রাশিয়া থেকে অশোধিত তেল কেনা বাড়িয়ে আমদানি খরচ কমিয়েছে ভারত। কিন্তু যুদ্ধের বাজারে অন্য একটি ঘটনায় চাপে পড়েছে ভারতীয় তেল সংস্থাগুলি। রাশিয়ার চারটি জ্বালানি প্রকল্পে এ দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলির গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারি রয়েছে। কিন্তু গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ শুরুর পরে পশ্চিম দুনিয়ার বিভিন্ন অবরোধের জালে জড়িয়ে পড়েছে মস্কো। এর জেরে ওই সমস্ত প্রকল্পের লভ্যাংশ (ডিভিডেন্ড) ভারতে ফিরিয়ে আনতে পারছে না সংস্থাগুলি। ওই মুনাফার অঙ্ক ৩০ কোটি ডলার (প্রায় ২৫০০ কোটি টাকা)। প্রকল্পগুলিতে তেলের উৎপাদন নির্বিঘ্নে চলছে বলে সংশ্লিষ্ট মহলের খবর। কিন্তু গত সওয়া এক বছর ধরে তার লাভের টাকা পড়ে রয়েছে রাশিয়ার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে।
ওএনজিসির আন্তর্জাতিক শাখা ওএনজিসি বিদেশের হাতে রয়েছে পশ্চিম সাইবেরিয়ার ভ্যাঙ্করনেফ্ট তেল প্রকল্পের ২৬% অংশীদারি। আরও ২৩.৯% রয়েছে ইন্ডিয়ান অয়েল, অয়েল ইন্ডিয়া এবং ভারত পেট্রোরিসোর্সেসকে নিয়ে গঠিত গোষ্ঠীর হাতে। রাশিয়ার রসনেফ্টের হাতে রয়েছে বাকি ৫০.১%। এ ছাড়াও তিন ভারতীয় সংস্থার গোষ্ঠীর হাতে রয়েছে তাস ইয়ুরয়াখ নেফটেগাজ়োদোবাচা তেল ক্ষেত্রের ২৯.৯% মালিকানা। এর বাইরে ভারতীয় সংস্থাগুলি আরও দু’টি প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত রয়েছে। রাশিয়ায় তাদের লগ্নির সম্মিলিত অঙ্ক ৫৪৬ কোটি ডলার (প্রায় ৪৫,০০০ কোটি টাকা)। অয়েল ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর রঞ্জিত রথের কথায়, ‘‘আগে ওই প্রকল্পগুলি থেকে আমরা নিয়মিত লভ্যাংশ পেতাম। কিন্তু এখন সেই টাকা রাশিয়ার ব্যাঙ্কে পড়ে রয়েছে।’’
ওয়াকিবহাল মহলের বক্তব্য, ইউক্রেনের উপরে আগ্রাসনের পরে রাশিয়ার প্রথম সারির ব্যাঙ্কগুলিকে আন্তর্জাতিক আর্থিক লেনদেন প্রযুক্তি ব্যবস্থা (সুইফট) থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়। আবার বিনিময় হারের অস্থিরতা কমাতে দেশ থেকে ডলার বেরিয়ে যাওয়ার উপরে কড়াকড়ি এনেছে মস্কোও। ফলে কোনও ভাবেই প্রকল্পের লভ্যাংশ হাতে পাচ্ছে না সংস্থাগুলি। তা স্টেট ব্যাঙ্ক ও কানাড়া ব্যাঙ্কের যৌথ প্রকল্প কমার্শিয়াল ইন্দো ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে রয়েছে। ভ্যাঙ্করনেফ্টের লভ্যাংশ মেলে প্রতি ছ’মাসে, তাসের প্রতি ত্রৈমাসিকে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)