Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
ব্রেন্ট ব্যারেলে ৮২ ডলার, উৎপাদন ছাঁটাইয়ের পথে হাঁটছে না ওপেক

বিশ্ব বাজারে তেলের দর তলানিতে

আন্তর্জাতিক বাজারে ঢিমেতালে চলা চাহিদার জেরে অশোধিত তেলের দাম নেমে এল আরও তলানিতে। মঙ্গলবার লন্ডনের বাজারে ডিসেম্বরে সরবরাহের জন্য উঁচুমানের তেল ‘ব্রেন্ট’-এর দর নেমে যায় গত চার বছরের মধ্যে সবচেয়ে নীচে। ব্যারেল প্রতি দর দাঁড়ায় ৮২.০৮ ডলারে, যা ২০১০ সালের অক্টোবরের পর থেকে সবচেয়ে কম। সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদই তা নেমে এসেছিল ৮২.৬৮ ডলারে।

সংবাদ সংস্থা
লন্ডন শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০১৪ ০২:২৬
Share: Save:

আন্তর্জাতিক বাজারে ঢিমেতালে চলা চাহিদার জেরে অশোধিত তেলের দাম নেমে এল আরও তলানিতে। মঙ্গলবার লন্ডনের বাজারে ডিসেম্বরে সরবরাহের জন্য উঁচুমানের তেল ‘ব্রেন্ট’-এর দর নেমে যায় গত চার বছরের মধ্যে সবচেয়ে নীচে। ব্যারেল প্রতি দর দাঁড়ায় ৮২.০৮ ডলারে, যা ২০১০ সালের অক্টোবরের পর থেকে সবচেয়ে কম। সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদই তা নেমে এসেছিল ৮২.৬৮ ডলারে। মার্কিন বাজারেও অশোধিত তেল ‘লাইট ক্রুড’-এর দাম দাঁড়িয়েছে ৭৬.৫৮ ডলার। এক সময়ে তা নেমে যায় আরও নীচে, ব্যারেল প্রতি ৭৫.৮৪ ডলারে। ২০১১-র অক্টোবরের পরে এটাই সর্বনিম্ন।

বাজার সূত্রের খবর, দাম এ দিন এতটা নেমে আসার মূল কারণ বিশ্বের প্রধান তেল রফতানিকারী দেশ সৌদি আরবের পক্ষ থেকে আমেরিকাকে কম দামে তেল বিক্রির সিদ্ধান্ত। ডিসেম্বরে বিক্রির জন্য তারা এশিয়া ও ইউরোপে বাড়তি দর হাঁকলেও আমেরিকাকে কম দামে রফতানি করবে। তার কারণ, আমেরিকায় রফতানির বাজার তেমন বড় নয়। প্রসঙ্গত, দাম নিয়ে চুক্তির ভিত্তিতে অশোধিত তেলের আগাম লেনদেন চলে বিশ্ব বাজারে। পরের মাসে নির্ধারিত তারিখে তা জোগান দেওয়া হয়।

বিশ্ব বাজারে তেলের দাম কিছুদিন ধরেই কমার মুখ নিয়েছে, যার পিছনে বেশ কিছু কারণ চিহ্নিত করেছেন বিশেষজ্ঞরা। সেগুলির মধ্যে রয়েছে:

• তেল রফতানি -কারীদের সংগঠন অর্গানাইজেশন অব পেট্রোলিয়াম এক্সপোর্টিং কান্ট্রিজ বা ওপেক তেল উৎপাদন কমানোর কোনও পূর্বাভাস দেয়নি। আগামী বছরের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করতে ওপেক ভিয়েনায় বৈঠকে বসছে আগামী ২৭ নভেম্বর। তবে উৎপাদন ছাঁটাইয়ের পথে তারা হাঁটছে না বলেই ইঙ্গিত দিয়েছে। সে ক্ষেত্রে ঝিমিয়ে পড়া চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে দর বাড়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।

• অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, দাম না-বাড়ানোর পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য খোঁজা ভুল হবে। কারণ, চাহিদা-জোগানের ফারাকের উপর ভিত্তি করেই দাম কমছে।

• উদ্বৃত্ত উৎপাদনের জেরে আমদানি কমাচ্ছে আমেরিকা। গত ৩০ বছরে এই প্রথম নাইজিরিয়া থেকে আমদানি বন্ধ করল তারা। পাহাড়ের খাঁজে আটকে থাকা তেল বা ‘শেল অয়েল’ উৎপাদন ২০০৮ সাল থেকে গড়ে বাড়ছে দৈনিক ৪০ লক্ষ ব্যারেল হারে। সেই কারণে অর্ধেক হয়েছে ওপেক রাষ্ট্রগুলি থেকে তাদের আমদানি।

• উৎপাদনের দিক দিয়ে ছন্দে ফিরেছে লিবিয়া। রাজনৈতিক ডামাডোল সত্ত্বেও তারা সেপ্টেম্বরেই উৎপাদন করেছে দিনে ৮ লক্ষ ১০ হাজার ব্যারেল অশোধিত তেল, যেখানে আশঙ্কা করা হয়েছিল, তা দেড় থেকে আড়াই লক্ষ ব্যারেলের চেয়ে বেশি হবে না।

• ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলিতে আর্থিক মন্দার পর থেকে চাহিদা বাড়ছে ঢিমেতালে। শিল্পোৎপাদন প্রত্যাশার চেয়ে কম, যার জেরে কমছে জ্বালানির চাহিদা।

• বিশ্ব বাজারে তেলের দাম কমা সত্ত্বেও এশীয় দেশগুলি তেলে ভর্তুকি ছাঁটাই করতে থাকায় সেখানে দর বাড়ছে। ফলে টান পড়ছে চাহিদায়।

• আন্তর্জাতিক বাজারে ডলারের দাম বাড়ায় যে-সব দেশ অন্যান্য মুদ্রায় তেল কিনছে, তাদের চড়া দর দিতে হচ্ছে। এর জেরে চাহিদা কমছে।

ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সির পূর্বাভাস অনুযায়ী ২০১৪ সালে তেলের চাহিদা কমে হবে দিনে ২ লক্ষ ব্যারেল। আগে তা ছিল ৭ লক্ষ। ২০০৯-এর পর থেকে এত নীচে নামেনি চাহিদা। এর জেরেই দাম তলানিতে নেমে আসছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

crude oil price world market opec brent
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE