Advertisement
E-Paper

সম্পর্কের কথা ভেবে লগ্নি নয়

কয়েক বছরে বিয়ে। নিজের ফ্ল্যাট। ব্যবসা শুরু। এত কিছু এক সঙ্গে হবে তো? জানাচ্ছেন শৈবালঅভিষেক ক’মাস হল নতুন চাকরিতে যোগ দিয়েছেন। এখনও বিয়ে করেননি। পরিবারের দায়িত্বও নিতে হয় না। ফলে এটাই সঞ্চয়ের সেরা সময়। দেখা যাক কী ভাবে তা সম্ভব।

শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০১৭ ০৩:৫১

পরিচিতি: অভিষেক (২৯)

কী করেন: বেসরকারি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্মী। কাজের সূত্রে থাকেন কলকাতায় ভাড়া বাড়িতে। পরিবার জেলা শহরে

লক্ষ্য: এক-দু’বছরে বিয়ে। ৩ বছরে নিজের ফ্ল্যাট কেনা। ১৫ বছরে ব্যবসা চালু। সন্তানের উচ্চশিক্ষার ব্যবস্থা। অবসরের তহবিল জোগাড়

অভিষেক ক’মাস হল নতুন চাকরিতে যোগ দিয়েছেন। এখনও বিয়ে করেননি। পরিবারের দায়িত্বও নিতে হয় না। ফলে এটাই সঞ্চয়ের সেরা সময়। দেখা যাক কী ভাবে তা সম্ভব।

জীবনবিমা বদলান

আমরা বেশির ভাগ সময়েই আত্মীয়-স্বজন বা পরিচিত বিমা এজেন্টের কাছে জীবনবিমা করাই। অভিষেকও ব্যতিক্রম নন। তিনি জানিয়েছেন মাসে ৫০০ টাকা প্রিমিয়ামের বিমাটি বন্ধ করে টার্ম পলিসি কিনতে পারলেও, সম্পর্কের কারণেই প্রায় ২,০০০ টাকার বিমা প্রকল্প বন্ধ করতে পারবেন না। প্রিমিয়াম দিতে হবে ২০৩১ পর্যন্ত।

তিনি ভুল করছেন। শুধু আত্মীয়তা বজায় রাখতে আর্থিক ক্ষতি অর্থহীন। তাই আমার মতে—

• ছোট বিমাটি পেড-আপ করে দিন।

• আর বড় বিমাটির ক্ষেত্রে তিন বছর প্রিমিয়াম দেওয়া হলে পেড-আপ করুন। সেই টাকা অবসরের কাজে ব্যবহার করতে হবে।

• এখন তাঁর উপর কেউ নির্ভরশীল নন। তাই বিয়ের পরে কমপক্ষে ২৫ লক্ষ টাকার টার্ম পলিসি করুন।

বিয়ের খরচ

জুনেই রেকারিং শেষ। স্থায়ী আমানত এবং রেকারিং মিলিয়ে ইতিমধ্যেই প্রায় ৪.৩ লক্ষ টাকা জমেছে। তা অভিষেক বিয়েতে ব্যবহার করতে পারবেন। আগামী দিনে মাসে ২০ হাজার টাকা করে রেকারিং করার পরিকল্পনাও নিয়েছেন। রেকারিংয়ের সুদ কমছে। তাই ১০ হাজার টাকা আলাদা লিকুইড বা ক্যাশ ফান্ডে রাখুন। এতে রেকারিং-এর থেকে বেশি জমবে। বাকি টাকা ইকুইটি ফান্ডে রাখতে হবে অবসরের জন্য। বিয়ের টাকা কম পড়লে এখান থেকে তুলে নিতে পারবেন।

বেড়াতে যাওয়া

প্রতি বছর ঘুরতে যেতে ক্যাশ ফান্ডে টাকা রাখুন। আর স্বল্প মেয়াদি ডেট ফান্ডে টাকা রাখুন তিন বছর অন্তর বেশি দিন বেড়াতে যাওয়ার জন্য।

ব্যবসা চালু

১৫ বছর পরে নিজের ব্যবসা শুরু করতে চান অভিষেক। কিন্তু কীসের ব্যবসা করবেন বা কত টাকা লাগতে পারে, তার বিশদে জানাননি। তাই শুধু বলতে পারি—

• ভেবে নিন কোন ব্যবসা করতে চান। সেই মতো এখন থেকেই পরিকল্পনা করুন। এখন যে ব্যবসা করবেন ভাবছেন, আগামী দিনে তার সম্ভাবনা কতটা, সেটাও খতিয়ে দেখুন।

• ব্যবসা শুরুর আগে কতটা মূলধন লাগতে পারে, তার হিসেব করুন। মূল্যবৃদ্ধি মাথায় রাখতে ভুলবেন না।

• ব্যাঙ্ক ঋণ নিয়ে ব্যবসা করলেও, এই ১৫ বছরেই তাঁকে বাকি মূলধন জোগাড় করে ফেলতে হবে। ফলে সংসার সামলে সেই টাকা কতটা জোগাড় করা সম্ভব, তা বিচার করুন।

• বিয়ে, সংসার খরচ, সন্তানের পড়াশোনা ইত্যাদির ব্যবস্থাও তাঁকে এই সময়ের মধ্যে করতে হবে।

• ব্যবসা যে-কোনও মুহূর্তে মার খেতে পারে। তাই অন্তত দেড় থেকে দু’বছরের সংসার খরচের টাকা জোগাড় করে রাখতে হবে। মোটের উপর দেখতে হবে অভিষেকের পক্ষে আদৌ ব্যবসা শুরু করা সম্ভব কি না।

ফ্ল্যাট কেনা

তিন বছর পরে ফ্ল্যাট কেনা কঠিন। বিশেষত যেখানে ব্যবসা শুরু ও বিয়ের কথা ভাবছেন। আপাতত পরিকল্পনা স্থগিত থাকুক। বেতন বাড়লে বাড়ির জন্য এসআইপি করুন।

অবসর ও সন্তানের জন্য

শেয়ারে টাকা খাটানোর পরিকল্পনা ভাল। তবে আমার মতে, এখনই সে পথে না-এগিয়ে এসআইপি করার কথা ভাবতে পারেন। তাঁর উচিত—

• ইকুইটি ফান্ডে লগ্নি বিয়ের পরেও চালিয়ে যাওয়া।

• বিয়ের পরে মাসে যে ১০ হাজার টাকা থাকবে, তা ডাইভার্সিফায়েড ও ডেট ফান্ডে এসআইপি করা।

• বিমা বন্ধ করে পাওয়া ২,০০০ এসআইপি-তে রাখা।

• পিপিএফ চালিয়ে যাওয়া।

লেখক: বিনিয়োগ বিশেষজ্ঞ

(অনুরোধ মেনে নাম পরিবর্তিত)

মতামত ব্যক্তিগত

investment relationship
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy