির মতো সংগঠিত ক্ষেত্রে বেশ কিছু মাঝারি মাপের সংস্থা। বড় শিল্পের মধ্যে উপকৃত হতে পারে গাড়ি, সিমেন্ট, রং ইত্যাদি শিল্প। এই কথা মাথায় রেখে শুক্রবার ভাল রকম দাম বেড়েছে এই সব শিল্পের আওতাভুক্ত অনেক শেয়ারের। উপকৃত সংস্থাগুলির মধ্যে থাকতে পারে হিরো মোটোকর্প, বাজাজ অটো, মারুতি সুজুকি, এম অ্যান্ড এম, এসিসি, আল্ট্রাটেক, অম্বুজা সিমেন্ট, গ্রাসিম, এশিয়ান পেন্টস, বার্জার পেন্টস ইত্যাদি।

পণ্য-পরিষেবা কর থেকে বড় ফায়দা তুলবে এই আশায় শুক্রবার হিরো মোটোকর্পের শেয়ারের দাম ১৬৪ টাকা বা ৫% বেড়ে পৌঁছয় ৩,৪৩৪ টাকায়। তবে ব্যাঙ্ক, তথ্যপ্রযুক্তি ও অন্যান্য কিছু বড় মাপের সংস্থার (যেমন ওএনজিসি, এনটিপিসি, গেইল ইত্যাদি) উপর জিএসটির প্রভাব অপেক্ষাকৃত কম হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

অতএব জিএসটি, মূল্যবৃদ্ধি ৪ শতাংশে বাঁধার লক্ষ্য ও ভাল বর্ষা ইত্যাদি কারণে বাজার আপাতত চাঙ্গাই থাকবে বলে মনে করছে সকলেই।

GST Bill Rules and regulation
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy