Advertisement
০৯ মে ২০২৪
Nirmala Sitharaman

আন্তর্জাতিক সমস্যা, তা-ও ৭% বৃদ্ধিতে চোখ কেন্দ্রের

নির্মলা এমন দিনে এই পূর্বাভাস দিলেন, যে দিন দেশে খুচরো মূল্যবৃদ্ধি আরও এক ধাপ লাফিয়ে ৭.৪১ শতাংশে পৌঁছনোর খবর দিয়েছে কেন্দ্রের পরিসংখ্যান।

অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।

অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০২২ ০৭:০০
Share: Save:

ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতির বিরূপ প্রভাবে সারা বিশ্বের সঙ্গে ভারতীয় অর্থনীতিরও গতি কমছে বলে মনে করছে দেশ-বিদেশের আর্থিক ও মূল্যায়ন সংস্থা। চলতি অর্থবর্ষে আর্থিক বৃদ্ধির পূর্বাভাস দফায় দফায় ছাঁটাই করে চলেছে আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডার (আইএমএফ), বিশ্ব ব্যাঙ্ক, রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক-সহ অনেকে। মঙ্গলবার আইএমএফ তা ৭.৪% থেকে ৬.৮ শতাংশে নামিয়েছে। বুধবার বণিকসভা পিএইচডি চেম্বার জানিয়েছে, তা হতে পারে ৬%-৭%। তবে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের আশা, বিভিন্ন ডামাডোল সামাল দিয়েই এ বছর বৃদ্ধির হার ৭% ছুঁয়ে ফেলবে। কেন্দ্রের লক্ষ্য তেমনই।

নির্মলা এমন দিনে এই পূর্বাভাস দিলেন, যে দিন দেশে খুচরো মূল্যবৃদ্ধি আরও এক ধাপ লাফিয়ে ৭.৪১ শতাংশে পৌঁছনোর খবর দিয়েছে কেন্দ্রের পরিসংখ্যান। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, জিনিসের চড়া দামকে সামাল দিতে আরও কয়েক দফা সুদের হার বাড়াতে হতে পারে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ককে। সে ক্ষেত্রে ঋণের খরচ যদি চড়তে থাকে, তা হলে বেসরকারি সংস্থাগুলি বিনিয়োগ পরিকল্পনা স্থগিত রাখতে পারে। যা ধাক্কা দিতে থাকবে কাজের বাজারকে। মানুষের জীবনযাপনের খরচ কমানোর প্রবণতা তো থাকবেই। আর এই সব কিছু মিলিয়ে আরও শ্লথ হতে পারে বৃদ্ধির হার। এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল রেটিংসের মতো মূল্যায়ন সংস্থা এ দিন আবার সাবধানবাণী দিয়ে জানিয়েছে, জিডিপি বৃদ্ধি মাথা নামালে ঋণ শোধের ক্ষমতাও কমে। যা বিঘ্নিত করতে পারে ভারতের ক্রেডিট রেটিংকে। তাদের পরামর্শ, সরকারকে এই দিকে নজর দিতে হবে। কারণ, অর্থনীতিকে গতিশীল রাখতে সরকারি খরচ বৃদ্ধির ফলে রাজকোষ ঘাটতি আরও চওড়া হবে। তাকে ভরাট করতে নিতে হবে আরও ঋণ। ফলে এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। উল্লেখ্য, এসঅ্যান্ডপি-র মূল্যায়ন অনুযায়ী এখন দেশের রেটিং (বিবিবি-) ঋণযোগ্যতার শেষ ধাপে। আইএমএফের মতে, ভারতের জিডিপি-র সাপেক্ষে ঋণের অনুপাত পৌঁছতে পারে ৮৪ শতাংশে।

নির্মলার দাবি

• করোনার শুরু থেকে এখনও পর্যন্ত বিরূপ অবস্থা সামলাতে মূলত তিনটি পদক্ষেপ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।

• করোনার সময়ে দ্রুত প্রতিষেধক তৈরি এবং তার দক্ষ প্রয়োগ।

• ডিজিটাল পরিকাঠামোর মাধ্যমে জনসংখ্যার নির্দিষ্ট অংশের কাছে সাহায্য পৌঁছে দেওয়া।

• ইউরোপের সঙ্কট বৃদ্ধির পর থেকে দেশে খাদ্য ও জ্বালানির জোগান নিশ্চিত করা। তেলের শুল্ক কমানো।

আইএমএফ এবং বিশ্ব ব্যাঙ্কের বৈঠকে যোগ দিতে আমেরিকা গিয়েছেন নির্মলা। ওয়াশিংটন ডিসিতে এক সভায় তাঁর বক্তব্য, বিশ্বের বৃদ্ধির পূর্বাভাস কমানো হলেও ভারতে সেই হার ৭ শতাংশের আশেপাশে থাকবে বলে তাঁর আশা। পরের অর্থবর্ষের বাজেট তৈরির প্রস্তুতি পর্ব ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। মূল্যবৃদ্ধির বিপদকে গুরুত্ব দিয়ে সেখানে সবচেয়ে প্রাধান্য পাবে অর্থনীতির চাকাকে গতিশীল রাখার বিষয়টিই। তাঁর কথায়, ‘‘বৃদ্ধির দিকেই সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হবে। মূল্যবৃদ্ধির সমস্যা নিয়েও উদ্বিগ্ন। গুরুত্ব পাবে সেটিও। তবে বৃদ্ধির গতিকে কী ভাবে অক্ষুণ্ণ রাখা যায়, সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হবে সে দিকেই।’’ তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে তৈরি হওয়া খাদ্য ও জ্বালানির সমস্যার প্রভাব যে পুরো এড়ানো সম্ভব নয়, তা মেনেছেন অর্থমন্ত্রী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Nirmala Sitharaman GDP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE