Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Kerosene

Kerosene: দাম চড়ছে কেরোসিনেরও, ভর্তুকি ফেরানোর দাবি

২০১৮ সাল থেকেই এতে ভর্তুকি কমানো হচ্ছে। ২০২০ সালের মার্চে তা পুরোপুরি তুলে নেয় মোদী সরকার।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ মে ২০২২ ০৭:২১
Share: Save:

সাধারণ গৃহস্থ পরিবারগুলির নাভিশ্বাস উঠছে হাজার টাকা ছাড়ানো দামে রান্নার গ্যাস কিনতে গিয়ে। যে গরিব মানুষদের সুরাহা দেওয়ার কথা বলে এলপিজি সিলিন্ডার কেনার জন্য উজ্জ্বলা যোজনা এনেছিল কেন্দ্র, তাঁরাও তা কিনতে পারছেন না। সিলিন্ডারে ভর্তুকি হয় নামমাত্র, নয়তো শূন্য। এমন পরিস্থিতিতে যাঁরা কেরোসিন কিনে স্টোভে রান্না করবেন ভেবেছিলেন, তাঁরা ফের ধাক্কা খেয়েছেন। কারণ, এই জ্বালানিতে কেন্দ্র ভর্তুকি তুলে নেওয়ার পরে দু’বছরের মধ্যে প্রতি লিটারের দাম পাঁচ গুণেরও বেশি বেড়ে গিয়েছে। গত দু’মাসেই দাম বেড়েছে প্রায় ২২ টাকা। এক লিটার কিনতে হচ্ছে ৮২.৫৪ টাকায়। এতে সাধারণ, বিশেষত দরিদ্র মানুষেরা তো সমস্যায় পড়েছেনই, ব্যবসা লাটে উঠতে বসেছে রাজ্যের ২৯ হাজার কেরোসিন ডিলারের। তাঁদের অভিযোগ, ‘‘কেরোসিন ক্রেতাদের বেশিরভাগেরই এত দামে জ্বালানি কেনার ক্ষমতা নেই। তাই বিক্রি কমছে। ওঁরা কোথায় যাবে, আমরাই বা কী করব? কী করে দিন চলবে?’’ অবিলম্বে ভর্তুকি ফিরিয়ে এনে দাম কমানোর দাবি তুলেছেন ডিলাররা।

রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থার মাধ্যমে দেশে কেরোসিনের দাম ঠিক করে কেন্দ্র। সাধারণ মানুষকে তা বিক্রি করা হয় রাজ্য সরকারের তত্ত্বাবধানে, গণবণ্টন ব্যবস্থায়। ২০১৮ সাল থেকেই এতে ভর্তুকি কমানো হচ্ছে। ২০২০ সালের মার্চে তা পুরোপুরি তুলে নেয় মোদী সরকার। তার পরেই রকেট গতিতে বাড়তে থাকে দাম। ওয়েস্ট বেঙ্গল কেরোসিন ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক অশোক গুপ্ত জানান, “২০২০-র মার্চে প্রতি লিটার ছিল ১৫.৭৩ টাকা। চলতি মাসে হয়েছে ৮২.৫৪ টাকা। গত দু’মাসেই দাম বেড়েছে ২২ টাকা।’’

তাঁর দাবি, এর ফলে বিশেষত গ্রামাঞ্চলের অনেক গরিব মানুষই ফের কাঠ, কয়লা, ঘুঁটে দিয়ে রান্না করতে বাধ্য হচ্ছেন। ফলে গাছ কাটা বাড়ছে। পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। অথচ এ দিকে কেরোসিনের চাহিদা তলানিতে নামছে। শুধু গত মাসেই বিক্রি কমেছে প্রায় ৬০%। আশঙ্কা, মে মাসে চাহিদা আরও কমবে।

কেরোসিন দূষণ বাড়ায়, অতীতে এই যুক্তিতেই তার ব্যবহার কমানোর সওয়াল করেছিল কেন্দ্র। অশোকবাবু বলছেন, ‘‘সে ক্ষেত্রে ডিলারদের ভবিষ্যৎ কী হবে, এই প্রশ্ন তুললে কেন্দ্র দায় ঝেড়ে ফেলেছিল। বলেছিল, ডিলারদের লাইসেন্স রাজ্য সরকার দিয়েছে। তাই ভবিষ্যতের কথা ভাবার দায়িত্বও তাদের। ফলে বর্তমান পরিস্থিতিতেও তাঁদের কথা কতটা ভাবা হবে সন্দেহ থাকছেই।’’ একাংশের মতে, কেরোসিন যাঁরা ব্যবহার করেন তাঁদেরও কোনও বিকল্প জ্বালানি দিতে পারছে না সরকার। আবার ডিলারদের কথাও ভাবছে না। তাঁদের ব্যবসা গোটাতে হলে আরও বহু মানুষ কাজ হারাবেন।

বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, রাজ্যে ২৯,০০০ ডিলার ছাড়াও ওই ব্যবস্থার সঙ্গে জড়িত ৮৩০ জন বাল্ক ডিলার। যাঁরা ১৫টি জেলায় ছোট ডিলারদের কেরোসিন সরবরাহ করেন। এ ছাড়া রয়েছেন ৪৭৬ এজেন্ট। এঁরা তেল সংস্থার থেকে কিনে তা ডিলারদের দেন। অশোকবাবু বলেন, ডিলার, বাল্ক ডিলার, এজেন্ট এবং ওই সব ব্যবসায়ীর কর্মীদের নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ১ লক্ষ পরিবার এই ব্যবসার উপরে নির্ভরশীল। অবিলম্বে কেরোসিনের দাম না কমানো হলে তাঁরা চূড়ান্ত সমস্যায় পড়বেন।

অশোকবাবু বলেন, “কেরোসিনের উৎপাদন খরচ ছাড়াও কোন কোন উপাদান যোগ করে মূল দাম নির্ধারিত হয়, তা জানতে তথ্যের অধিকার আইনে আবেদন করেছিলাম। কিন্তু জানানো হয়নি। এ বার ওই তথ্য পেতে আদালতের দ্বারস্থ হব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kerosene Kerosene Prices
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE