Advertisement
E-Paper

বন্ধ থেকে ভাল বাজারে সুযোগ খোয়াচ্ছে হলদিয়া পেট্রোকেম

আজ দু’সপ্তাহেরও বেশি বন্ধ হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালসের কারখানা। গত ৬ জুলাই যার ঝাঁপ পড়েছিল ন্যাপথা ক্র্যাকার প্লান্টে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে। এ মাসের শেষ নাগাদ কারখানা ফের চালু হওয়ার সম্ভাবনার কথা আপাতত ঘুরছে হলদিয়ায়। কিন্তু এ বিষয়ে কোনও সরকারি সমর্থন মেলেনি। শিল্পমন্ত্রী অমিত মিত্র এবং সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর উত্তম কুমার বসুকে এসএমএস করা হলে, উত্তর মেলেনি তাঁদের কাছ থেকেও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৪ ০৩:০২

আজ দু’সপ্তাহেরও বেশি বন্ধ হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালসের কারখানা। গত ৬ জুলাই যার ঝাঁপ পড়েছিল ন্যাপথা ক্র্যাকার প্লান্টে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে। এ মাসের শেষ নাগাদ কারখানা ফের চালু হওয়ার সম্ভাবনার কথা আপাতত ঘুরছে হলদিয়ায়। কিন্তু এ বিষয়ে কোনও সরকারি সমর্থন মেলেনি। শিল্পমন্ত্রী অমিত মিত্র এবং সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর উত্তম কুমার বসুকে এসএমএস করা হলে, উত্তর মেলেনি তাঁদের কাছ থেকেও। ফলে রাজ্যের শিল্প মানচিত্রে অন্যতম ‘শো-পিস’ হয়ে ওঠার প্রতিশ্রুতি নিয়ে পথ চলতে শুরু করা পেট্রোকেমের দরজা কবে খুলবে, তা নিয়ে কোনও স্পষ্ট উত্তর এখনও নেই। ঝুলে রয়েছে প্রশ্নচিহ্ন।

পেট্রোকেমের প্রধান কাঁচামাল ন্যাপথার দর বিশ্ব বাজারে এই মূহূর্তে পড়তির দিকে। একই সঙ্গে, পেট্রোকেমে উৎপাদিত পণ্যের বাজারও এখন বেশ ভাল। এই দাবির সমর্থন মিলছে পেট্রো-রসায়ন সংক্রান্ত মার্কিন বাণিজ্য পত্রিকা আর্গাস ডিউইটেও। তাই সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, এই ভাল সময়ের সুযোগ নিতে মূল ত্রুটিটুকু তাড়াতাড়ি সারিয়ে কারখানা খুলতে পারত পেট্রোকেম। তাতে হাতে কিছুটা নগদ আসত আর্থিক সঙ্কটে ভোগা সংস্থাটির।

কিন্তু সংস্থা সূত্রে খবর, সেই পথেও অন্যতম বাধা কার্যকরী মূলধনের অভাব। কারণ, বন্ধ হওয়ার আগে প্রতি ঘণ্টায় টেনেটুনে ১১০-১২০ টন ন্যাপথা ব্যবহৃত হচ্ছিল পেট্রোকেমের কারখানায়। কিন্তু নগদ লাভের মুখ দেখতে ওই পরিমাণ হতে হবে অন্তত ১৮০ টন। অথচ এই বাড়তি কাঁচামাল কিনতে যে- টাকা (কার্যকরী মূলধন) প্রয়োজন, তা পেট্রোকেমের নেই। মালিকানা-সমস্যা না-মেটা পর্যন্ত ওই টাকা ধার দিতেও রাজি নয় ঋণদাতা সংস্থাগুলি। এবং এই সমস্ত সমস্যা কাটিয়ে পেট্রোকেমের কারখানা অন্তত চলতি মাসের মধ্যে খুলবে কি না, তার কোনও সরকারি বয়ান এ দিন পর্যন্ত মেলেনি।

সংস্থা হিসেবে হলদিয়া পেট্রোকেমের পথ চলা শুরুই হয়েছিল ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জোগানদার হিসেবে। লক্ষ্য ছিল, পেট্রোকেমে উৎপাদিত পণ্য মূলত ব্যবহৃত হবে ছোট ও মাঝারি প্লাস্টিক শিল্পের কাঁচামাল হিসেবে। যা দিয়ে বালতি থেকে কলমের রিফিল অনেক কিছুই তৈরি করতে পারবে তারা। ফলে রাজ্য যখন ছোট-মাঝারি শিল্প গড়ে তোলার উপর জোর দিচ্ছে, তখন পেট্রোকেমের মালিকানা সংক্রান্ত সমাধানসূত্র দ্রুত বার করা যে একান্ত জরুরি, তা নিয়ে কোনও দ্বিমত নেই শিল্পমহলের অন্দরে।

প্রতি ঘণ্টায় ২৬০ টন ন্যাপথা চূর্ণ করার ক্ষমতা রাখে পেট্রোকেমের ক্র্যাকার। কিন্তু বন্ধের আগে সেখানে ন্যাপথা ব্যবহৃত হচ্ছিল বড়জোর ১১০-১২০ টন। ১১০ হোক বা ১৮০ টন ক্র্যাকারে তা চূর্ণ করার অন্যান্য খরচ প্রায় একই। বাড়তি বলতে শুধু ওই ৭০ টন ন্যাপথার দাম। ফলে তা জুগিয়ে ক্র্যাকারকে ঘণ্টা পিছু অন্তত ১৮০ টন ন্যাপথা জোগাতে পারলে, তবে উৎপাদন খরচে পড়তা পড়ে। সম্ভব হয় নগদ লাভের মুখ দেখা। কিন্তু প্রশ্ন হল, বন্ধের আগে যেখানে ঘণ্টায় ১১০-১২০ টন ন্যাপথা জোগাতেই পেট্রোকেম হিমসিম খাচ্ছিল, সেখানে ১৮০ টনের খরচ তারা জোগাবে কোথা থেকে? বিশেষত মালিকানা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে যেখানে তাদের নতুন করে আর ধার দিতে রাজি নয় ব্যাঙ্কগুলি।

পেট্রোকেমে তৈরি পণ্যের বাজার মোটামুটি চার বছর অন্তর ওঠে-পড়ে। আর এখন সেই বাজার উঠতির দিকে। অর্থাৎ, চাহিদা চড়া। ফলে তার সুযোগ নিতে অন্তত কাঁচামাল কেনার টাকা সংস্থানের স্বার্থেই মালিকানা সমস্যা দ্রুত মেটানো জরুরি বলে মনে করছেন অনেকে।

শুধু তা-ই নয়। পেট্রোকেমের পণ্যের উপর নির্ভর করে তার শতাধিক অনুসারী শিল্প। ফলে পেট্রোকেম যত বেশি দিন বন্ধ থাকবে, তা ফের চালুর খরচ তো তত বাড়বেই। সেই সঙ্গে উত্তরোত্তর সমস্যা বাড়বে অনুসারী শিল্পগুলিরও।

haldia petrochem naptha cracker plant uttam kumar basu
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy