প্রতীকী ছবি।
গত ১২ জুলাই পেট্রলের দাম বাড়লেও, প্রায় তিন মাস পরে লিটার প্রতি ডিজেলের দাম ১৬ পয়সা কমেছিল। তার পরে দু’দিন অপরিবর্তিত ছিল দুই পরিবহণ জ্বালানির দর। ফলে দেশবাসীর মনে আশা তৈরি হয়েছিল, এ বারে বোধ হয় ‘ব্যতিক্রমী’ কিছু ঘটবে। কিন্তু সেই আশাকে চুরমার করে বৃহস্পতিবার ফের নতুন সর্বকালীন রেকর্ড তৈরি করল তেল। এ দিন কলকাতায় ইন্ডিয়ান অয়েলের পাম্পে পেট্রল ৩৯ পয়সা বেড়ে ১০১.৭৪ টাকা হয়েছে। ডিজেল ২১ পয়সা বেড়ে হয়েছে ৯৩.০২ টাকা। দেশের রাজধানী শহর নয়াদিল্লিতে সেগুলির দাম যথাক্রমে ১০১.৫৪ এবং ৮৯.৮৭ টাকা। আজ, শুক্রবার অবশ্য তেলের দর অপরিবর্তিত থাকছে।
গত ১৫ এপ্রিল শেষ বার দেশে পেট্রল এবং ডিজেলের দাম এক সঙ্গে কমেছিল। তার পরে টানা ১৮ দিন তা অপরিবর্তিত ছিল। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ-সহ পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন-পর্ব শেষ হতেই পরিস্থিতি বদলে যায়। ৪ মে থেকে লাগাতার বাড়তে বাড়তে সর্বকালীন রেকর্ড তৈরি করে ফেলে দুই জ্বালানির দর। সেই সময় থেকে এখনও পর্যন্ত মোট ৪০ দিন পেট্রলের দাম বেড়েছে। ডিজেলের দাম বেড়েছে ৩৭ দিন। এক দিন কমেছে। এই ক’দিনে কলকাতায় পেট্রলের দাম ১১.১২ টাকা এবং ডিজেলের দাম ৯.৪১ টাকা বেড়েছে। পশ্চিমবঙ্গ-সহ প্রায় ২০টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পেট্রল ১০০ টাকা পার করেছে। রাজস্থান, ওড়িশা এবং মধ্যপ্রদেশের কয়েকটি জেলায় সেঞ্চুরি করে ফেলেছে ডিজেলও। তার আগে গত বছর টানা ৮২ দিন দুই জ্বালানির দাম থমকে ছিল। তার পরে ওই বছরের ৭ জুন থেকে তা বাড়তে থাকে। সেই সময় থেকে এখন পর্যন্ত কলকাতায় পেট্রলের দাম ২৮.৪৪ টাকা বেড়েছে। ডিজেল চড়েছে ২৭.৪০ টাকা। সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞেরা বারবার বলছেন, পরিবহণ জ্বালানির এই লাগামছাড়া দর ঠেলে তুলছে বিভিন্ন পণ্যের দাম। যার জেরে মূল্যবৃদ্ধির হারও উঠে রয়েছে অসহনীয় জায়গায়। এরই পাশাপাশি বেড়েছে গৃহস্থের রান্নার গ্যাসের দাম। ভর্তুকি অবশ্য রয়েছে যৎসামান্য।
সব মিলিয়ে সাধারণ মানুষ যখন নাকাল, তখন কেন্দ্র এবং রাজ্যগুলি তেলের দাম কমানোর দায়িত্ব চাপিয়ে চলেছে একে অপরের কাঁধে। কেন্দ্রের যুক্তি, আন্তর্জাতিক বাজারে অশোধিত তেলের দাম বেড়ে চলায় এই পরিস্থিতি। যদিও অশোধিত তেলের দাম কমার সময়েও দেশে তেলের দাম কমেনি। বরং শুল্ক বাড়িয়ে ওই কমে যাওয়া দাম পুষিয়ে নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্র বলেছে, সেই রাজস্ব থেকেই করোনার মোকাবিলা হচ্ছে। এই অবস্থায় প্রাক্তন কূটনীতিবিদ হরদীপ সিংহ পুরীকে তেলমন্ত্রী করেছে মোদী সরকার। দামের বিষয়ে ইতিমধ্যেই তিনি কাতার এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহির মতো তেল রফতানিকারী দেশের সঙ্গে কথা বলেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy