প্রতীকী ছবি।
বিশ্বে অস্থিরতা সত্ত্বেও, দেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল রাখা নিয়ে অন্যান্য সময়ের মতোই কৃতিত্ব দাবি করা হল। সেই সঙ্গে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে সতর্কবার্তাও শোনাল অর্থ মন্ত্রকের মাসিক রিপোর্ট। যেখানে বলা হয়েছে, ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি খারাপ হলে মূলত জ্বালানির দর বৃদ্ধি এবং সরবরাহ ব্যবস্থা ধাক্কা খেলে আগামী দিনে ফের মাথাচাড়া দিতে পারে তার হার। এমনিতেই চড়া জিনিসের দামে নাজেহাল মানুষ। তার মধ্যেই কেন্দ্রের এই হুঁশিয়ারি বিষয়টির গুরুত্বই তুলে ধরছে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
শনিবার প্রকাশিত সেপ্টেম্বরের মাসিক রিপোর্টে সামগ্রিক ভাবে শিল্প ও পরিষেবা ক্ষেত্র ভাল করছে বলেই জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রক। তুলে ধরা হয়েছে, অর্থবর্ষের প্রথম ছ’মাসে গড়ে ১.৪৯ লক্ষ কোটি টাকা জিএসটি আদায়, সরকারের মূলধনী খাতে খরচ, ছোট শিল্প-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ঋণের চাহিদা বৃদ্ধি, প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নি আগের তুলনায় বেশি আসার কথাও। সংশ্লিষ্ট মহল যদিও বলছে, দেশে বেকারত্ব এখনও প্রায় ৬.৫%। ডলারের সাপেক্ষে টাকার রেকর্ড পতনে বাড়ছে আমদানি খরচ। ফলে আশঙ্কা ঘাটতি মাথাচাড়া দেওয়ার। খুচরো ও পাইকারি মূল্যবৃদ্ধি, আমদানি-রফতানি থেকে শিল্পোৎপাদন— সরকারি তথ্যেই বাড়ছে অর্থনীতি ঘিরে চিন্তা।
অর্থ মন্ত্রক অবশ্য দাবি করছে, মুদ্রার বাজারে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের হস্তক্ষেপের হাত ধরে টাকার দামে অস্থিরতা কমেছে। দেশের বিদেশি মুদ্রা ভান্ডার এখনও যথেষ্ট। পাল্লা দিয়ে নেমেছে পাইকারি ও খুচরো মূল্যবদ্ধির মধ্যে তফাতও। কাঁচামালের চড়া দামের কারণে সংস্থাগুলি যে হারে পণ্যের দাম বাড়াচ্ছে, আগামী দিনে তার গতি কিছুটা কমবে। আবহাওয়া বিরূপ না-হলে খাদ্যপণ্যের দর কমার হাত ধরে নামবে মূল্যবৃদ্ধির হারও।
তবে এ কথা জানিয়েও কেন্দ্রের হুঁশিয়ারি, অন্যান্য দেশের তুলনায় মূল্যবৃদ্ধি যোঝার ক্ষেত্রে ভারত বেশি সফল ঠিকই। কিন্তু বিশ্ব বাজারে সরবরাহ ব্যবস্থায় ধাক্কা এবং চড়া জ্বালানির দাম এখনও চিন্তার কারণ। ভূ-রাজনৈতিক অবস্থা এখনও অস্থির। তা আরও জটিল আকার ধারণ করলে এবং ডলার-টাকার বিনিময়মূল্যে আরও দোলাচল দেখা দিলে ২০২৩ সালে মূল্যবৃদ্ধি মাথা নামানোর পরিবর্তে আরও মাথাচাড়া দিতে পারে।
বিশেষজ্ঞ মহলের মতে, কেন্দ্র মূল্যবৃদ্ধি মোকাবিলায় সাফল্য দাবি করলেও, খাদ্যপণ্যের দামের অস্থিরতা বুঝতে পারেনি শীর্ষ ব্যাঙ্ক। যে কারণে জিনিসের দামে রাশ টানতে তাদের পদক্ষেপ কাজে দিচ্ছে না। পাইকারি মূল্যবৃদ্ধি কমলেও, এখনও তা ১০ শতাংশের উপরে। এমনকি টাকার দামও আর কত পড়বে জানা নেই। এখনই ডলার ৮৩ টাকা ছুঁয়েছে। মন্ত্রকের যদিও মত, করোনার আর্থিক ধাক্কা, বিশ্ব জুড়ে চড়া মূল্যবৃদ্ধি এবং সুদের হার বাড়ানোর প্রভাব কাটিয়ে ভারতের এগোনোর জন্য নীরবে যে সমস্ত পদক্ষেপ করা হয়েছে, তা আগামী দিনে ফল দেবে। সেটা এড়িয়ে যাওয়া বিশ্বের পক্ষেও সম্ভব হবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy