E-Paper

মূল্যবৃদ্ধি পাকাপাকি মাথা নামালে তবেই সুদ ছাঁটাই

গত সপ্তাহে জানা গিয়েছে, জানুয়ারিতে খুচরো বাজারের মূল্যবৃদ্ধি নেমেছে ৫.১০ শতাংশে। যা তিন মাসে সব থেকে কম। খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিও ৯.৫৩% থেকে কমে হয়েছে ৮.৩%। তবে এটাও যথেষ্ট চড়া।

অমিতাভ গুহ সরকার

শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৮:৪৬
An image of Market Price

—প্রতীকী চিত্র।

গত সপ্তাহের শুরুটা ভাল হয়নি। প্রথম দিনেই সেনসেক্স ৫২৩ পয়েন্ট খুইয়ে বসায় কিছুটা আতঙ্ক ছড়ায় লগ্নিকারীদের মধ্যে। তবে মঙ্গলবার ফের ঘুরে দাঁড়ায়। শুক্রবার পর্যন্ত নাগাড়ে মোট ১৩৫৫ এগিয়ে সপ্তাহ শেষ করে ৭২,৪২৭ অঙ্কে। গত ১৫ জানুয়ারি গড়া রেকর্ড উচ্চতা থেকে সেনসেক্স এখন ৯০১ পয়েন্ট পিছনে। নিফ্‌টির ক্ষেত্রে এই দূরত্ব আরও কম। সর্বোচ্চ শিখর ২২,০৯৭ থেকে মাত্র ৫৬ পয়েন্ট। অর্থাৎ পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে নিফ্‌টি নতুন নজির গড়তে পারে চলতি সপ্তাহেই। গত সপ্তাহে বাজার এতখানি ওঠে বুধ এবং বৃহস্পতিবার বিদেশি বিনিয়োগকারী সংস্থাগুলি প্রায় ৭০০০ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করা সত্ত্বেও। কারণ খামতি অনেকটা পুষিয়ে দিয়েছে দেশীয় লগ্নিকারী বিভিন্ন সংস্থা। তারা ওই দু’দিনে শেয়ার কিনেছে মোট ৫১৭৫ কোটি টাকার। শুক্রবার অবশ্য ফেরে বিদেশি পুঁজিও।

গত সপ্তাহে জানা গিয়েছে, জানুয়ারিতে খুচরো বাজারের মূল্যবৃদ্ধি নেমেছে ৫.১০ শতাংশে। যা তিন মাসে সব থেকে কম। খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিও ৯.৫৩% থেকে কমে হয়েছে ৮.৩%। তবে এটাও যথেষ্ট চড়া। সাধারণ মানুষের স্বস্তি ফিরেছে বলা যাবে না। কাজেই পরের মাসগুলিতে খুচরো মূল্যবৃদ্ধি আরও নেমে ৪ শতাংশের কাছে না এলে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক সুদ কমানোর পথে হাঁটবে না। ফলে বাজারে খাদ্যপণ্যের দামকে অনেকটা কমতে হবে। গত মাসে পাইকারি মূল্যবৃদ্ধি কমে হয়েছে ০.২৭%, তিন মাসে সর্বনিম্ন। তবে এখানেও মাথাব্যথা খাদ্যপণ্য। যার মূল্যবৃদ্ধি এখনও ৬ শতাংশের বেশি।

খুব একটা স্বস্তি দেয়নি শিল্পোৎপাদনও। ডিসেম্বরে শিল্প বৃদ্ধির হার মাত্র ৩.৮%। দেশে যখন আর্থিক কর্মকাণ্ড বাড়ছে, তখন তার চাকায় আরও একটু দ্রুত গতি প্রত্যাশিত ছিল। তবে নভেম্বরের তুলনায় পরিস্থিতি কিছুটা ভাল। ওই মাসে শিল্প বৃদ্ধি নেমেছিল ২.৪ শতাংশে, আট মাসে সব থেকে কম। চলতি অর্থবর্ষে এখনও পর্যন্ত সর্বনিম্ন।

গত বৃহস্পতিবার শেষ হয়েছে সংস্থাগুলির অক্টোবর-ডিসেম্বর ত্রৈমাসিকের আর্থিক ফল প্রকাশ। এ বার তাদের হিসাবের খাতার ছবিটা মিশ্র। অনেক সংস্থার লাভ বাড়লেও সেই অনুপাতে আয় বাড়েনি। কোল ইন্ডিয়ার নিট লাভ ১৮% বেড়ে পৌঁছেছে ৯০৯৩ কোটি টাকায়। মহিন্দ্রা অ্যান্ড মহিন্দ্রার ৩৪% বেড়ে ২৬৫৮ কোটি। সেনকো গোল্ডের ১০৩ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ১০৯ কোটি টাকা। তবে স্টিল অথরিটির ২২% কমে নেমেছে ৪২৩ কোটি টাকায়।

গত মাসে গাড়ি বিক্রি ১৫% বেড়েছে। দু’চাকা এবং ব্যক্তিগত যাত্রিবাহীর ক্ষেত্রে তৈরি হয়েছে নজির। বিকিয়েছে যথাক্রমে ১৪,৫৮,৮৪৯ এবং ৩,৯৩,২৫০টি। ট্র্যাক্টরের বিক্রি বেড়েছে ২১.১%। তেমন বাড়েনি শুধু বাণিজ্যিক যানের। গাড়ি বিক্রি বৃদ্ধি দেশের অর্থনীতির উন্নতির ইঙ্গিত। উপকৃত হয় আনুষঙ্গিক বিভিন্ন শিল্প। গ্রামেও গাড়ির চাহিদা ফের বাড়ছে। এটা ভাল লক্ষণ।

এ দিকে, বাজার তেজি থাকায় শেয়ার ভিত্তিক ফান্ডের ন্যাভও চড়েছে। এক দিকে বেশ কিছু সংস্থা প্রথম বার শেয়ার বিক্রি করে (আইপিও) তহবিল তুলছে। অন্য দিকে একের পর এক আসছে নতুন ফান্ডের ইউনিট (এনএফও)। আশা, আগামী অর্থবর্ষে (২০২৪-২৫) চাঙ্গা হবে বন্ড বা ঋণপত্রের বাজারও।

এই অবস্থায় লগ্নিকারীদের চোখ একাধিক বিষয়ে। প্রথম অপেক্ষা লোকসভা ভোটের দিনক্ষণ জানার, তার পরে বর্ষার আগাম অনুমানের। তালিকায় রয়েছে ভোটের ফল এবং তা সম্পন্ন হয়ে দেশে নতুন সরকার গঠিত হলে নতুন অর্থবর্ষের পূর্ণাঙ্গ বাজেট।

(মতামত ব্যক্তিগত)

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Interest Rates Price Hike

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy