Advertisement
E-Paper

রক্ষাকবচ

চিকিৎসার খরচ না হয় স্বাস্থ্য বিমা জোগাবে। কিন্তু জটিল অসুখে মাসের পর মাস বিছানাবন্দি হয়ে থাকার সময় কে মেটাবে সন্তানের স্কুলের বেতন? বাড়ির ইএমআই আসবে কোথা থেকে? প্রতি মাসে কড়া নাড়া হাজারো খরচের কোনওটা বন্ধ হবে কি? জটিল অসুখে যেন আপনার সংসারের নটে গাছটি না মুড়োয়। লিখছেন  আদিল শেট্টিবাড়ির ইএমআই আসবে কোথা থেকে? প্রতি মাসে কড়া নাড়া হাজারো খরচের কোনওটা বন্ধ হবে কি?

শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০১৮ ০০:০৮

জীবন সুন্দর। কিন্তু বেশ অনিশ্চিতও। বিশেষ করে শরীরে যদি বাসা বাঁধে রোগভোগ। তখন বাড়তে থাকা চিকিৎসার খরচ মেটাতে চোখের পলকে ছোট হয়ে আসে জমানো পুঁজি। যে কারণে ভয়ের চোটে আগেভাগে স্বাস্থ্য বিমার ঢাল তৈরি রাখেন অনেকে। কিন্তু ধরুন সংসারের একমাত্র রোজগেরে ব্যক্তিই ভয়ঙ্কর জটিল কোনও অসুখে পড়লেন এবং হাসপাতালে থাকতে হল বহু দিন। তিনি শয্যাশায়ী থাকায় বাধ্য হয়ে আয়ের চাকাটাও থামবে সাময়িক ভাবে। তখন লড়াইটা চলবে কি করে? হাসপাতাল, চিকিৎসার খরচ না হয় সামলানো গেল। কিন্তু ছেলে-মেয়ের পড়াশোনা, বাড়ি ভাড়া বা ইএমআইয়ের মতো প্রতি মাসের খরচগুলো বইবে কে? স্বাস্থ্য বিমার কাজ তো পরিবারের হাজারটা আর্থিক প্রয়োজনের সুরাহা করা নয়।

এখানেই জরুরি হয়ে পড়ে স্বাস্থ্য বিমার উপরে আরও একটা বাড়তি বর্ম। নাম জটিল রোগের চিকিৎসা বিমা বা ক্রিটিক্যাল ইলনেস ইনশিওরেন্স। বহু অনিশ্চয়তার বোঝা মাথায় নিয়েও যা সুড়ঙ্গের শেষে আলোর রেশটুকু মুছতে দেয় না। রোগ যত জটিলই হোক, চোখে চোখ রেখে লড়াই করার জোরও দেয়। হারলে হারবেন, কিন্তু এক ইঞ্চি জমি ছাড়ার প্রশ্ন নেই। চলুন আজ বসি এই বাড়তি বর্মের জোর মাপতে।

কেন করবেন?

হালে স্বাস্থ্য বিমা সম্পর্কে কিছুটা হলেও সচেতনতা এসেছে। যে ভাবে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে এবং আগুন হচ্ছে চিকিৎসার খরচ, তাতে বড় অঙ্কের স্বাস্থ্য বিমা না থাকার বিপদ বুঝতে পারছেন অনেকে। ফলে আগেভাগেই সতর্ক হয়ে পা ফেলছেন তাঁরা। ঝুঁকছেন বিমা খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর দিকে। এই অংশ প্রশ্ন তুলতে পারেন, তা হলে আরও এক দফা প্রিমিয়াম গুনে ফের একটি চিকিৎসা বিমা করতে হবে কেন? আমি বলব করতে হবে, কারণ জটিল রোগের চিকিৎসা বিমা আর স্বাস্থ্য বিমা, দু’টির মধ্যে বিস্তর ফারাক। প্রয়োজনের যে জায়গা থেকে এ দু’টিকে কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তা সম্পূর্ণ ভিন্ন। যে সমস্যার ঢাল হিসেবে ক্রিটিক্যাল ইলনেস ইনশিওরেন্স করা হয়, তা সাধারণ মেডিক্লেমে মেটানোর সুযোগও নেই। ফারাকের এই জায়গাটা বুঝলেই পেয়ে যাবেন প্রশ্নের জবাব।

সাধারণ স্বাস্থ্য বিমা

• রোগী হাসপাতালে ভর্তি হলে ডাক্তার, ওষুধ-সহ তাঁর চিকিৎসার খরচ, সেখানকার বিল ইত্যাদি মেটানো হয় এই বিমার টাকা দিয়ে।

• নগদহীন চিকিৎসার (ক্যাশলেস) সুযোগ নিলে তো কথাই নেই। হাসপাতালের বিল সরাসরি মিটিয়ে দেয় সংশ্লিষ্ট বিমা সংস্থাটিই।

• তা না হলে পরে ক্লেম-এর টাকা দাবি করতে হয় ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন, রোগ নির্ণয়, চিকিৎসা ও হাসপাতালে ভর্তি এবং ছাড়া পাওয়ার তথ্যপ্রমাণ দাখিল করে।

• এমনকি ক্যানসারের মতো কিছু কিছু রোগে হাসপাতালে ভর্তির আগে ডাক্তার দেখানো, পরীক্ষা-নিরীক্ষার খরচ এবং সেখান থেকে ছাড়া পাওয়ার পরে ডাক্তার দেখানো ও এক দিনে হয়, এমন কিছু চিকিৎসার খরচও (ডে-কেয়ার) বিমার আওতায় দাবি করা যায় বহু প্রকল্পে।

জটিল রোগের চিকিৎসা বিমা

• এই বিমার পরিসর অনেক বেশি ছড়ানো। কারণ বড় মাপের আর্থিক দায়বদ্ধতা পালনই এর কাজ।

• নির্দিষ্ট কিছুটা সময়ের জন্য অসুস্থ ব্যক্তির আয়ের বিকল্প বলা যায়।

• চিকিৎসা থেকে শুরু করে বিদ্যুৎ, টেলিফোন ইত্যাদির বিল, ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা, বাড়ি ভাড়া, ইএমআই-সহ সংসারের বিভিন্ন খরচ মেটানো যায় এর টাকায়।

• যে জটিল রোগের জন্য বিমাটি করা হয়েছে, তা ধরা পড়ার পরেই বিমার টাকা হাতে পাওয়া যায়।

• সংশ্লিষ্ট সংস্থা একলপ্তে পুরো টাকা মিটিয়ে দেয় বিমাকারীর শরীরে রোগটির বাসা বাঁধা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে।

কোন অসুখে

কী কী অসুখের ক্ষেত্রে ক্রিটিক্যাল ইলনেস ইনশিওরেন্স করার সুযোগ পাওয়া যাবে, তার তালিকা বিভিন্ন বিমা সংস্থার ক্ষেত্রে আলাদা আলাদা হতে পারে। তবে সাধারণ ভাবে যে সমস্ত রোগ ও চিকিৎসা এর আওতায় পড়ে, তার মধ্যে অন্যতম ক্যানসার, কিডনি নষ্ট, স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক, বাইপাস সার্জারি, কিডনি বা অন্য কোনও অঙ্গ প্রতিস্থাপন ইত্যাদি।

প্রয়োজন কখন?

পরিবারের যে কোনও সদস্যের শরীর বিকল হলেই জীবনের স্বাভাবিক ছন্দ নষ্ট হয়। তেমন বড় রোগ হলে ডাক্তার, চিকিৎসা, হাসপাতালের খরচ সামলাতে সব সঞ্চয় ফুরিয়ে যাবে কি না, পেয়ে বসে সেই চিন্তা। কিন্তু রোগী যদি পরিবারের মূল বা একমাত্র রোজগেরে হন? আর রোগ যদি ক্যানসার, স্ট্রোক, কিডনি খারাপের মতো কোনও কঠিন ও জটিল কিছু হয়? সংসারটাই থমকে যাবে তখন।

এক মাস, এমনকি এক বছরের জন্য তিনি বাধ্য হতে পারেন সব কাজকর্ম বন্ধ করে রাখতে। দীর্ঘ দিন ধরে চলবে চিকিৎসা। হয়তো হাসপাতালে থাকতে হবে অনেকটা সময়। অন্য কেউ রোজগেরে না হলে, তত দিন পরিবারে আয়ের কোনও উৎস থাকছে না। টাকা-পয়সার জোগান যাচ্ছে থেমে। তখন খাওয়া-পরা সমেত রোজকারের প্রয়োজনীয় খরচ আসবে কোথা থেকে? কে দেবে সন্তানের পড়াশোনা, বাড়ি ভাড়া বা হাজারো বিল মেটানোর টাকা?

এই সময়ই ডাক পড়ে ক্রিটিকাল ইলনেস ইনশিওরেন্সের। জটিল রোগের দরুন যে আয় হারাচ্ছেন রোগী, বিকল্প হিসেবে কিছু দিনের জন্য তা পূরণ করে দিতে।

অপেক্ষা জরুরি

এই ধরনের প্রতিটি বিমায় ‘ওয়েটিং পিরিয়ড’ বা অপেক্ষার সময় থাকে। যা ধরা হয় বিমা প্রকল্পটি কেনা ও জটিল রোগ ধরার পড়ার মধ্যেকার অংশটুকুকে। নির্দিষ্ট করা থাকে ‘সারভাইভাল পিরিয়ড’ বা বেঁচে থাকার সময়ও। এটা হল রোগ ধরা পড়ার পরে বিমাকারী কত দিন বেঁচে থাকছেন, সেই সংখ্যা। সাধারণত অসুখ ধরা পড়ার পরে রোগী যদি ৯০ দিন বেঁচে থাকেন, তবেই বিমার টাকা দাবি করা যায়।

পাল্লায় প্রয়োজন

জটিল রোগের চিকিৎসা বিমা করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন ওঠে তার অঙ্ক নিয়ে। কত টাকার বিমা করলে চিকিৎসা থেকে সংসার— সব প্রয়োজনের ক্ষেত্রেই অন্তত কিছুটা সময়ের জন্য নিশ্চিন্ত থাকা যাবে? এর জবাব অবশ্য এক এক জনের ক্ষেত্রে এক এক রকমের হবে। কারণ জীবনযাত্রার মান, স্বাচ্ছন্দ্য সকলের সমান নয়। সেই অনুযায়ী প্রয়োজনগুলোও হয় আলাদা আলাদা। বরং যে সব বিষয়ের ভিত্তিতে বিমামূল্য স্থির করা উচিত, সেটা মাথায় রাখলে ভাল হয়। এগুলি হল—

• বন্ধক রেখে নেওয়া ধার শোধের কিস্তি, যে কোনও ঋণের ইএমআই, বাড়ি বা ফ্ল্যাট ভাড়া, টেলিফোন, বিদ্যুতের বিল, সন্তানের পড়াশোনা ইত্যাদি খাতে প্রয়োজনীয় খরচ। অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে থাকার সময় বা শয্যাশায়ী থাকলেও যে সব খরচ এড়িয়ে যাওয়ার কোনও উপায় থাকে না।

• জিনিসপত্রের দাম কী হারে বাড়ছে।

• জীবনযাপনের মান কেমন।

• বার্ষিক রোজগারের পরিমাণ কত। সাধারণ ভাবে বিমামূল্য হওয়া উচিত বার্ষিক আয়ের ৪ থেকে ৫ গুণ।

• তবে অবশ্যই নিজের আর্থিক বাজেটের কথাও মাথায় রাখতে হবে। সাধ্যের বাইরে গিয়ে খরচ করে মাথাব্যথা বাড়ানোর যুক্তি নেই।

মাথায় রাখুন

বিমার তহবিল তো বটেই, প্রকল্প বাছার আগে আরও যে বিষয়গুলি মাথায় রেখে ও খতিয়ে দেখে এগোনো উচিত, তার মধ্যে রয়েছে—

• কোন ধরনের জটিল রোগে ভোগার প্রবণতা রয়েছে বিমাকারীর। তেমন কিছুর ইঙ্গিত মিলেছে কি কখনও?

• পারিবারিক ইতিহাসে আত্মীয় পরিজনদের কী ধরনের অসুখে ভুগতে দেখা গিয়েছে বেশি?

• শরীরের এক একটি অঙ্গের জন্য এক একটি রোগের সুরক্ষাকবচ নিশ্চিত করার তুলনায়, শরীরের বিভিন্ন অঙ্গকে একটি রোগের হাত থেকে বাঁচানোর লক্ষ্য নিয়ে প্রকল্প কিনলে ভাল হয়।

• নো ক্লেম বা রিনিউয়াল বোনাসের সুবিধা।

• চাইলে প্রকল্পে টপ আপের পথে হাঁটা যাবে কিনা।

• বদলাতে থাকা প্রয়োজনের সঙ্গে পাল্লা দিতে সময়ে সময়ে বিমামূল্য বাড়ানোর সুবিধা পাওয়া যাবে তো! কারণ, একে তো বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্রমশ কমতে থাকে শরীরের জোর। রোগে ভোগার ঝুঁকি বেড়ে যায়। অথচ একেবারে উল্টো পথে হেঁটে মূল্যবৃদ্ধির দৈত্যের কবলে পড়ে জমা পুঁজির মূল্য ছোট হতে থাকে।

প্রকল্প না রাইডার?

ক্রিটিক্যাল ইলনেস ইনশিওরেন্সকে কিন্তু কখনওই স্বাস্থ্য বিমার বিকল্প বলা যায় না। কারণ দু’টির কাজ আলাদা। এটি কেনা যায় একেবারে আলাদা একটি বিমা হিসেবে অথবা জীবনবিমা বা সাধারণ স্বাস্থ্য বিমার রাইডার হিসেবে। দু’টিরই ভাল-মন্দ আছে। যেমন—

• এই বিমা জীবন বা স্বাস্থ্য বিমার রাইডার হিসেবে কিনলে প্রিমিয়াম সামাল দেওয়ার বিষয়টি তুলনায় সহজ হতে পারে।

• তবে রাইডারের ক্ষেত্রে বিমামূল্যের পরিমাণ বা তার মেয়াদ কত হবে, সেটা উপর প্রয়োজন মেপে নিয়ন্ত্রণের সুযোগ কম থাকে।

• আলাদা প্রকল্প হলে বিমামূল্য কত হবে তা নির্ণয় করার ক্ষেত্রে বেশি স্বাধীনতা পাওয়া যায়। বিষয়টি তুলনায় বেশি সুবিধাজনকও। সময় সময় বিমার তহবিল বাড়ানো সহজ।

• রাইডারের তুলনায় আলাদা প্রকল্পে বিমামূল্যের অঙ্ক অনেক বেশি হওয়ার সুযোগ থাকে।

লেখক: ব্যাঙ্কবাজারের সিইও

(মতামত ব্যক্তিগত)

পাঠকের প্রশ্ন?

প্রঃ নিউ টাউনে জি প্লাস ফোর কো-অপরেটিভ আবাসন তৈরির জন্য হিডকোর থেকে একটি জমি পেয়েছিলাম। জিএসটি চালুর আগে এক বিল্ডারকে ফ্ল্যাট তৈরির বরাত দেওয়া হয়। কিন্তু নির্মাণ শুরু হয় জিএসটি রূপায়ণের পরে। এখন ডেভেলপার মোট চুক্তিমূল্যের উপর ১২% জিএসটি দাবি করছেন। এই কর চাপলে মোট খরচ এক লাফে ১৬-১৭ লক্ষ টাকা বেড়ে যাবে। এ ক্ষেত্রে আমাদের কি জিএসটি দিতে হবে? দিলে তার হিসেব কী? কো-অপরেটিভের প্রত্যক সদস্য যখন ফ্ল্যাটের রেজিস্ট্রেশন করবেন, তখনও কি জিএসটি গুনতে হবে?

বিমল সাহা, কলকাতা

আপনাদের ডেভেলপার জিএসটি-র যে দাবি জানিয়েছেন, সেটা ঠিক। এমনিতে সিঙ্গল ইউনিট বাড়ি তৈরি করালে এই কর লাগে না। কিন্তু আপনারা ডেভেলপারের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে একাধিক ফ্ল্যাট তৈরি করাচ্ছেন। তাই জিএসটি দিতে হবে। তবে ডেভেলপারকে চুক্তির অঙ্ক কমাতে বলতে পারেন। কারণ তিনি নতুন করের আওতায় সিমেন্ট, ইস্পাত-সহ ফ্ল্যাট তৈরির বিভিন্ন কাঁচামাল খাতে মেটানো কর ফেরতের (ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিট) সুবিধা পাবেন। যেখানে আগের জমানার নিয়ম অনুযায়ী তাঁকে নিজের পকেট থেকে কাঁচামালের করের টাকা বার করতে হত। আর যেহেতু জিএসটি চালুর আগেই আপনারা ডেভেলপারকে ফ্ল্যাট তৈরির বরাত দিয়েছিলেন, ফলে তখন তিনি যে দামে চুক্তি করেন তার মধ্যে কাঁচামালের কর সমেত দামও ধরা ছিল। তাই এখন ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিটের সুবিধা আসায় কাঁচামাল খাতে নির্মাতার অনেক টাকা বাঁচবে। চুক্তির অঙ্ক কিছুটা কমিয়ে এই সুবিধা তাঁর ফ্ল্যাটের ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া উচিত। কেন্দ্রীয় জিএসটি আইনের ১৭১ নম্বর ধারা এবং অ্যান্টি প্রফিটিয়ারিং বিধি বলছে, সেই সুবিধা দেওয়া তাঁর কর্তব্যের মধ্যে পড়ে।

পরামর্শদাতা:

তিমির বরণ চট্টোপাধ্যায়

পরামর্শের জন্য লিখুন:

‘বিষয়’, ব্যবসা বিভাগ,

আনন্দবাজার পত্রিকা,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা, পিন-৭০০০০১।

ই-মেল: bishoy@abp.in

ঠিকানা ও ফোন নম্বর জানাতে ভুলবেন না

Insurance Health insurance
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy