Advertisement
E-Paper

কর্পোরেট কর নিয়ে প্রশ্নের মুখে নির্মলা

সমালোচনার মুখে আজ নির্মলার জবাব, কর্পোরেট কর ৩০% থেকে কমিয়ে ২২% করা ও নতুন কারখানা তৈরিতে করের হার ১৫ শতাংশে নামানোর সুবাদে ম্যানুফ্যাকচারিং হাব (কল-কারখানায় উৎপাদনের কেন্দ্র) হয়ে উঠবে ভারত।

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:৫৮
 বক্তৃতা: সোমবার লোকসভায় অর্থমন্ত্রী। পিটিআই

বক্তৃতা: সোমবার লোকসভায় অর্থমন্ত্রী। পিটিআই

অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে কিছু দিন আগেই কর্পোরেট করের হার কমিয়েছে মোদী সরকার। কিন্তু তাতে নতুন লগ্নি আসবে, নাকি শিল্প মহলের কর মেটানোর জটিলতা বাড়বে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠল সংসদে। নিশানা হলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।

সমালোচনার মুখে আজ নির্মলার জবাব, কর্পোরেট কর ৩০% থেকে কমিয়ে ২২% করা ও নতুন কারখানা তৈরিতে করের হার ১৫ শতাংশে নামানোর সুবাদে ম্যানুফ্যাকচারিং হাব (কল-কারখানায় উৎপাদনের কেন্দ্র) হয়ে উঠবে ভারত। তবে কর্পোরেট কর ছাঁটাইয়ের ফলে কত জন নতুন লগ্নিকারী এগিয়ে এসেছেন, সে প্রশ্নের উত্তর দেননি তিনি। শুধু বলেছেন, মাত্র দু’মাস কেটেছে এই কর কমানো হয়েছে। অনেকেই লগ্নিতে আগ্রহ দেখিয়েছেন। বেশ কিছু বিদেশি সংস্থাও

আছে সেই তালিকায়। কিন্তু এর কতখানি প্রভাব পড়েছে, তা বলার সময় আসেনি। তাঁর যুক্তি, আমেরিকার সঙ্গে শুল্ক যুদ্ধে বহু সংস্থা চিন থেকে কারখানা গোটাতে চাইছে। সে দিকে তাকিয়েই সিদ্ধান্ত। চলতি অর্থবর্ষ থেকে কম ন্যূনতম বিকল্প কর চালু হয়েছে বলেও স্পষ্ট করেছেন তিনি। এ নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোতেই এই বার্তা।

আরও পড়ুন: অর্থনীতি বেহালই, মত উপদেষ্টা সংস্থার

অর্থনীতির বেহাল দশার কথা গত সপ্তাহে সংসদে অস্বীকার করেছিলেন নির্মলা। এর আগে বহু বার বলেছেন, অর্থনীতির এই ঝিমুনি আসলে তার ওঠাপড়ার স্বাভাবিক নিয়মের চক্র মেনেই হচ্ছে, কাঠামোগত নয়। আজও এই প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘বিষয়টি বুঝতে অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞদের আরও সময় খরচ করব আমি।’’

বাজেট পাশ হওয়ার পরে তড়িঘড়ি অধ্যাদেশ জারি করে কর্পোরেট কর ছাঁটাই করেছিলেন অর্থমন্ত্রী। সেই অধ্যাদেশকে আইনের চেহারা দিতেই আজ লোকসভায় কর আইনে সংশোধনী বিল পাশ করিয়েছে তিনি। কিন্তু তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে একাধিক।

তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র প্রশ্ন তোলেন, সকলের জন্যই ১৫% করের ব্যবস্থা হল না কেন? তাঁর দাবি, যে সব কারখানা চলছে, সেখানে কম করের সুবিধা মিলবে না। ফলে সেগুলির সম্প্রসারণ হবে না। নতুন কারখানা তৈরি করে সুবিধা নেওয়ার জন্য একটা শাখা সংস্থা খুলতে হবে। যার জেরে কর মেটানোর সমস্যা, জটিলতা বাড়বে। মহুয়ার দ্বিতীয় প্রশ্ন ছিল, পার্টনারশিপ সংস্থা বা লিমিটেড লায়াবিলিটি পার্টনারশিপের মতো সংস্থায় কেন কর কমানো হয়নি। নির্মলার জবাব, তা করতে গেলেই জটিলতা বাড়ত। বিশেষত এই পদক্ষেপ যেহেতু শুধুমাত্র নতুন লগ্নির দিকে লক্ষ্য রেখেই।

আরও পড়ুন: কর্পোরেট কর নিয়ে প্রশ্নের মুখে নির্মলা

অধ্যাদেশকে বিল হিসেবে নিয়ে এসে আর একটি বদলও করেছে কেন্দ্র। পাল্টেছে কারখানা উৎপাদনের সংজ্ঞা। তাতে বলা হয়েছে, সফটওয়্যার তৈরি, খনন, বই মুদ্রণ, গ্যাস বটলিং কারখানা, সিনেমাটোগ্রাফ ফিল্ম উৎপাদন, মার্বেল ব্লককে স্ল্যাবে পরিণত করা কারখানা উৎপাদনের তকমা পাবে না। ফলে ওই সংক্রান্ত সুবিধা আর নিতে পারবে না এই সংস্থাগুলি। বিলে এটাও বলা হয়, প্রয়োজনে কেন্দ্র বিজ্ঞপ্তি জারি করে আরও কিছু ক্ষেত্রকে কর্পোরেট কর ছাড়ের আওতা থেকে বাদ দিতে পারে। বিরোধীদের তোপ, এর জেরে অনিশ্চয়তা দানা বাঁধতে পারে শিল্প মহলে। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহও বারবার এই অনিশ্চয়তার কথা বলেছেন।

আজ কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী প্রশ্ন তোলেন, কর্পোরেট কর কমাতে গিয়ে ১.৪৫ লক্ষ কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতি হবে। যা সরকারের মোট খরচের ৫.২%। সে ক্ষেত্রে রাজকোষ ঘাটতি ৩.৩ শতাংশের লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়ে ৪ শতাংশে পৌঁছে যাবে। তখন? নির্মলার জবাব, প্রত্যক্ষ কর বাবদ আয় নভেম্বর পর্যন্ত ৫% বেড়েছে। তবে কর্পোরেট করের ধাঁচে আয়করও কমানো হবে এমন প্রতিশ্রুতি দিতে চাননি নির্মলা। তাঁর বক্তব্য, আয়করের বিষয়টি আলাদা ভাবে বিচার হবে।

Corporate Tax Nirmala Sitharaman Finance ministry
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy