অস্বস্তিকর গ্রীষ্মের মরসুমে এ বার সম্ভবত লোডশেডিংয়ের কবল থেকে কিছুটা রেহাই মিলবে দেশের সর্বত্রই। কারণ, কয়লার অভাবে আর ধুঁকতে হবে না বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিকে। অন্তত সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে সরকারি পরিসংখ্যান। আর, এর জন্য নরেন্দ্র মোদী সরকারের নীতিকেই বাহবা দিচ্ছে সংশ্লিষ্ট শিল্পমহল।
অক্টোবরেই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে কয়লার সরবরাহ নেমে গিয়েছিল ছ’বছরের মধ্যে সবচেয়ে নীচে। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে এই মুহূর্তে তা গত বছরের তুলনায় বেড়েছে ৩৮ শতাংশ, যার ফলে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে এই মুহূর্তে মজুত কয়লার পরিমাণ ২ কোটি ৮০ লক্ষ টন। পাশাপাশি, রাষ্ট্রায়ত্ত কোল ইন্ডিয়ার বিভিন্ন খনি মুখে ৫ কোটি ৩০ লক্ষ টন কয়লা মজুত রয়েছে বলে সংস্থা সূত্রের খবর। জুনে বর্ষার মরসুম শুরুর আগেই তা বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলির দরজায় পৌঁছবে।
কোল ইন্ডিয়ার উৎপাদনও ৩ কোটি ২০ লক্ষ টন বেড়ে গত ২০১৪-’১৫ সালে দাঁড়িয়েছে ৪৯ কোটি ৪২ লক্ষ টন। চার দশকের ইতিহাসে উৎপাদন কখনও এতটা বাড়েনি বলে জানান সংস্থার চেয়ারম্যান সুতীর্থ ভট্টাচার্য। চলতি ২০১৫-’১৬ অর্থবর্ষে তা দাঁড়াবে ৫৫ কোটি টন, ২০১৯-’২০ সালে ১০০ কোটি টন। নিজস্ব উৎপাদন বাড়ার ফলে চলতি আর্থিক বছরেই ভারত তার কয়লা আমদানিও ২০% কমিয়ে আনতে পারবে। এ ক্ষেত্রে তৃতীয় স্থানে থাকা ভারত গত বছর ২০ কোটি টন কয়লা আমদানি করে। বিদ্যুৎ সংস্থাগুলিকেও প্রয়োজনের ১৫% মেটাতে হয় আমদানি থেকে।
কয়লা জোগানের সমস্যা কেটে যাওয়ার জন্য মোদী সরকারকেই সাধুবাদ দিচ্ছে সংশ্লিষ্ট শিল্পমহল। আসলে, মোদী তাঁর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতেই ২০১৯ সালের মধ্যে সকলের ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার কথা বলেছিলেন। ক্ষমতায় আসার এক বছরের মাথায় সেই লক্ষ্য পূরণে তিনি ও কয়লামন্ত্রী পীযূষ গয়াল অবিচল বলেই মনে করছে শিল্পমহল। মোদী সরকারের যে-সমস্ত পদক্ষেপের জন্য তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি কয়লার পর্যাপ্ত জোগান পেয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে, তার মধ্যে রয়েছে:
• বিভিন্ন বিদ্যুৎ সংস্থাকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কয়লা খনি বণ্টন
• উৎপাদনের লক্ষ্য বেঁধে দেওয়া
• বিক্রিতে বিধিনিষেধ কমিয়ে আনা
বিক্রি নিয়ে অহেতুক কড়াকড়ির জেরেই সরবরাহ থমকে গিয়েছিল ঝাড়খণ্ডের আম্রপালি খনি থেকে। রেল সংযোগ না-থাকায় প্রায় ১০ বছর ধরে প্রত্যন্ত অঞ্চলের এই খনি থেকে কোনও কয়লাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে পাঠানো
যাচ্ছিল না। এই প্রথম সব নজির ভেঙে কোল ইন্ডিয়া বিদ্যুৎ সংস্থাকে এই খনি থেকে সরাসরি ট্রাকে কয়লা কিনে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে। এর জন্য দীর্ঘ মেয়াদি সরবরাহ চুক্তিতে সই করারও দরকার হচ্ছে না। এ ধরনের স্বচ্ছ নীতিই গ্রামে গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার পুরনো স্লোগানকে বাস্তব রূপ দেবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy