দশ বছরে (২০১৩-১৪ সাল থেকে ২০২২-২৩) রাজ্যগুলির সুদ, বেতন এবং পেনশন মিলে খরচ বেড়েছে আড়াই গুণ— এই তথ্য উঠে এল সিএজি-র রিপোর্টে। ২০১৩-১৪ সালে তা ছিল ৬,২৬,৮৪৯ কোটি টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে পৌঁছেছে ১৫,৬৩,৬৪৯ কোটিতে। সিএজি-র দাবি, পশ্চিমবঙ্গ-সহ ন’টি রাজ্যে ২০২২-২৩ সালে সবচেয়ে বেশি টাকা গিয়েছে বেতন খাতে। তার পরেই উঠে এসেছে সুদ। তার আগের ন’বছরে খরচের ক্ষেত্রে এক নম্বরে ছিল বেতন, তার পরে পেনশন, শেষে সুদ। রাজস্ব ঘাটতি থাকায় অর্থ কমিশনের সুপারিশে অনুদানও পেয়েছে তারা। তবে ১৯টি রাজ্যের ক্ষেত্রে সমীক্ষার শেষ বছরে বেতনের পরে পেনশনে বেশি খরচ হয়েছে। তার পরে ছিল সুদ।
উল্লেখ্য, এই সমস্ত খাতের খরচ রাজ্যগুলির না করলেই নয়, অর্থাৎ তা বাধ্যতামূলক। তবে সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, এগুলিতে বিপুল অর্থ আটকে থাকার মানে, সমাজকল্যাণ বা সুরক্ষা খাতে টান পড়া। সেটাই সিএজি-র রিপোর্টে স্পষ্ট হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, ২০২২-২৩ সালে পশ্চিমবঙ্গ-সহ ন’টি রাজ্যের ঋণ বেড়েছে। অথচ তাদের অনেকের বিরুদ্ধে ভোট বাক্সে সুবিধা পেতে দান-খয়রাতিতে অযথা খরচের অভিযোগ রয়েছে। বিরোধী শাসিত বহু রাজ্যের অবশ্য দাবি, আয়ের রাস্তা কমায় ঋণ বাড়াতে হয়েছে। তাই জাঁতাকলে তারা।
রিপোর্টে প্রকাশ, আলোচ্য ১০ বছরে রাজ্যগুলির রাজস্ব ব্যয় মোট খরচের ৮০-৮৭ শতাংশে পৌঁছেছে। মোট অভ্যন্তরীণ আয়ের সাপেক্ষে তা ১৩%-১৫%। গত ২০২২-২৩ সালে সব রাজ্যের মোট রাজস্ব ব্যয় ছিল (সরকারি কর্মী, সরকারি ভবন রক্ষণাবেক্ষণ, স্বাস্থ্য-শিক্ষার ইত্যাদি খাতে সরকারি খরচ) প্রায় ৩৬ লক্ষ কোটি টাকা। তার মধ্যে বেতন, পেনশন,সুদ ও ঋণ বাবদ তাদের মেটাতে হয়েছে প্রায় ১৫.৬৩ লক্ষ কোটি (২০১৩-১৪ সালে ছিল ৬.২৭ লক্ষ কোটি)। ১১ লক্ষ কোটির বেশি গিয়েছে অনুদান প্রকল্পে ও ৩ লক্ষ কোটির বেশি খরচ হয়েছে ভর্তুকিতে (১০ বছর আগে ছিল ৯৬,৪৭৯ কোটি)। এই তিন খাতেই গিয়েছে মোট খরচের ৮৩%। অর্থাৎ, এক দশকে রাজস্ব খাতে ২.৬৬ গুণ খরচ বেড়েছে, বাধ্যতামূলক খাতে ২.৪৯ গুণ ও ভর্তুকি ৩.২১ গুণ। বহু রাজ্যই ঘাটতির লক্ষ্য ছুঁতে পারেনি।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)