Advertisement
E-Paper

ঝাড়খণ্ডের খনি থেকে ফের কয়লা তুলবে বিদ্যুৎ নিগম

আগামী গ্রীষ্মের আগেই ঝাড়খণ্ডের পাচোয়াড়া (উত্তর) খনি থেকে কয়লা তোলা শুরু করে দিতে চায় পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম। দেশ জুড়ে খনি বণ্টন বাতিল প্রক্রিয়ার মধ্যে পড়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ওই খনি থেকে কয়লা তোলা বন্ধ হয়ে যায়।

পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৫ ০২:১০

আগামী গ্রীষ্মের আগেই ঝাড়খণ্ডের পাচোয়াড়া (উত্তর) খনি থেকে কয়লা তোলা শুরু করে দিতে চায় পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম। দেশ জুড়ে খনি বণ্টন বাতিল প্রক্রিয়ার মধ্যে পড়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ওই খনি থেকে কয়লা তোলা বন্ধ হয়ে যায়। পরে অবশ্য সেই আইনি জট কেটে ওই খনি ফের নিগমের হাতে এসেছে। জানুয়ারি মাসের মধ্যেই কয়লা তোলার জন্য নতুন সংস্থা বাছাইয়ের কাজ শেষ করে ফেলতে চাইছে নিগম, যাতে মার্চ মাস থেকেই কয়লা তোলা শুরু করা যেতে পারে। কারণ এপ্রিল থেকে গরম বাড়লে রাজ্যে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়বে। তা মেটাতে পাচোয়াড়ার কয়লা রাজ্যের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে প্রয়োজন হবে।

নিগমের হাতে এখন যে-কয়েকটি খনি রয়েছে, তার মধ্যে পাচোয়াড়ায় সব থেকে বেশি কয়লা মজুত আছে, প্রায় ৫০ কোটি টন। আগামী ৫০ বছর ওই খনিটি থেকে কয়লা পাওয়া যাবে। যে-কারণে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সেখানে কয়লা তোলা শুরুর ব্যাপারে জোর দিচ্ছেন নিগম কতৃর্পক্ষ। দরপত্র পরীক্ষা করে ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসের মধ্যে ‘মাইনিং ডেভেলপার অ্যান্ড অপারেটর’ বা এমডিও ঠিক করবেন নিগম কর্তারা।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের এক কর্তা জানাচ্ছেন, পাচোয়াড়ার পাশাপাশি বড়জো়ড়া (উত্তর) ও ট্রান্স-দামোদর খনি থেকেও ওই সময়ের মধ্যে কয়লা তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বড়-ছোট মিলিয়ে আপাতত ৩টি খনিতে কাজ শুরু হলে কয়লার ঘাটতি অনেকটাই কমবে বলে দাবি তাঁর।

এই তিনটি খনি ছাড়া, নিগমের হাতে তারা (পূর্ব-পশ্চিম), বড়জোড়া ও গঙ্গারামচক-ভাদুলিয়া নামে আরও তিনটি খনি রয়েছে। একই কারণে ওই খনিগুলি থেকেও কয়লা তোলা বন্ধ রয়েছে। পরের তিনটি খনির জন্যও দরপত্র ডাকার পদ্ধতিগত কাজ শুরু হয়েছে। রাজ্যের যুক্তি হচ্ছে, ২০১১-’১২ সালের পর থেকে কোল ইন্ডিয়ার কয়লার দাম ৪০-৪৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। সেখানে নিজেদের খনির কয়লা অনেকটাই সস্তায় পাওয়া যায়। তাই যত তাড়াতাড়ি কয়লা তোলা সম্ভব হবে, আর্থিক দিক থেকে নিগমের কিছুটা সুরাহা হবে।

রাজ্যের বিদ্যুৎ সচিব গোপালকৃষ্ণ বলেন, ‘‘মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে নতুন দু’টি ইউনিটের উৎপাদন শুরু হবে। ফলে সাগরদিঘিতে আগের তুলনায় অনেক বেশি কয়লা লাগবে। পাচোয়াড়ার কয়লা আমরা সাগরদিঘিতে পাঠাব।’’ বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রেও অনেক সময়ে কয়লা জোগানোয় সমস্যা হয়, পাচোয়াড়ার কয়লা সেখানেও যাবে বলে সচিব জানান।

নিগমের পাঁচটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বছরে এক কোটি টনের মতো কয়লা লাগে, যার মধ্যে ৭৫ শতাংশ জোগান দেয় কোল ইন্ডিয়া। বাকি কয়লা নিগমের এই খনিগুলি থেকে আসত। গত বছর খনি বণ্টন নীতি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ওই খনিগুলি নিগমের হাতছাড়া হয়ে যায়। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ছিল, নতুন এমডিও ঠিক না-করা পর্যন্ত কোনও খনি থেকে কয়লা তোলা যাবে না। তাই কোল ইন্ডিয়ার কয়লার উপরেই এখন নিগমকে নির্ভর করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হচ্ছে। এ বছর মার্চ মাসের পর থেকে নিগমের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে কয়লার সঙ্কটও চলছে। কারণ এক দিকে নিজেদের খনির কয়লা নেই। অন্য দিকে, নগদ টাকা না-দিলে কোল ইন্ডিয়ার কয়লা পাওয়া যায় না। নিগম তাই চাইছে, দ্রুত এমডিও ঠিক করে খনিগুলির ভার তার হাতে তুলে দিতে।

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy