Advertisement
E-Paper

বিমায় নতুন

সকালে উঠে নিয়ম করে হাঁটছেন? গাড়ি চালানোর সময়ে মানছেন রাস্তার সমস্ত নিয়মকানুন? এখন এই সব ভাল অভ্যেসই আপনার সামনে খুলে দিতে পারে বিমায় প্রিমিয়ামে গাঁটের কড়ি বাঁচানোর নতুন রাস্তা! সাধারণ বিমার জগতের নতুন প্রকল্পের কথা জানাচ্ছেন প্রজ্ঞানন্দ চৌধুরীআজ এ সব অন্য ধরনের বিমা নিয়েই আলোচনায় বসব আমরা। দেখে নেব, নতুন যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রথাগত সাধারণ বিমার মধ্যে বাড়তি কী কী সুবিধা দিচ্ছে সংস্থাগুলি।

শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০১৮ ০৬:৩০

বহু দিনের শখ মিটিয়ে, অনেক বেছে একখানা গাড়ি কিনেছেন। প্রতি বছর নিয়ম করে তার জন্য বিমার টাকাও গোনেন। কিন্তু জানেন কি, নিয়ম মেনে গাড়ি চালালে, কমতে পারে আপনার প্রিমিয়াম খরচ? নিয়মিত শরীরচর্চা করলে, একই কথা খাটে স্বাস্থ্য বিমার ক্ষেত্রেও! আবার মোবাইল বা কম্পিউটারের মতো যন্ত্রের জন্যও বিমা করানোর সুবিধা দিচ্ছে বেশ কিছু সংস্থা। আসার কথা রয়েছে সাইবার বিমাও। যার আওতায় ক্রেডিট-ডেবিট কার্ড থেকে টাকা চুরির মতো ঘটনার ক্ষেত্রে বিমার সুরক্ষা মিলবে।

আজ এ সব অন্য ধরনের বিমা নিয়েই আলোচনায় বসব আমরা। দেখে নেব, নতুন যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রথাগত সাধারণ বিমার মধ্যে বাড়তি কী কী সুবিধা দিচ্ছে সংস্থাগুলি। ঠিকমতো বেছে নিতে পারলে, যা শুধু আপনাকে চিন্তামুক্তই করবে না, পকেটও বেশি হাল্কা হওয়া থেকে বাঁচাবে।

স্বাস্থ্য বিমা

চিকিৎসার খরচের কথা মাথায় রেখে আজকাল স্বাস্থ্য বিমা না কিনে উপায় নেই। সাধারণত, ভর্তি হয়ে চিকিৎসা করাতে হলে তার টাকা পাওয়া যায় এই বিমার আওতায়। এই ব্যবস্থায় প্রতি বছর নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা বিমা সংস্থাকে দেবেন আপনি। পরিবর্তে আপনার চিকিৎসা খরচের দায় (প্রিমিয়ামের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট অঙ্ক পর্যন্ত) নেবে তারা। ধরুন আপনি এক বছরে ২ লক্ষ টাকা বিমার জন্য ৩ হাজার টাকা দিলেন। এ বার জমার দিন থেকে এক বছরের মধ্যে কোনও দুর্ঘটনা বা অসুস্থতার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হলে, ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসার খরচ দেবে বিমা সংস্থা। কিন্তু অসুখে না-পড়লে ওই টাকা জমা দিয়ে কিচ্ছু পাবেন না।

স্বাস্থ্য বিমা হয় দু’রকম। ক্যাশলেস এবং রিইম্বার্সমেন্ট। প্রথমটিতে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরে আপনাকে আগেভাগে কোনও টাকা দিতে হবে না। সংস্থাই তা আপনার হয়ে হাসপাতালকে দেবে। দ্বিতীয়টির ক্ষেত্রে আপনি টাকা দেবেন। পরে সমস্ত কাগজপত্র নিয়ে সংস্থার কাছে আর্জি জানালে, তারা সেই টাকা ফেরত দেবে। তবে দু’ক্ষেত্রেই চিকিৎসা খরচের পুরো টাকা না-ও পেতে পারেন। ফলে প্রথমেই দেখে নিতে হবে কী কী সুবিধা পাচ্ছেন আপনি।

নতুন কী?

জানেন কি, যদি আপনি নিয়মিত শরীরচর্চা করেন ও খেয়াল রাখেন স্বাস্থ্যের, তা হলে সুযোগ পেতে পারেন কম প্রিমিয়ামের। কিছু কিছু সংস্থার ক্ষেত্রে প্রিমিয়ামে সেই ছাড় হতে পারে ৩০% পর্যন্ত। এ জন্য—

• আপনি শরীর চর্চা করছেন কি না, তা দু’ভাবে জানবে বিমা সংস্থা। প্রথমত, বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে। দ্বিতীয়ত, একটি বিশেষ অ্যাপ আপনার স্মার্ট ফোনে (অ্যানড্রয়েড) লাগিয়ে। আপনি রোজ কতটা হাঁটছেন, নিয়মিত ব্যায়াম করছেন কি না ইত্যাদি তথ্য ওই অ্যাপের মাধ্যমে বিমা সংস্থার রেকর্ডে নথিভুক্ত হবে। সব কিছু ঠিকঠাক মেনে চললে পরের বছরে বিমা নবীকরণের সময় প্রিমিয়ামের অঙ্কে ছাড় পাবেন। কিছু সংস্থা ওই টাকা দিয়ে ওষুধ কেনা, স্বাস্থ্য পরীক্ষা, ডাক্তারের ফি দেওয়ার সুবিধাও দিচ্ছে।

• তবে স্বাস্থ্য রক্ষার ব্যাপারে উল্টো পথে চললে, প্রিমিয়ামের উপর চাপতে পারে অতিরিক্ত টাকা।

• ডাক্তারের সঙ্গে অনলাইনে কথা বলা ও চিকিৎসা পরামর্শের মতো পরিষেবাও দিচ্ছে বেশ কিছু সংস্থা।

• এ ছাড়াও, আগে পাওয়া যেত না এমন কিছু চিকিৎসাকেও বিমার আওতায় এনে তার পরিধি বাড়াচ্ছে কিছু কিছু সংস্থা। যেমন, মনোরোগ, মেদ কমানোর চিকিৎসা (ব্যারিয়াট্রিক), টেস্ট টিউবের মাধ্যমে সন্তানের জন্ম (আইভিএফ) ইত্যাদি।

• বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই শুধুমাত্র হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা করালে কেবল স্বাস্থ্য বিমার সুবিধা পাওয়া যায়। কিন্তু এখন এমন প্রকল্পও বাজারে এসেছে, যাতে বেশ কিছু রোগের চিকিৎসা বাড়িতে করালেও বিমার টাকা পেতে পারেন গ্রাহক। শুধু তাই নয়, নতুন প্রকল্পের দৌলতে বাড়িতে ইন্টেন্সিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) তৈরি করে ডাক্তার এবং নার্স দিয়ে চিকিৎসা করালেও, বিমার টাকা পাওয়ার সুযোগ এসেছে।

ভ্রমণ বিমা

বিদেশ-বিভুঁইয়ে কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে কী হবে? চিকিৎসার অর্থ কোথা থেকে আসবে? অথবা যদি মৃত্যু হয় কারও? বিমানের মালপত্র খোয়া যায় যদি? অথবা ফিরে এসে দেখেন চুরি-ডাকাতি হয়ে গিয়েছে বাড়িতে? এই সব প্রশ্নেই উত্তর হল ভ্রমণ বিমা। যা আদপে জীবনবিমা, স্বাস্থ্যবিমা ও সম্পত্তি-বিমার যোগফল।

বিদেশে যেতে বিমা

এই বিমা বাধ্যতামূলক না-হলেও, বাড়তি সুরক্ষাকবচ। তবে কোনও কোনও দেশে যেতে গেলে বিমা থাকা বাধ্যতামূলক, না হলে ভিসাই পাওয়া যায় না। বিদেশে ভ্রমণ বিমায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এই বিমার টাকা দাবি করার জন্য প্রমাণপত্র দাখিল করতে হয়। কিন্তু কেমন হত যদি কোনও ঝামেলা ছাড়াই অ্যাকাউন্টে পৌঁছে যেত টাকা? ঠিক সেই সুবিধাই নিয়ে এসেছে কিছু সংস্থা।

নতুন কী?

যে যে সুযোগ এতে পাওয়া যায়, তা হল—

• এই ধরনের নতুন বিমায় নির্দিষ্ট সময়ে যদি বিমান না ছাড়ে, তা হলে কোনও নথি জমা না দিয়েই ক্লেমের টাকা পাওয়া যায়।

• বেড়ানো শেষে বিমাকারী বাড়ি ফেরার আগেই সেই টাকা পৌঁছয় তাঁর অ্যাকাউন্টে।

• নতুন এই ধরনের বিমা কেনার শর্ত শুধু একটাই, এটি করতে হবে অনলাইনে। এমনকী চাইলে বিমানবন্দরে বসেই সেই কাজ সেরে ফেলতে পারেন।

• এই সুবিধার জন্য ইনশিওরেন্স ওয়ালেট অ্যাপও চালু করেছে কিছু সংস্থা। যার সাহায্যে কেনা যায় পলিসি।

• বিমা কেনার সময়ই ওই ওয়ালেটের মাধ্যমে পাসপোর্ট, বিমানের টিকিট অথবা বোর্ডিং পাস স্ক্যান করিয়ে সংস্থার কাছে পাঠাতে হবে।

• বিশেষ প্রযুক্তির সাহায্যে আপনার বিমানের গতিবিধির উপরে নজর রাখতে পারবে বিমা সংস্থা। ফলে যদি দেখা যায়, বিমান ছাড়তে দেরি হচ্ছে, তা হলে বিমা সংস্থাই গ্রাহকের মোবাইলে বার্তা পাঠাবে এবং জানতে চাইবে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর। তা জানালে, বিমার টাকা সরাসরি জমা পড়বে অ্যাকাউন্টে।

• চাইলে কাগজপত্র জমা দিয়েও বিমা কেনা যায়। তবে সে ক্ষেত্রে বিমান ছাড়তে দেরি হওয়ার নথি জমা দিতে হবে সংস্থার কাছে। তবেই পাবেন টাকা।

দেশের মধ্যে ঘুরতে

সাধারণত বিদেশে যাওয়ার জন্যই এত কাল বিভিন্ন প্রকল্প এনেছে বিমা সংস্থাগুলি। তবে এখন দেশের মধ্যে ঘুরতে যাওয়ার ক্ষেত্রেও কয়েকটি চালু হয়েছে।

নতুন কী?

সাধারণত ওই সময়ে ব্যক্তিগত দুর্ঘটনার জন্যই বিমা করার সুযোগ দেয় সংস্থাগুলি। তবে কেউ একই সঙ্গে শর্তসাপেক্ষে অন্য সুবিধাও (যেমন বিমানে ‘চেক্‌ড-ইন’ ব্যাগ ও মালপত্র দেরিতে পৌঁছনো বা খোয়া যাওয়া, ভ্রমণ বাতিল, ‘কানেক্টিং’ বিমান ধরতে না-পারা ইত্যাদি) দিচ্ছে। কেউ আবার এগুলিকে আলাদা সুবিধা হিসেবে গণ্য করে প্রতিটির জন্য প্রিমিয়ামে পৃথক মাসুল নেয়। এখন ‘অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস’ জনপ্রিয় হওয়ায় কিছু সংস্থা সে ক্ষেত্রে বিমার বাড়তি সুবিধা দিয়ে থাকে। তবে কিছু সংস্থা ঝুঁকিপূর্ণ খেলা বা কার্যকলাপে যুক্ত থাকার ক্ষেত্রে বিমা করায়ই না।

এই বিমা প্রতি বার আলাদা করে ঘুরতে যাওয়ার জন্য কেনা যায়। কিন্তু কেউ যদি বছরে একাধিক ভ্রমণ করেন, তা হলে এক সঙ্গে সবকটির জন্যও বাৎসরিক বিমা করাতে পারেন।

স্বল্প দূরত্বে

শহরের মধ্যে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতেও বিমা আনতে চলেছে সংস্থা। যেমন, আপনি হয়ত বালিগঞ্জ থেকে ধর্মতলায় আসবেন। চাইলে খুব কম টাকায় (১০ টাকায়) বিমা পলিসি কিনতে পারবেন। যার মেয়াদ থাকবে আপনি ধর্মতলায় পৌঁছনো পর্যন্ত।

গাড়ি বিমা

গাড়ি কেনার সময়ে বিমা করানো বাধ্যতামূলক। সাধারণ ভাবে দু’ধরনের বিমা হয়। তৃতীয় পক্ষ বিমা (থার্ড পার্টি কভার) ও নিজের গাড়ির ক্ষতির (ওন ড্যামেজ) বিমা। প্রথমটি বাধ্যতামূলক, দ্বিতীয়টি নয়।

এই বিমার কাগজপত্র ঠিকঠাক না-থাকলে, বাতিল হতে পারে ক্ষতিপূরণের দাবি বা ‘ক্লেম’। তখন হঠাৎ দুর্ঘটনায় পড়া গাড়ি সারাতে আপনার পকেট থেকেই যাবে বেশ কয়েক হাজার টাকা। আবার আপনার গাড়ির ধাক্কায় অন্য কোনও ব্যক্তি জখম হলে বা কারওর সম্পত্তির ক্ষতি হলে, তখনও ভরসা সেই গাড়ি বিমা। এ ছাড়াও, এই বিমা কাজে আসে গাড়ির কর জমা দেওয়া, ব্যাঙ্কে ঋণ শোধের পরে স্মার্ট কার্ড ছাড়ানোর সময়েও।

নতুন কী?

বাজারে এমন গাড়ি বিমা এসেছে, যাতে স্বাস্থ্য বিমার মতোই প্রিমিয়াম কমানোর সুযোগ পেতে পারেন। তবে সেই সুযোগ মিলবে শুধু ওন ড্যামেজ বিমার ক্ষেত্রেই। কারণ, গাড়ির মাপ, ইঞ্জিনের ক্ষমতা অনুসারে থার্ড পার্টি বিমার প্রিমিয়াম আগে থেকেই নির্দিষ্ট করা থাকে। কী ভাবে প্রিমিয়াম কমবে? চলুন দেখি।

• এই বিমা যিনি কিনবেন, তাঁর গাড়িতে বসানো হবে একটি যন্ত্র। টেলিম্যাটিক্স বা ব্ল্যাক বক্স প্রযুক্তির সাহায্যে যা চলবে। ওই যন্ত্রের মাধ্যমে ড্রাইভার কী ভাবে গাড়ি চালাচ্ছেন, তা রেকর্ড করবে বিমা সংস্থা। জানা যাবে, গতিসীমা ভেঙে বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালানো অথবা জোরে ব্রেক কষা হচ্ছে কি না। যদি দেখা যায়, সারা বছর ধরে আইন মেনে গাড়ি চালানো হচ্ছে, তা হলে পরের বছর নবীকরণের সময়ে প্রিমিয়ামে ৩০% পর্যন্ত ছাড় পাওয়া যেতে পারে।

• তবে নিয়ম না মানলে দিতে হতে পারে বাড়তি টাকা।

• এ ছাড়াও টেলিম্যাটিক্স যন্ত্র ব্যবহার করে ইনশিওরেন্স ওয়ালেট অ্যাপের মাধ্যমে আরও কিছু সুবিধা পাওয়া যায়। যেমন ধরুন, ড্রাইভার আপনাকে অফিসে পৌঁছে গাড়ি নিয়ে বাড়ি ফিরে যান। অ্যাপের সাহায্যে আপনি বাড়ি পৌঁছনোর নির্দিষ্ট রুট বেঁধে দিতে পারেন। গাড়ি রুটের বাইরে গেলে সঙ্গে সঙ্গে ফোনেই তা জানা যাবে। এই ‘জিও ফেন্সিং’ ব্যবস্থার মাধ্যমে ড্রাইভার বেপরোয়া গাড়ি চালালে, তা-ও ফোনে জানতে পারবেন।

• এ ছাড়াও ওই ব্যবস্থায় গাড়ির ইঞ্জিন বা ব্যাটারির ত্রুটির বার্তা মিলবে। রাস্তায়, বিশেষত হাইওয়েতে গাড়ি খারাপ হলে কাছাকাছি কোথায় সারানোর জায়গা রয়েছে, তা জানা যাবে। পেট্রোল ফুরিয়ে গেলে, হদিস পাওয়া যাবে সব থেকে কাছের পাম্পের ঠিকানারও।

এ ছাড়াও অন্য অনেক ধরনের নতুন বিমাও বাজারে এসেছে বা আসার কথা রয়েছে। চলুন চোখ রাখি সে দিকে—

গ্যাজেট বিমা

শখ করে দামি স্মার্ট ফোন কিনেছেন। অথচ কেনার এক সপ্তাহের মধ্যেই হাত থেকে পড়ে স্ক্রিন গেল ভেঙে। এরকম আমাদের অনেকেরই হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ওয়্যার‌্যান্টির আওতায় এই সারাই হয় না। অথচ এই ধরনের ঘটনার জন্য আগে থেকে করানো যায় বিমা। যা অনেকেরই অজানা। মোবাইল বা ল্যাপটপের মতো গ্যাজেট কেনার সময়ই এই বিমা করানো যায়। অথবা কেনার ১৫ দিনের মধ্যে বিমা করাতে পারেন। যে দোকান থেকে গ্যাজেট কিনছেন, সেখানেই এই বিমা করাতে হয়। এ জন্য প্রথমেই দেখে নিন—

• কোন কোন অ্যাকসেসরিজ (ব্যাটারি, হ্যান্ডস-ফ্রি, ডেটা কেব্‌ল ইত্যাদি) বিমার আওতায় পড়ছে না।

• বিমার টাকা ক্লেম করার জন্য কী কী নথি জমা দিতে হবে। যেমন, চুরি গেলে থানায় করা ডায়েরি, সিম কার্ড ব্লক করার প্রমাণ ইত্যাদি।

• কোন ক্ষেত্রে বিমা পাবেন, আর কোন ক্ষেত্রে টাকা মিলবে না, প্রথমেই তা জেনে নিতে হবে।

সাইবার বিমা

খবরের কাগজ বা টিভিতে প্রায়ই চোখে পড়ে যে, এটিএম থেকে গ্রাহকের টাকা লোপাট হয়ে গিয়েছে। অথবা কারও অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তাঁর অজান্তেই অন্য কোনও অ্যাকাউন্টে বৈদ্যুতিন ব্যবস্থায় সরানো হয়েছে। এখন এই ধরনের ঘটনার জন্যও আগে থেকে বিমা করানোর সুবিধা আনার কথা রয়েছে বেশ কয়েকটি সংস্থা। এত দিন ওই বিমা শুধুমাত্র ব্যাঙ্ক বা অন্য কোনও সংস্থাই কিনতে পারত। কিন্তু এখন সাধারণ মানুষের জন্যও ওই বিমা আনার পরিকল্পনা করা হয়েছে।

• সাইবার বিমাও অনলাইন, এজেন্ট বা ব্যাঙ্কের মাধ্যমেই কেনা যাবে।

• বিমার প্রিমিয়াম নির্ধারিত হবে বিমাকৃত অঙ্কের উপর ভিত্তি করেই।

প্রথম পর্যায়ে সীমিত কিছু বিমা সংস্থাই এই বিমা বাজারে ছাড়তে চলেছে। খুব শীঘ্রই তারা বিমার শর্ত-সহ প্রকল্প নিয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করবে।

তথ্য সহায়তা: বাজাজ অ্যালায়াঞ্জ জেনারেল ইনশিওরেন্স, ম্যাগমা এইচডিআই জেনারেল ইনশিওরেন্স, আদিত্য বিড়লা হেল্‌থ ইনশিওরেন্স, অ্যাপোলো মিউনিখ হেল্‌থ ইনশিওরেন্স

পাঠকের প্রশ্ন?

প্রঃ চাকরি থেকে অবসর নিয়েছি ৭ বছর আগে। এখন একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করি। বাড়িতে আমি ও স্ত্রী থাকি। ছেলে বেঙ্গালুরুতে কর্মরত।
ছেলে বা তার পরিবার আমাদের খেয়াল রাখে না। মেয়েও বিবাহিত।

২০১০ সালে এক সঙ্গে থাকার সময়ে ছেলে বাড়ির দোতলা করবে বলে ৪ লক্ষ টাকা ঋণ নেয়। যা তার অ্যাকাউন্ট থেকে কাটা হয়। আমি কো-বরোয়ার। এ জন্য ব্যাঙ্কের কাছে আসল দলিল জমা রয়েছে। ১৪ বছরের কিস্তি বাকি। আমার পেনশন, বেতন ও বাড়ি ভাড়া থেকে যা আয় হয়, তাতে সংসার চালানো কষ্টের। তাই চাইছি, বাড়ি বিক্রি করে সেই টাকা ছেলে, আমার ও স্ত্রীর মধ্যে ভাগ করে নিতে। আমার প্রশ্ন, ১) আসল দলিল না-থাকলেও বাড়ি বিক্রি করতে পারব? ২) ব্যাঙ্কের ঋণ কি আমিই শোধ করে দিতে পারি? ৩) বাড়ি বিক্রি করলে কি ছেলে বা স্ত্রীর পক্ষ থেকে পরবর্তী কালে কোনও আপত্তি ওঠা সম্ভব?

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, কলকাতা

১) আপনার সম্পত্তি আপনি যখন খুশি বিক্রি করতেই পারেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে বিক্রি করার আগে ক্রেতাকে জানাতে হবে যে, বাড়িটি বন্ধক দেওয়া রয়েছে। সেই সংক্রান্ত যাবতীয় শর্তও আপনার তরফ থেকে জানিয়ে রাখতে হবে। বন্ধক ও অন্যান্য শর্ত জানা সত্ত্বেও ক্রেতা যদি সেটি কিনতে রাজি হন, তা হলে বিক্রি করতে কোনও অসুবিধে নেই। এ জন্য—

• মূল দলিল ব্যাঙ্কের কাছে গচ্ছিত থাকায়, তার বদলে ক্রেতাকে বাড়ির দলিলের সার্টিফায়েড কপি দিতে হবে।

• যে ঋণ বাকি, তা কী ভাবে শোধ হবে সেটা ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে হওয়া চুক্তিতে বিশদে লিখতে হবে।

২) আপনি বাকি ঋণ শোধ করতে পারেন। এ জন্য ব্যাঙ্কে কথা বলতে হবে। আপনি বাকি টাকা দিতে পারলে, দলিলও ফেরত পাবেন। সে ক্ষেত্রে বাড়ি বিক্রির সময়ে দলিলের সার্টিফায়েড কপির প্রয়োজন হবে না।

৩) বাড়ি আপনার। সিদ্ধান্তও তাই আপনারই হওয়া উচিত। আপনি যে প্রশ্নগুলি করেছেন, সেই ব্যাপারে কোনও ক্ষেত্রেই স্ত্রী বা পুত্রের মতামত নেওয়ার প্রয়োজন নেই। পরিকল্পনায় তাঁদের অসুবিধার কারণ নেই। বরং আপনি ঋণশোধ করলে তো সুবিধাই! তবে হ্যাঁ, এটাও ঠিক, ‘বন্ধক’ দেওয়া বাড়ি এক দিন ছাড়িয়ে নেওয়া হবে, এমন আশা থাকে। তাই আপনি বাড়ি বিক্রি করে দিচ্ছেন, এই ব্যাপারটা হয়তো স্ত্রী-পুত্রের পছন্দ হবে না।

পরামর্শদাতা: আইনজীবী
জয়ন্ত নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

পরামর্শের জন্য লিখুন:

‘বিষয়’, ব্যবসা বিভাগ,

আনন্দবাজার পত্রিকা,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা, পিন-৭০০০০১।

ই-মেল: bishoy@abp.in

ঠিকানা ও ফোন নম্বর জানাতে ভুলবেন না

New scheme Insurance
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy