ভাসমান হারে গৃহঋণে সুখবর। সুদ কমাতে নতুন নিয়মের বিজ্ঞপ্তি জারি করল রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (আরবিআই)। ফলে তিন বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই স্প্রেড কমাতে পারবে যাবতীয় সরকারি এবং বেসরকারি ব্যাঙ্ক। পাশাপাশি, ক্রেডিট স্কোরের নতুন ব্যাখ্যা দিয়েছে দেশের কেন্দ্রীয় আর্থিক প্রতিষ্ঠান। এতে অনেকটাই স্বস্তি পাবেন ঋণগ্রহণকারীরা, বলছেন আর্থিক বিশ্লেষকেরা।
চলতি বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর ‘সুদ সংশোধনী’ শীর্ষক একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। সেখানেই প্রকাশিত হয় ভাসমান হারে গৃহঋণের নতুন নিয়মাবলি। গত ১ অক্টোবর থেকে সারা দেশে তা কার্যকর করেছে যাবতীয় সরকারি এবং বেসরকারি ব্যাঙ্ক। এর মধ্যে প্রথমেই রয়েছে স্প্রেড সংশোধনের নিয়ম।
আগে গৃহঋণের ক্ষেত্রে তিন বছরে এক বার মাত্র গ্রাহকদের স্প্রেড সংশোধন করতে পারত সরকারি-বেসরকারি ব্যাঙ্ক। কিন্তু নতুন নিয়মে সেখানে শিথিলতা এনেছে আরবিআই। ফলে ঋণগ্রহণকারীর ক্রেডিট স্কোর উন্নত হলে তিন বছরের আগেই স্প্রেড সংশোধন করা যাবে। সে ক্ষেত্রে কমতে পারে ঋণের কিস্তি। তবে এই ব্যবস্থা স্বয়ংক্রিয় নয়। এর জন্য গ্রাহককে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।
উল্লেখ্য, গৃহঋণে ভাসমান সুদের হারে দু’টি অংশ থাকে। একটি হল বহিরাগত বেঞ্চমার্ক রেট এবং অপরটি ব্যাঙ্ক স্প্রেড। প্রথমটি আরবিআইয়ের রেপো রেটের উপর নির্ভরশীল। অর্থাৎ রেপো রেট বাড়লে ঊর্ধ্বমুখী হয় বহিরাগত বেঞ্চমার্ক রেটের সূচক। আবার কমলে হ্রাস পায় এর অঙ্ক। অন্য দিকে ব্যাঙ্কের মুনাফার পরিমাণ, পরিচালন ব্যয়, ঋণগ্রহণকারীর ক্রেডিট স্কোর এবং তাঁর প্রোফাইলের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয় ব্যাঙ্ক স্প্রেড।
নিয়ম অনুযায়ী, গৃহঋণের ক্ষেত্রে ক্রেডিট স্কোর উন্নত হলে গ্রাহক সুদের হার কমানোর জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের কাছে আবেদন করতে পারেন। আগে প্রতি তিন বছরে এক বার সেটা করতে পারতেন তাঁরা। কিন্তু নতুন নিয়মে তার আগেই আর্জি জানাতে পারবেন গ্রাহক। ওই আবেদনের উপর ভিত্তি করে সংশ্লিষ্ট ঋণ পুনর্মূল্যায়ন করবে ব্যাঙ্ক। এর পর তাৎক্ষণিক ভাবে সুদ কমলে মাসিক কিস্তিতে কম টাকা জমা করবেন ওই ব্যক্তিকে।
গৃহঋণ সাধারণত ২০ থেকে ২৫ বছরের মেয়াদে দিয়ে থাকে সরকারি ও বেসরকারি ব্যাঙ্ক। ঋণের অঙ্ক ২৫ লক্ষ থেকে ৭৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। সেখানে ব্যাঙ্ক স্প্রেডের হিসাবে সুদের অঙ্ক মাত্র ০.২৫ শতাংশ হ্রাস পেলেও অনেক টাকা সঞ্চয় করতে পারবেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি।