অর্থমন্ত্রীর ঘোষণায় ক্ষোভ ব্যাঙ্ককর্মীদের।
অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন একাধিক ব্যাঙ্ককে মিশিয়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করতেই ক্ষোভে ফেটে পড়লেন এই শিল্পে যুক্ত কর্মী-অফিসারদের বড় অংশ। ইউনিয়নগুলি জানিয়ে দিল, ব্যাঙ্ক সংযুক্তিকরণের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামবে তারা। প্রতিবাদ জানাতে আজ শনিবারই দেশ জুড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করার কথা ঘোষণা করেছে বিভিন্ন সংগঠন। তবে শিল্প মহলের একাংশ ১০টি ব্যাঙ্ককে মিশিয়ে বড় চারটিতে পরিণত করার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাদের দাবি, এতে অনুৎপাদক সম্পদের ধাক্কায় নাকাল ব্যাঙ্কগুলি ঘুরে দাঁড়ালে আখেরে চাঙ্গা হওয়ার রসদ পাবে অর্থনীতি। বিশেষ করে শুক্রবার ব্যাঙ্ক সংযুক্তির পাশাপাশি যেখানে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিতে নগদ জোগান বাড়াতে ৫৫,২৫০ কোটি টাকা পুঁজি ঢালার কথাও ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী। যদিও এ দিন ব্যাঙ্কিং ও শিল্প মহলের অন্য এক অংশ প্রশ্ন তুলেছে, সংযুক্তির এই পদক্ষেপ শক্তিশালী ব্যাঙ্ককে ভবিষ্যতে দুর্বল করে ফেলবে না তো?
অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রাজেন নাগর এ দিন বলেন, ‘‘আমরা শুরু থেকেই ব্যাঙ্ক সংযুক্তিকরণের বিরুদ্ধে। বড় মাপের আন্দোলনে নামবে কর্মী সংগঠন। তার কর্মসূচি তৈরি করতে ব্যাঙ্ক শিল্পের বিভিন্ন ইউনিয়ন খুব শীঘ্রই বৈঠকে বসবে।’’
অন্য দিকে, ব্যাঙ্ক সংযুক্তিকরণের এই সিদ্ধান্ত আসলে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিতে অনুৎপাদক সম্পদের সমস্যাকে ধামাচাপা দেওয়ার কৌশল বলে মন্তব্য করেছেন অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সৌম্য দত্ত। তিনি বলেন, ‘‘অনুৎপাদক সম্পদের বোঝা বাড়ার দরুন অনেক ব্যাঙ্কই লোকসানে ডুবেছে। দেউলিয়া আইনের আওতায় ঋণ খেলাপি সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে তাদের অনেকে জাতীয় কোম্পানি আইন ট্রাইবুনালে (এনসিএলটি) গিয়েছে। যাতে ওই ঋণ আদায় করা যায়। কিন্তু ট্রাইবুনাল যে সব নির্দেশ দিচ্ছে, তাতে ধারের একটা বড় অংশ ছেড়ে দিতে হচ্ছে (হেয়ার কাট) ব্যাঙ্কগুলিকে। আমাদের ধারণা অনুৎপাদক সম্পদের এই সমস্যা থেকে সাধারণ মানুষের নজর ঘোরানোই ব্যাঙ্ক মেশানোর আসল উদ্দেশ্য।’’
তবে সংযুক্তিকরণ ও তার পাশাপাশি ব্যাঙ্ক শিল্পে যে সব সংস্কারের কথা এ দিন নির্মলা ঘোষণা করেছেন, তাকে স্বাগত জানিয়েছে অ্যাসোচ্যাম। বণিকসভাটির সভাপতি বি কে গোয়েন্কা বলেন, ‘‘এই পদক্ষেপে শিল্প তো বেশি ঋণ পাবেই। সেই সঙ্গে এই পথে হেঁটে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক পরিচালনায় পেশাদারি মনোভাব আনার ব্যবস্থাও করছেন অর্থমন্ত্রী।’’
তবে ভারত চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি সীতারাম শর্মার আশঙ্কা, সংযুক্তির পদক্ষেপ শক্তিশালী ব্যাঙ্ককে দুর্বল করে দিতে পারে। তিনি বলেন, ‘‘নগদ জোগানের সমস্যার সমাধান এই পদক্ষেপ কতটা করতে পারবে, তা ভবিষ্যৎ বলবে। তা ছাড়া একটি শক্তিশালী ব্যাঙ্কের সঙ্গে একাধিক তুলনায় দুর্বল ব্যাঙ্ককে মেশানো হয়েছে। ফলে শক্তিশালী ব্যাঙ্কের স্বাস্থ্য খারাপ হওয়া নিয়ে চিন্তা থাকছেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy