Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Economy

আয় না বাড়লে, পারিবারিক ঋণের বোঝায় পঙ্গু হবে অর্থনীতি, দাবি বিশেষজ্ঞদের

রানারের পিঠে চাপানো থাকত টাকার বোঝা। যতই অর্থাভাব হোক, তা সে কিছুতেই ছুঁতে পারত না, ইচ্ছে থাকলেও! আর এখনআমরা ইচ্ছে করেই পিঠের সেই বোঝাটাকে বাড়িয়ে চলেছি। টাকার বোঝাই। কিন্তু তা ছোঁয়ার নয়। ঋণের, যা শুধতে হবে কড়ায় গণ্ডায়। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তথ্য জানাচ্ছে, ২০১৭-’১৮ অর্থবর্ষ‌ে যা আগের চেয়ে একলাফে ৮০ শতাংশ বেড়েছে। হয়েছে সাড়ে ৬ লক্ষ কোটি টাকারও (৬.৭ লক্ষ কোটি টাকা) বেশি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৯ ১৭:০০
Share: Save:

নতুন নতুন চাকরির সুযোগ তৈরি না হলে, আয় না বাড়লে ‘রানার’-এর মতো পিঠে পাহাড়ের বোঝা নিয়েই ছুটতে হবে আমাদের। ব্যাঙ্কের কাছ থেকে নেওয়া ঋণের বোঝা। যার নাম– হাউজহোল্ড ডেট বা পারিবারিক ঋণ।

রানারের পিঠে চাপানো থাকত টাকার বোঝা। যতই অর্থাভাব হোক, তা সে কিছুতেই ছুঁতে পারত না, ইচ্ছে থাকলেও! আর এখন আমরা ইচ্ছে করেই পিঠের সেই বোঝাটাকে বাড়িয়ে চলেছি। টাকার বোঝাই। কিন্তু তা ছোঁয়ার নয়। ঋণের, যা শুধতে হবে কড়ায় গণ্ডায়। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তথ্য জানাচ্ছে, ২০১৭-’১৮ অর্থবর্ষ‌ে যা আগের চেয়ে একলাফে ৮০ শতাংশ বেড়েছে। হয়েছে সাড়ে ৬ লক্ষ কোটি টাকারও (৬.৭ লক্ষ কোটি টাকা) বেশি।

জমি কিনতে, বাড়ি-গাড়ি কিনতে ব্যাঙ্কের দ্বারস্থ হতে তো হচ্ছেই, কিস্তিতে এলসিডি, হিরে, মণি, মুক্তো কিনতেও ধার করছি কোনও না কোনও সংস্থার কাছে। শপিং মলে ঢুকে যা খুশি তাই কিনছি, দামের পরোয়া করছি না, পরে মেটাতে হবে বলে। বরং একটার পর একটা ক্রেডিট কার্ড নিচ্ছি়।

অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এতে দেশের ক্রেতাবাজার (কনজাম্পশন মার্কেট) চাঙ্গা হচ্ছে বটে, কিন্তু দিনের শেষে তা আগামী দিনে দেশের অর্থনীতির এগিয়ে যাওয়ার পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়াতে চলেছে। ক্রেতাবাজার চাঙ্গা হয়ে উঠলে, যে ইঙ্গিত মেলে, তা হল- হরেক রকমের পণ্য কেনার জন্য ক্রেতাদের পকেটে টাকার জোগানে ঘাটতি নেই। ফলে, তা পরোক্ষে দেশের অর্থনীতির চাঙ্গা হয়ে ওঠারই প্রমাণ দেয়। কিন্তু তাতে ভুল আছে। কারণ, ক্রেডিট কার্ডের সুবাদে এখন পকেটে টাকা না থাকলেও জিনিস কেনা যায়। আর সঙ্গে সঙ্গে দাম মেটাতে হচ্ছে না বলে কেউ পকেটের দিকে তাকান না। তাতে ঋণের বোঝা আরও বেশি করে চাপছে আমাদের কাঁধে। ঋণের জন্য ব্যাঙ্কের দ্বারস্থ না হলেও চলে। রয়েছে হাজার হাজার আর্থিক প্রতিষ্ঠান, যাদের অনেকেই মোটামুটি ভাবে খাতায়-কলমে সরকার-নির্ধারিত হারেই ঋণ দেয়।

আরও পড়ুন- কৃষি ও কাজে জোর, সঙ্গে রাশ ঘাটতিতে​

আরও পড়ুন- অস্থিরতা বজায় থাকারই আশঙ্কা​

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সেই ঋণ শুধতে না পারলে আমরা তো তার বোঝায় চাপা পড়বই, তার পরিমাণ যে ভাবে উত্তরোত্তর বেড়ে চলেছে, তাতে বিপদে পড়বে ব্যাঙ্কগুলিও। শিল্পপতিরা ঋণ বা তার সুদ মেটাতে না পারার ফলে যে বিপদের মুখে দাঁড়িয়ে এখন স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া-সহ বেশ কয়েকটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক। আয় না বেড়ে, পরিবারের সদস্যদের জন্য নতুন নতুন চাকরির সুযোগ তৈরি না হলে সেই ঋণের বোঝা এতটাই ভারী হয়ে যাবে যে, পণ্য কেনায় আর উৎসাহ পাবেন না ক্রেতারা। তখন ক্রেতাবাজারে মন্দা আসবে। যার ইঙ্গিত মিলতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই। ফলে, ঝিমিয়ে পড়বে অর্থনীতি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE