অশোধিত তেলের দাম ক্রমাগত বাড়া। ডলারের নিরিখে টাকা তলানিতে পৌঁছনো। এই জোড়া কারণে চলতি খাতে বাড়ছে ঘাটতি বৃদ্ধির আশঙ্কা। সব মিলিয়ে বৃহস্পতিবার বিপুল ভাবে পড়ল শেয়ার বাজার। এ দিন ৮০৬.৪৭ পয়েন্ট খুইয়ে সেনসেক্স ৩৫,১৬৯.১৬ পয়েন্টে বন্ধ হয়। ২৫৯ পয়েন্ট পড়ে নিফ্টি থিতু হয় ১০,৫৯৯.২৫ অঙ্কে।
ডলারের নিরিখে টাকার দাম গত দিনই সর্বনিম্নে পৌঁছেছিল। এ দিনও সেই পতন অব্যাহত রয়েছে। ১ ডলারের দাম ২৪ পয়সা বেড়ে হয়েছে ৭৩.৫৮ টাকা। লেনদেনের মাঝে একটা সময়ে ডলার পৌঁছে গিয়েছিল ৭৩.৮১ টাকায়। গত তিন দিনে ডলারের দাম ১১০ পয়সা বাড়ল। আজ, শুক্রবার রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ঋণনীতি ঘোষণা করবে। তার আগে সতর্ক লগ্নিকারীরা নতুন করে শেয়ার কেনার ব্যাপারেও বিশেষ আগ্রহ দেখাননি।
তথ্যপ্রযুক্তি, গ্যাস, স্বাস্থ্য, ব্যাঙ্কিং, গাড়ি-সহ প্রায় সমস্ত ক্ষেত্রের শেয়ারই এ দিন পড়েছে। তার উপরে কেন্দ্র তেলের উৎপাদন শুল্ক কমানোর কথা ঘোষণার পর প্রায় ১২% পড়েছে তেল সংস্থাগুলির শেয়ারও। এ দিনও কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী টুইটারে কেন্দ্রকে আক্রমণ করেছেন।
আবার পতন
• বুধবারের ৫৫০ পয়েন্টের পরে বৃহস্পতিবারও সেনসেক্স পড়ল ৮০৬ অঙ্ক। ২৫৯ পয়েন্ট নেমেছে নিফ্টি। মাত্র দু’দিনেই সেনসেক্সের মোট পতন ১,৩৫৬.৯৮ পয়েন্ট।
• এই দু’দিনে বাজার থেকে মুছে গিয়েছে লগ্নিকারীদের ৫ লক্ষ কোটি টাকার শেয়ার সম্পদ।
মাথাব্যথা
• ব্যারেলে ৮৬ ডলার ছাড়িয়েছে বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম। তাই চিন্তা বাড়ছে চলতি খাতে বিদেশি মুদ্রা লেনদেনে ঘাটতি এবং রাজকোষ ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে রাখা নিয়ে।
• তল খুঁজে পাচ্ছে না টাকাও। বৃহস্পতিবার টাকার সাপেক্ষে ডলারের দর ফের বেড়েছে ২৪ পয়সা। মার্কিন মুদ্রা পৌঁছে গিয়েছে ৭৩.৫৮ টাকায়।
• টানা শেয়ার বেচছে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি। তিন দিনেই ৬,১৫২ কোটি টাকার।
• আইএল অ্যান্ড এফএসের সমস্যার বিরূপ প্রভাবও আছে।
আরও আশঙ্কা
• ঋণনীতিতে সুদ বাড়াতে পারে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। ফলে ধাক্কা খেতে পারে লগ্নি, চাহিদাও।
• আমেরিকায় সুদ বেড়ে ৩.২% হয়েছে। তাই এ দেশের বাজার থেকে পুঁজি তুলে মার্কিন ঋণপত্রে ঢালার আগ্রহ বাড়ছে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থার।
আইসিআইসিআই প্রুডেন্সিয়াল অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের ফান্ড ম্যানেজার চিন্তন হারিয়া বলেন, ‘‘তেলের দাম না কমলে শেয়ার বাজারের পক্ষে ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সুদ বাড়ালে ফের ধাক্কা খেতে পারে শেয়ার বাজার।’’
জেআরএল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেসের ডিরেক্টর অরুণ লোঢার আশঙ্কা, ‘‘কেন্দ্র তেলের উৎপাদন শুল্ক কমালেও তার কোনও ইতিবাচক প্রভাব শেয়ার বাজারে পড়া কঠিন।’’ বিএনকে ক্যাপিটাল মার্কেটসের ডিরেক্টর অজিত খান্ডেলওয়ালের বক্তব্য, ‘‘তেলের উৎপাদন শুল্ক কমানোর ফলে বাজেট ঘাটতি সামাল দেওয়া কঠিন হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy