ফাইল চিত্র।
সপ্তাহের শুরুতে বাজার গোঁত্তা খেয়ে নীচে নামলেও, পরের দিকে তার অনেকটাই শুধরে নেয়। সোম এবং মঙ্গলবার মিলিয়ে সেনসেক্স পড়েছিল ৯৪২ পয়েন্ট। সপ্তাহের শেষ দু’দিনে ওঠে ৭৭৮ পয়েন্ট। অর্থাৎ সব মিলিয়ে তেমন বড় লোকসান হয়নি। তবে বাজার এখন যে উচ্চতায় ঘোরাফেরা করছে এবং নানা ক্ষেত্রে যে ধরনের অনিশ্চয়তা বিভিন্ন সময় প্রকট হচ্ছে, তাতে মাঝে-মধ্যেই সূচককে খানিকটা করে নামতে দেখব। মনে রাখতে হবে, বাজারের উচ্চতা যত বাড়ে, তত বাড়ে ঝুঁকিও। শেয়ার কেনার সময় সেটা মাথায় রেখে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। বর্তমানে বাজারে প্রধানত যে সব ঝুঁকি মাথা তুলছে এবং যে কারণগুলিতে সূচকের কম-বেশি ‘মেদ’ ঝরছে, সেগুলি হল—
* অর্থনৈতিক পরিস্থিতির বিচারে সূচক বেশি উঠে থাকলে লগ্নিকারীদের লাভ ঘরে তোলার তাগিদে বিক্রির চাপ বাড়ে। ফলে সূচক মাথা নামায়।
* দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে এলেও কোভিড নিয়ে অনিশ্চয়তা কমেনি। তার উপরে তৃতীয় ঢেউ কতটা আঘাত হানতে পারে তা বোঝা যাচ্ছে না। সংক্রমণ ফের বাড়তে শুরু করলে বাজারও আতঙ্কিত হয়ে পড়তে পারে।
* পাইকারি এবং খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হার চড়া, যথাক্রমে ১২ এবং ৬ শতাংশের উপরে। এই হারকে নিয়ন্ত্রণে না-আনতে পারলে সুদ কমানোর বদলে বাড়ানোর প্রশ্ন উঠবে, যা শিল্পের দিক থেকে কাম্য নয়।
* আমেরিকার সরকার ত্রাণ কমিয়ে আনলে এবং সুদ বৃদ্ধির পথে হাঁটলে ভারত থেকে বিদেশি লগ্নির সরে যাওয়ার রাস্তা চওড়া হবে।
* বর্তমান অনিশ্চিত অবস্থায় বিশ্ব বাজারে কোনও অঘটন ঘটলে এ দেশের লগ্নিকারীরা তা এড়িয়ে থাকতে পারবেন না।
* শেয়ার সূচক এখন চাঙ্গা মূলত ভবিষ্যতে অর্থনীতি ভাল করবে, এই আশায়। আশা বাস্তবে মিলবে তো, উঠছে প্রশ্ন।
শুক্রবার সাড়া জাগিয়ে শেয়ার বাজারে নথিবদ্ধ হয়েছে সদ্য বাজারে শেয়ার ছেড়ে (আইপিও) টাকা তুলতে নামা জ়োম্যাটো। ৭৬ টাকায় ইসু এই শেয়ার প্রথম খাতা খোলে ১১৫ টাকায়। যা দিনের শেষে ছোঁয় প্রায় ১২৬ টাকা। ইসুর দামের তুলনায় ৬৬% বেশি। প্রথম দিনেই বাজারে জ়োম্যাটোর মোট শেয়ারমূল্য পৌঁছেছে ১ লক্ষ কোটি টাকার কাছাকাছি।
তবে বন্ড ইল্ড ফের বাড়তে থাকায় উদ্বিগ্ন বন্ডে লগ্নিকারীরা। শুক্রবার ১০ বছর মেয়াদি বন্ড ইল্ড পৌঁছয় ৬.১৬%। ওই দিন সরকার ৬.১০% ১০ বছর মেয়াদি বন্ড বাজারে ছাড়লে ভাল সাড়া মেলেনি।
এ দিকে, আয়কর দফতর ৭ জুন চালু করেছে নতুন ই-ফাইলিং পোর্টাল। যার মাধ্যমে দাখিল করতে হবে ২০২০-২১ অর্থবর্ষের রিটার্ন। প্রথম থেকেই নানা গোলযোগ এবং প্রযুক্তিগত ত্রুটি ধরা পড়ে পোর্টালটিতে। ফলে রিটার্ন জমা করতে নাজেহাল হচ্ছেন বহু মানুষ এবং কর পরামর্শদাতারা। কত দিনে এই পোর্টাল নির্মাতা ইনফোসিস সমস্যার সমাধান করতে পারে, সেই দিকেই তাকিয়ে সকলে। ব্যক্তিগত আয়করদাতাদের জন্য এ বার রিটার্ন দাখিলের শেষ দিন
৩০ সেপ্টেম্বর।
গত সপ্তাহে এপ্রিল-জুন ত্রৈমাসিকের ফল বেরিয়েছে কিছু বড় মাপের সংস্থার। হিন্দুস্তান ইউনিলিভারের নিট লাভ ১৮৮১ কোটি টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ২০৬১ কোটি টাকা, বজাজ অটোর লাভ দ্বিগুণেরও বেশি বেড়ে হয়েছে ১০৬১ কোটি টাকা। ৫৫৮ কোটি টাকা বেড়ে রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ়ের লাভ স্পর্শ করেছে ১৩,৮০৬ কোটি টাকা।
(মতামত ব্যক্তিগত)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy