Advertisement
E-Paper

Interest Rate: বেড়েছে সুদ, শোধরাতে হবে জোগান শৃঙ্খলও

এই মুহূর্তে বিশ্ব অর্থনীতিকে যে সব সমস্যার মোকাবিলা করতে হচ্ছে, তার মধ্যে নিশ্চিত ভাবেই পয়লা নম্বরে রয়েছে মূল্যবৃদ্ধি।

অমিতাভ গুহ সরকার

শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০২২ ০৬:২৭

এই মুহূর্তে বিশ্ব অর্থনীতিকে যে সব সমস্যার মোকাবিলা করতে হচ্ছে, তার মধ্যে নিশ্চিত ভাবেই পয়লা নম্বরে রয়েছে মূল্যবৃদ্ধি। চড়া দামের দৈত্যকে সামাল দিতে বিভিন্ন দেশের নাজেহাল অবস্থা। এক দিকে প্রয়োজনের তুলনায় বাজারে বেশি টাকার জোগান, অন্য দিকে পণ্য ও কাঁচামালের জোগান শৃঙ্খল বিঘ্নিত হওয়া— এই জোড়া চাপ মূল্যবৃদ্ধির সমস্যাকে আরও জটিল করে তুলেছে। নগদের জোগানে রাশ টানতে এরই মধ্যে সুদ বাড়িয়েছে বিভিন্ন দেশ। ভারতেও রেপো রেট (যে সুদের হারে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলি স্বল্প মেয়াদে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের থেকে ঋণ নেয়) ৪০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়েছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। নগদ জমার অনুপাত বাড়িয়েছে ৫০ বেসিস পয়েন্ট।

তবে এই পদক্ষেপে দামের উদ্ধত ফণাকে নামানো যাবে বলে মনে হয় না। এপ্রিলে ভারতে খুচরো মূল্যবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৭.৭৯%। যা আট বছরের সর্বোচ্চ। পাইকারি বাজারে তা ১৫% ছাপিয়েছে। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কও মেনেছে জুনে সুদের হার আরও বাড়াতে হবে।

* মূল্যবৃদ্ধির অন্যতম বড় একটি কারণ পেট্রল-ডিজ়েলের চড়া দাম। চাপের মুখে সম্প্রতি লিটার প্রতি পেট্রলে ৮ টাকা এবং ডিজ়েলে ৬ টাকা করে উৎপাদন শুল্ক কমিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু এই পদক্ষেপ তেমন কাজ করবে না, যদি না জোগান শৃঙ্খলের সমস্যা মিটিয়ে পণ্যের সরবরাহ বাড়ানো যায়।

* সামগ্রিক মূল্যবৃদ্ধির আরও একটি কারণ খাদ্যপণ্যের লাগামছাড়া দাম। সম্প্রতি উত্তর ভারতে মাত্রাতিরিক্ত গরম এবং অসমে বন্যার কারণে কৃষি উৎপাদন কমবে বলে আশঙ্কা। পণ্য সরবরাহ ঠিক রাখতে কেন্দ্র এরই মধ্যে গম রফতানির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। নিয়েছে শুল্ক সংক্রান্ত কিছু সিদ্ধান্ত। এখন এই সমস্ত পদক্ষেপের প্রভাব জিনিসপত্রের দামের উপর পড়ে কি না, তা সময়ই বলবে।

* শিল্পের পক্ষে কাম্য না হলেও আগামী কয়েক মাসে সুদ যে আরও বাড়তে চলেছে তা এক রকম নিশ্চিত। তাতে শিল্পের আর্থিক মূলধন জোগাড়ের খরচ বাড়বে। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে শেয়ার বাজারে। শিল্পের সামনে আরও একটি সমস্যা তৈরি করেছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। কারণ, এর ফলে সারা বিশ্বে বিঘ্নিত হয়েছে কাঁচামালের জোগান। তা ইতিমধ্যেই চড়তে থাকা কাঁচামালের দামকে আরও বাড়িয়ে তুলছে। এর প্রভাবে সব মিলিয়ে কারখানার উৎপাদন কমছে। উৎপাদন ও জোগান কমার ফলে বাড়ছে দাম।

এরই মধ্যে কাল, মঙ্গলবার ২০২১-২২ অর্থবর্ষ এবং গত জানুয়ারি-মার্চের বৃদ্ধির পরিসংখ্যান প্রকাশ হবে। বাজারের নজর থাকবে সে দিকে। কিন্তু তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, এর মধ্যে অর্থনীতির হাওয়া অনেকটাই বদলেছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ লেগেছে ফেব্রুয়ারিতে, যা এখনও চলছে। এই যুদ্ধ আরও বেশি দিন ধরে চললে বিশ্ব তথা ভারতের অর্থনীতি কোন জায়গায় গিয়ে দাঁড়াবে, তা নিয়ে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক এবং বিভিন্ন মূল্যায়ন সংস্থাও উদ্বিগ্ন। এই ঘটনাও চিন্তা বাড়াচ্ছে লগ্নিকারীদের। সূচকে তাই অদূর ভবিষ্যতে অস্থিরতা বজায় থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

এ দিকে, আশা জাগিয়ে বাজারে জীবন বিমা নিগমের (এলআইসি) প্রথম শেয়ার বা আইপিও এলেও, তাতে জল ঢেলেছে বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতি। ৯৪৯ টাকায় ইসু হওয়া শেয়ারটি খোলে ৮৬৫ টাকায়। অর্থাৎ, ৮.৬২% ছাড়ে। গত শুক্রবার দাম থিতু হয়েছে ৮২৩ টাকায়। দর এতটা কমায় এই দামে বাজার থেকে শেয়ার কেনার কথা ভাবছেন অনেকে। আজ, সোমবার ২০২১-২২ অর্থবর্ষের ফল প্রকাশ করবে এলআইসি। সঙ্গে সুপারি‌শ করবে ডিভিডেন্ড। সেই ফলাফল দেখে শেয়ারটি লেনদেনের সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে।

উল্লেখ্য, দেশের বৃহত্তম এই আইপিওটি থেকে কেন্দ্র তুলেছে ২০,৫৫৭ কোটি টাকা। ইসুর দামে পলিসিহোল্ডারেরা শেয়ারে ৬০ টাকা ও ক্ষুদ্র লগ্নিকারীরা ৪৫ টাকা করে ছাড় পেয়েছিলেন। পলিসিহোল্ডারদের জন্য সংরক্ষিত শেয়ারের জন্য আবেদন জমা পড়েছিল ছ’গুণেরও বেশি। কর্মীরা বিলগ্নির বিরোধিতা করলেও তাঁদের জন্য সংরক্ষিত শেয়ারের আবেদন এসেছে ৪.৪ গুণ। ইসুতে সামগ্রিক ভাবে ২.৯৫ গুণ আর্জি জমা পড়েছে। তা সত্ত্বেও শেয়ারটি নথিভুক্ত হয়েছে ছাড় দেওয়া দামের নীচে। মূলত বিদেশি লগ্নিকারীরা তেমন উৎসাহ না দেখানোই এর মূল কারণ।

(মতামত ব্যক্তিগত)

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তেফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

Price Hike Inflation
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy