E-Paper

সত্যি হল আশঙ্কা, ন’মাসে সবচেয়ে নীচে নামল শিল্পবৃদ্ধির হার

সোমবার পরিসংখ্যান মন্ত্রক জানিয়েছে, আলোচ্য সময়ে শিল্পোৎপাদন ধাক্কা খাওয়ার পিছনে প্রধান কারণ কল-কারখানার কর্মকাণ্ডে (২.৬%) ঝিমুনি।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৫ ০৭:৫১
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

মাসখানেক আগে দেশের আটটি প্রধান পরিকাঠামো ক্ষেত্রের মে মাসের পরিসংখ্যান প্রকাশ হয়েছিল। তা নেমেছিল ০.৭ শতাংশে। আশঙ্কা বাড়ছিল তখন থেকেই। বিশেষজ্ঞেরা সতর্ক করেছিলেন, শিল্পোৎপাদনে এর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। কারণ, সেখানে এই আটটি ক্ষেত্রের গুরুত্ব ৪০.২৭%। সেই আশঙ্কাকে সত্যি করে শিল্পোৎপাদন সূচক নামল ১.২ শতাংশে। যা ন’মাসের সর্বনিম্ন। সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, মোদী সরকার যখন উৎপাদনকে শক্তপোক্ত করে রফতানি বাড়ানোর দিকে জোর দিচ্ছে, তখন এই পরিসংখ্যান বড় ধাক্কা। বিশেষত গত কয়েক মাস ধরেই যখন তা নিম্নমুখী। তা ছাড়া বাজারে শিল্প পণ্যের চাহিদার অবস্থা যে সন্তোষজনক নয়, তারও প্রমাণ এই সূচক।

সোমবার পরিসংখ্যান মন্ত্রক জানিয়েছে, আলোচ্য সময়ে শিল্পোৎপাদন ধাক্কা খাওয়ার পিছনে প্রধান কারণ কল-কারখানার কর্মকাণ্ডে (২.৬%) ঝিমুনি। যা শিল্প ক্ষেত্রের বৃহত্তম মাপকাঠি। এর পাশাপাশি খনন (-০.১%) এবং বিদ্যুৎ (-৫.৮%) ক্ষেত্রের উৎপাদন এক বছর আগের তুলনায় সরাসরি সঙ্কুচিত হয়েছে। একটি অংশের বক্তব্য, পরিকাঠামোর ফল ভাল হলেও তার হিসাব কষা হয়েছে গত বছরের নিচু ভিতের নিরিখে। যে সময়ে লোকসভা ভোটের কারণে পরিকাঠামোয় সরকারি খরচ থমকে ছিল। ২০২৪ সালের মে মাসে শিল্প বৃদ্ধির হার ছিল ৬.৩%।

পটনা আইআইটি-র অর্থনীতির অধ্যাপক রাজেন্দ্র পরামানিকের ব্যাখ্যা, ‘‘বর্ষা দ্রুত শুরু হওয়া খনন এবং কল-কারখানার উৎপাদনকে বিঘ্নিত করেছে। তা ছাড়া রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক রেপো রেট (যে সুদে শীর্ষ ব্যাঙ্ক বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিকে ঋণ দেয়) কমালেও ব্যাঙ্কের সুদে তার সম্পূর্ণ প্রতিফলন ঘটেনি। ফলে শিল্প ঋণ এখনও সস্তা হয়নি। শীর্ষ ব্যাঙ্ক এবং সরকার ইতিমধ্যেই এ ব্যাপারে ব্যাঙ্কগুলিকে বলতে শুরু করেছে।’’ অর্থনীতিবিদ অজিতাভ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘ভূ-রাজনৈতিক সমস্যায় কাজের বাজার চাপের মুখে। রয়েছে আয়ের বৈষম্য। এই সব কারণে মূলত ভোগ্যপণ্যের চাহিদায় ভাটার প্রভাব পড়েছে সামগ্রিক শিল্পোৎপাদনে।’’ তাঁর পরামর্শ, অর্থনীতিকে গতিশীল রাখতে পরিকাঠামোয় খরচ চালিয়ে যেতে হবে সরকারকে। বন্ধন ব্যাঙ্কের মুখ্য অর্থনীতিবিদ সিদ্ধার্থ সান্যালের কথায়, ‘‘ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং জাতীয় অর্থনীতি বিগত সময়ে যথেষ্ট জটিলতার মধ্যে দিয়ে চলেছে। তবে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের সুদ হ্রাসকে কার্যকর করতে শুরু করেছে ব্যাঙ্কগুলি। সরকারও বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছে। সেগুলি কার্যকর হলে আগামী কয়েক মাসে উৎপাদন এবং রফতানি নির্ভর ক্ষেত্রে তার সুফল স্পষ্ট হবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Industrialization

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy