পেন্ডুলামের মতো ওঠানামা করেছে সূচক। প্রতীকী চিত্র।
এ বছরের ভ্যালেন্টাইন দিবস ভাল কাটেনি শেয়ার বাজারের। রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে, এই আতঙ্কে ১৪ ফেব্রুয়ারি, সোমবার বিশ্ব জুড়ে ধস নেমেছিল বিভিন্ন দেশের সূচকে। ভারতের দুই সূচক সেনসেক্স এবং নিফ্টি-ও এক ধাক্কায় পড়ে যায় ৩% করে। ১৭৪৭ পয়েন্ট খুইয়ে সেনসেক্স নামে ৫৬ হাজারের ঘরে। যদিও রাশিয়া সৈন্য সরাতে শুরু করেছে, এই খবরে মঙ্গলবারই ফের তা ১৭৩৬ ওঠে। ৫৮ হাজারে পৌঁছে মুছে ফেলে আগের দিনের লোকসান। কিন্তু গুমোট ভাব দূর হয়নি। উল্টে লগ্নিকারীদের মনে চেপে বসেছে আরও অনিশ্চয়তা। যে কারণে পরের তিন দিন বাজার ছিল নড়বড়ে। অস্থিরতা প্রকট করে পেন্ডুলামের মতো ওঠানামা করেছে সূচক। ভিতরে ভিতরে যেন একটি চোরা আতঙ্কে সব সময় উদ্বিগ্ন লগ্নিকারীরা। আর সেই উদ্বেগ আর অস্থিরতা নিয়েই তাঁরা অপেক্ষা করছেন রাষ্ট্রায়ত্ত জীবন বিমা সংস্থা এলআইসি-র শেয়ার বাজারে আসার জন্য।
লগ্নিকারীদের অস্থিরতার কারণ—
রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্তে বহাল উত্তেজনা।
ইউক্রেনে হামলা করলে রাশিয়ায় নিষেধাজ্ঞা জারি হবে বলে আমেরিকার হুমকি।
সত্যি নিষেধাজ্ঞা জারি হলে তেলের জোগান ধাক্কা খাবে, এই আশঙ্কায় বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম চড়া (ব্রেন্ট ক্রুড ব্র্যারেলে ৯৩.৫৪ ডলার)। কারণ রাশিয়া তৃতীয় বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী দেশ।
তেলের গুঁতোয় মূল্যবৃদ্ধির আরও ভয়ানক রূপ নেওয়ার আশঙ্কা। এমনিতেই আমেরিকায় মূল্যবৃদ্ধির হার (৭.৫%) এখন ৪০ বছরে সর্বোচ্চ। ৩০ বছরের সর্বোচ্চ ব্রিটেনে। ভারতেও তা পেরিয়েছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের বেঁধে দেওয়া সহনসীমা (৬%)। পাঁচ রাজ্যে ভোটের পরে তেলের দাম বাড়লে তা আরও বাড়তে পারে।
মূল্যবৃদ্ধি সামলাতে চড়া হারে সুদ বৃদ্ধির সম্ভাবনা। যে বার্তা ইতিমধ্যেই দিয়েছে আমেরিকার কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক ফেডারাল রিজ়ার্ভ।
এরই মধ্যে এলআইসি তৈরি হচ্ছে বাজারে প্রথম বার শেয়ার ছেড়ে (আইপিও) অর্থ সংগ্রহের জন্য। এর আকার ৬০ হাজার কোটি টাকার আশেপাশে হতে পারে। ইসু খুলতে পারে মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে। এটিই হতে চলেছে ভারতের বৃহত্তম আইপিও। পরিচালানাধীন সম্পদের বিচারে এলআইসি দেশের সবক’টি জীবন বিমা সংস্থার তুলনায় কয়েক গুণ এগিয়ে। তাই এই শেয়ার কিনতে অনেকেই হাতের অন্যান্য শেয়ার বেচছেন। এটাও সূচকের পতনের অন্যতম কারণ। এলআইসির কথা ভেবে অন্য কিছু সংস্থা তাদের আইপিও আনার সময় পিছনোর কথাও ভাবছে।
এ বার দেখে নেব কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য, যা শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সেবির কাছে দাখিল করা খসড়া প্রসপেক্টাসে জানিয়েছে এলআইসি—
সংস্থার জন্ম, ১ সেপ্টেম্বর, ১৯৫৬।
পরিচালনাধীন সম্পদ, ৩৬.৭৬ লক্ষ কোটি টাকা।
পলিসির সংখ্যা (২০২০-২১ সালের শেষে), ৫.২৫ কোটি।
প্রিমিয়াম বাবদ আয় (২০২০-২১), ৪,০৫,৩৯৮ কোটি টাকা।
নিট মুনাফা (২০২০-২১), ২৯৭৪ কোটি টাকা।
বিমার দাবি (ক্লেম) মেটানোর অনুপাত, ৯৮.৩%।
আইপিও-র প্রস্তাব অনুযায়ী, বিক্রি হবে সংস্থায় সরকারের অংশীদারির ৫%।
ইসুর ১০% সংরক্ষিত বিমা পলিসির গ্রাহকদের জন্য। তাঁদের দামে ছাড় দেওয়া হতে পারে অনধিক ১০%।
•আবেদন করতে হলে ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে পলিসির সঙ্গে প্যান নম্বর সংযুক্ত করতে হবে। •ইসুতে আবেদন করার জন্য ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট থাকা আবশ্যিক।
(মতামত ব্যক্তিগত)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy