Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Business News

প্রত্যক্ষ কর থেকেও রোজগার কমার ইঙ্গিত

জানা গিয়েছে, ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রত্যক্ষ কর আদায় হয়েছে মাত্র ৭.৩ লক্ষ কোটি টাকা।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব প্রতিবেদন 
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০২০ ০৩:৫০
Share: Save:

চলতি অর্থবর্ষে প্রত্যক্ষ কর আদায়ের লক্ষ্য পূরণ করা তো দূরস্থান, গত দু’দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে এই প্রথম তা আগের বছরের তুলনায় সরাসরি কমে যাওয়ার আশঙ্কা অর্থ মন্ত্রকে দানা বেঁধেছে বলে সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের দাবি।

২০১৮-১৯ সালে প্রত্যক্ষ কর আদায়ের অঙ্ক ছিল ১১.৫ লক্ষ কোটি টাকা। এ বার তা ১৭ শতাংশ বাড়িয়ে লক্ষ্য বাঁধা হয়েছিল ১৩.৫ লক্ষ কোটিতে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত যা অবস্থা, তাতে সেই লক্ষ্য ছোঁয়া তো দূর, উল্টে আগের বারের অঙ্কেই পৌঁছনো সম্ভব হবে কি না, সে বিষয়ে সংবাদ সংস্থার কাছে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন অর্থ মন্ত্রকের কর্তাদের একাংশ।

জানা গিয়েছে, ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রত্যক্ষ কর আদায় হয়েছে মাত্র ৭.৩ লক্ষ কোটি টাকা। যা আগের বার এই একই সময় পর্যন্ত আদায় হওয়া করের তুলনায় প্রায় ৫.৫ শতাংশ কম। শুধু তা-ই নয়, গত তিন বছরের হিসেব অনুযায়ী, মোট আদায়ের মোটামুটি ৩০-৩৫ শতাংশ আদায় হয় অর্থবর্ষের শেষ ত্রৈমাসিকে। সেই হিসেবেও এ বার বছর শেষে মোট আদায় দাঁড়াবে ১০.৪৩ লক্ষ কোটি টাকার আশেপাশে। যা এ বারের লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় অনেকখানি কম তো বটেই, গত বারের আদায়ের অঙ্কেরও নীচে। যে ছবি দেখা যায়নি ২০০৮ সালের বিশ্ব জোড়া ভয়াল মন্দা, এমনকি ২০১৬ সালের নোটবন্দির পরেও।

আরও পড়ুন: ‘মন্ত্রী না-হলে এয়ার ইন্ডিয়া কিনে নিতাম’

বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রত্যক্ষ কর আদায় এ ভাবে গোত্তা খাওয়ার কারণ মূলত দু’টি। প্রথমত, চলতি আর্থিক বছরে সম্ভাব্য বৃদ্ধির হার নেমে এসেছে ৫ শতাংশে। ১১ বছরের মধ্যে যা সব থেকে কম। আর্থিক কর্মকাণ্ড ঝিমিয়ে পড়ার কারণে কর আদায়ও যে হোঁচট খাবে তা প্রত্যাশিত। কারণ, বাজারে চাহিদায় ভাটা এবং সেই সূত্রে বিক্রিবাটা কম হওয়ার কারণে আয়ে কোপ পরার সম্ভাবনা বিভিন্ন সংস্থার। ফলে আদায় কম হতে পারে কর্পোরেট করের। সেই সঙ্গে কাজের বাজারের ছবিও বিবর্ণ (নতুন কাজের সুযোগ কম, গড় মজুরি বৃদ্ধির হারও নামমাত্র) হওয়ায় কমতে পারে ব্যক্তিগত আয়কর আদায়ের অঙ্ক। আর প্রত্যক্ষ কর মূলত এই দু’য়েরই যোগফল।

দ্বিতীয়ত, শিল্পকে চাঙ্গা করতে এ বার কর্পোরেট করের হার ছাঁটাই করেছে কেন্দ্র। তার দরুন প্রায় ১.২৫ লক্ষ কোটি টাকা কম আদায় হবে বলেও জানিয়েছিল মোদী সরকার। সেই সিদ্ধান্তও আদায়ে ছায়া ফেলছে বলে বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি।

প্রত্যক্ষ কর আদায়ের এই করুণ সম্ভাবনা সামনে আসার পরে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে, নোটবন্দির সময়ে সরকার দাবি করেছিল, তার দরুন করের জালে আসবেন অনেক বেশি সংখ্যক মানুষ এবং সংস্থা। লাফিয়ে বাড়বে আয়কর আদায়। এখন তবে এমন ছন্দপতন কেন?

তা ছাড়া, প্রত্যক্ষ কর আদায় যদি এ ভাবে গোত্তা খায়, তা হলে শেষমেশ রাজকোষ ঘাটতির পরিমাণ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে সেই প্রশ্নও উঠছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস থেকে অর্থনীতিবিদদের এক

বড় অংশ— হালে এঁরা বার বার বলেছেন, ঝিমিয়ে পড়া অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে পরিকাঠামো, শিক্ষার মতো ক্ষেত্রে সরকারি ব্যয় বাড়াক কেন্দ্র। কিন্তু আয়েই যদি এ ভাবে টান পড়ে, তাহলে অর্থনীতিতে প্রাণ ফেরাতে সরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধির টাকা কোথা থেকে আসবে, প্রশ্ন রয়ে যাচ্ছে সেখানেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Direct Tax
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE