E-Paper

হরমুজে আতঙ্ক, বিকল্পের খোঁজে বৈঠকে কেন্দ্রীয় বাণিজ্যসচিব

সরকারি সূত্রের খবর, বাণিজ্যসচিব পরিস্থিতি কোন দিকে এগোচ্ছে, তার দিকে নজর রাখা এবং আমদানি-রফতানিতে তার প্রভাব পর্যালোচনার দিকে গুরুত্ব দিয়েছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০২৫ ০৭:১৮
ভারতের আমদানি করা অশোধিত তেলের তিন ভাগের দু’ভাগ আসে ইরানের সীমান্তবর্তী হরমুজ প্রণালী হয়ে।

ভারতের আমদানি করা অশোধিত তেলের তিন ভাগের দু’ভাগ আসে ইরানের সীমান্তবর্তী হরমুজ প্রণালী হয়ে। —প্রতীকী চিত্র।

ইরান-ইজ়রায়েল যুদ্ধের ধাক্কায় হরমুজ প্রণালী দিয়ে জাহাজ চলাচল বন্ধের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ফলে ভারতে তেল ও গ্যাস আমদানি এবং পণ্য রফতানিতে ধাক্কা লাগতে পারে। এই পরিস্থিতির মোকাবিলায় আজ কেন্দ্রীয় বাণিজ্যসচিব সুনীল বার্থওয়াল জাহাজ সংস্থা ও রফতানিকারীদের সমস্ত বিকল্পের সন্ধান চালিয়ে যাওয়ার কথা বললেন। সরকারি সূত্রের খবর, বাণিজ্যসচিব পরিস্থিতি কোন দিকে এগোচ্ছে, তার দিকে নজর রাখা এবং আমদানি-রফতানিতে তার প্রভাব পর্যালোচনার দিকে গুরুত্ব দিয়েছেন।

ইরান থেকে সরাসরি তেল আমদানি না করলেও, ভারতের আমদানি করা অশোধিত তেলের তিন ভাগের দু’ভাগ আসে ইরানের সীমান্তবর্তী হরমুজ প্রণালী হয়ে। কাতারের মতো দেশ থেকে আমদানি করা প্রাকৃতিক গ্যাস বা এলএনজি-র অর্ধেক আসে সেই পথে। ইজ়রায়েলের হামলার পরে ইরান সেই সমুদ্রপথ বন্ধের হুমকি দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতেই বাণিজ্যসচিবের ডাকা বৈঠকে আজ জাহাজ সংস্থা, রফতানিকারী এবং পণ্য পরিবহণ সংস্থার কর্তারা জানিয়েছেন, এখনও হরমুজ প্রণালীতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক। জাহাজ চলাচলের ঠিকমতো খবর আসছে। নজরদারি ব্যবস্থাও ঠিকঠাক চলছে। নজর রাখা হচ্ছে পণ্য পরিবহণ, বিমার খরচের দিকে। তবে পরিস্থিতি খারাপ হলে কী হবে, কী ভাবে বাণিজ্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা যায়, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলি থেকে তেল আমদানি বাড়ানোর সম্ভাবনা নিয়েও কথা হয়েছে বৈঠকে।

সরকারি সূত্রের বক্তব্য, শুধু জাহাজ চলাচল নয়, তৃতীয় বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী দেশ ইরানের পরিস্থিতি খারাপ হলে বিশ্ব বাজারে তেলের দাম বাড়বে। তা প্রভাব ফেলবে এ দেশের মূল্যবৃদ্ধি, বিদেশি মুদ্রার লেনদেনের ঘাটতির উপরে। তা-ও চিন্তার কারণ।

রফতানিকারী সংগঠনগুলির বক্তব্য, ইরানে গত অর্থবর্ষে প্রায় ৬০০০ কোটি টাকার বাসমতী চাল রফতানি হয়েছিল। এ বার যুদ্ধের ধাক্কায় তা প্রায় ৩৫% কমতে পারে। গিয়েছিল প্রায় ৭০০ কোটি টাকার চা। সেই রফতানি পুরোপুরি থমকে যেতে পারে। তা ছাড়া একের পর এক যুদ্ধে ইউরোপে কার্পেটের মতো বিলাসবহুল পণ্যের রফতানি কমেছে।

বাণিজ্য যেমন

২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে ইজ়রায়েলে ভারতের রফতানি ২১০ কোটি ডলার। আমদানি ১৬০ কোটি।

একই সময়ে ইরানে রফতানি ১৪০ কোটি ডলার। আমদানি ৪৪.১ কোটি।

ইরানে মূলত বাসমতী চাল রফতানি করে ভারত। তুলনায় পণ্য রফতানির বৈচিত্র বেশি ইজ়রায়েলে।

ঝুঁকির জায়গা

ইজ়রায়েল-ইরানের সংঘাতে দুশ্চিন্তা বাড়ছে হরমুজ প্রণালী দিয়ে বাণিজ্যে।

এই পথে দুই-তৃতীয়াংশ জ্বালানি আমদানি ভারতের।

এই রাস্তা বিঘ্নিত হলে বাড়বে তেল, জাহাজ এবং বিমার খরচ।

সংঘাত তীব্রতর হলে জলের পাশাপাশি আকাশ পথও অনিশ্চিত হতে পারে।

ইজ়রায়েল-হুথি সংঘর্ষে উদ্বেগ লোহিত সাগরেও।

ইউরোপ, উত্তর আফ্রিকা এবং আমেরিকার পূর্ব উপকূলে ভারতীয় পণ্য যায় এই পথে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Crude Oil Fuel Iran-Israel Conflict

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy