ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পমহলের রক্তচাপ বেড়ে গিয়েছিল বেশ কিছু দিন আগেই। যবে থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারে বেরিয়ে আমেরিকায় বিভিন্ন সংস্থার কাজ ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কাছ থেকে ‘আউটসোর্সিং’-এর বিপক্ষে গলা তুলেছিলেন। শেষ পর্যন্ত ট্রাম্পই জেতায় এ বার সেই রক্তচাপ কমানোর জন্য ওষুধ খাওয়ায় মন দিল ভারতের ১৫,০০০ কোটি ডলারের এই শিল্প।
ট্রাম্প জমানায় মার্কিন প্রশাসন তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে কাজের জন্য ভারতীয় কর্মীদের ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে আরও রক্ষণশীল ও কড়া হবে, এটা আঁচ করে এ বার তারা সে দেশে অধিগ্রহণেও গতি আনতে তৎপর। সেই সঙ্গে সেখানকার কলেজ ক্যাম্পাস থেকে আরও বেশি সংখ্যায় নিয়োগের পথে হাঁটছে তারা।
বস্তুত, ইনফোসিস, উইপ্রো, টিসিএসের মতো বড় সংস্থা বহু দিন ধরেই এইচ-১বি ভিসায় ভারত থেকে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারদের আমেরিকায় নিয়ে গিয়ে কাজ করায়। এই ভিসা সে দেশে অস্থায়ী ভাবে থাকার ছাড়পত্র। বিশেষ দক্ষতার দরকার পড়ে, এমন কাজের জন্য কর্মী নিয়ে যেতেই এর ব্যবহার করা হয়। এই ভাবে কাজ আউসোর্সিং করিয়ে খরচ অনেকখানি কমায় ওই সব সংস্থা। কারণ, মার্কিন কর্মীদের তুলনায় বেতন দিতে হয় কম।
পরিসংখ্যান বলছে, গত ২০০৫ থেকে ’১৪ পর্যন্ত ওই তিন সংস্থার নতুন এইচ-১বি কর্মীর সংখ্যা ছিল প্রায় ৮৬ হাজার। এখন আমেরিকা প্রতি বছরই ওই সংখ্যক ভিসা দেয়।
তবে গত জুলাইয়েই মার্কিন প্রতিনিধিসভায় পেশ হয়েছিল এইচ-১বি এবং এল-১ ভিসা সংক্রান্ত এক বিল। যার প্রধান লক্ষ্য ছিল, ওই দুই ভিসা মারফত বিদেশি কর্মী এনে মার্কিন মুলুকে সংস্থাগুলির নিয়োগ আটকানো। যাতে ভূমিপুত্রদের চাকরির বন্দোবস্ত আরও পাকা করা যায়। ট্রাম্পও একই যুক্তিতে আউটসোর্সিংয়ের বিপক্ষে সুর তুলেছেন। যে-কারণে আগামী দিনে মার্কিন ভিসা জমানা আরও কড়া হবে আঁচ করে মাথায় বাজ পড়ার আশঙ্কায় ভুগছে ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পমহল।
ভারতরে অন্যতম বৃহৎ তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা ইনফোসিসের চিফ অপারেটিং অফিসার প্রবীণ রাও বলেন, ‘‘সারা বিশ্বই অভিবাসনের ব্যাপারে রক্ষণশীল। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক ভাবে দক্ষ কাজের জন্য সাময়িক ভাবে কর্মীদের নিয়ে যাওয়ার সঙ্গে অনেকে অভিবাসনকে গুলিয়ে ফেলছেন। এটা বোঝানো যাচ্ছে না, এই সব কর্মীকে কিছু দিনের জন্য বিদেশে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বরাবর থাকার জন্য নয়।’’