Advertisement
E-Paper

চিন্তা তবু সংস্কার আর ঘাটতি নিয়ে

দু’বছরে ২.১১ লক্ষ কোটি টাকার শেয়ার মূলধন অবশ্যই অক্সিজেন জোগাবে বিপুল অনুৎপাদক সম্পদের বোঝায় ধুঁকতে থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিকে। অনেকটাই পরিষ্কার হবে তাদের হিসেবের খাতা। হয়তো বাড়বে মূল্যায়নও (রেটিং‌)।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৭ ০২:২৮

দু’বছরে ২.১১ লক্ষ কোটি টাকার শেয়ার মূলধন অবশ্যই অক্সিজেন জোগাবে বিপুল অনুৎপাদক সম্পদের বোঝায় ধুঁকতে থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিকে। অনেকটাই পরিষ্কার হবে তাদের হিসেবের খাতা। হয়তো বাড়বে মূল্যায়নও (রেটিং‌)। কিন্তু তা করতে গিয়ে রাজকোষ ঘাটতি শেষ পর্যন্ত মাত্রা ছাড়াবে কি না, সে বিষয়ে সংশয়ী আন্তর্জাতিক মূল্যায়ন সংস্থা ফিচ রেটিংস। তাদের মতে, ওই মূলধন জোগাড়ের জন্য বন্ড ছেড়ে টাকা তোলার দায় সরকারকে বইতে হলে, কঠিন হতে পারে ঘাটতি নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে বেঁধে রাখা।

সম্প্রতি সাংবাদিক সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি জানান, প্রস্তাবিত ২.১১ লক্ষ কোটি টাকা মূলধনের মধ্যে ১.৩৫ লক্ষ কোটি টাকা আসবে বাজারে বন্ড বেচে। বাকি ৭৬ হাজার কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দ থেকে। ফিচ-এর আশঙ্কা, মোট যত ঋণপত্র বা বন্ড ছাড়ার পরিল্পনা রয়েছে, তার দুই-তৃতীয়াংশ যদি সরকারের মাধ্যমে হয়, তা হলেই ঘাটতিকে লক্ষ্যমাত্রার (জিডিপি-র ৩.২%) মধ্যে বেঁধে রাখা কঠিন হবে।

লগ্নি-ঘোষণা


চলতি ও আগামী অর্থবর্ষে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিতে মোট ২.১১ লক্ষ কোটি টাকার নতুন শেয়ার মূলধন জোগাবে কেন্দ্র


এর মধ্যে ১ লক্ষ ৩৫ হাজার কোটি আসবে বন্ড ছেড়ে। আর বাকি ৭৬ হাজার কোটি বাজেট বরাদ্দ থেকে


৭৬ হাজার কোটি টাকার মধ্যে ৫৮ হাজার কোটিই আসবে বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শেয়ার বেচে


বাকি ১৮ হাজার কোটি জোগাবে কেন্দ্র। তার মধ্যে ১০ হাজার কোটির কথা বাজেটেই বলা আছে

এমনিতে ব্যাঙ্কে মূলধন ঢালার এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে ফিচ, এসঅ্যান্ডপি-র মতো রেটিং বহুজাতিক। তাদের মতে, এতে ব্যাঙ্কগুলির হিসেবের খাতা পরিষ্কার হবে। একই সঙ্গে হাতে আসবে সেই মূলধন, বাসেল-থ্রি নীতি মানার জন্য যা একান্ত জরুরি ছিল।

কেন্দ্র অবশ্য গোড়া থেকেই ইঙ্গিত দিয়েছে যে, রাজকোষ ঘাটতি যাতে মাত্রাছাড়া না-হয়, তা মাথায় রেখেই বন্ড ছাড়ার পরিকল্পনা করবে তারা। এমন ভাবে তা বাজারে ছাড়া হবে, যাতে তা ধারের হিসেবের মধ্যে না আসে। যেমন শোনা যাচ্ছে, এ জন্য রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির একটি হোল্ডিং সংস্থা তৈরি করা হতে পারে। যেখানে ব্যাঙ্কগুলিতে নিজেদের হাতে থাকা শেয়ার রাখবে কেন্দ্র। বন্ড ছাড়া হতে পারে ওই সংস্থার মাধ্যমে।

স্বাগত


লাগামছাড়া ঋণ খেলাপে ব্যাঙ্ক জেরবার। সেই হিসেবের খাতা ঠিক করতে সহায়ক হবে এই প্যাকেজ


অনুৎপাদক সম্পদের জন্য টাকা সরিয়ে রেখেও ধার দেওয়ার জন্য অর্থ বাড়বে ব্যাঙ্কের হাতে। ফলে শিল্পের ঋণ পেতে সুবিধা হবে। বিশেষত ছোট-মাঝারি শিল্পের


অনেক ব্যাঙ্কের রেটিংই কিছুটা ভাল হওয়ার সম্ভাবনা

শুধু তা-ই নয়। বন্ডের জন্য যে সুদ গুনতে হবে, তার বোঝা যে খুব বেশি হবে না, বুধবারই তা দাবি করেছেন অর্থ মন্ত্রকের মুখ্য উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যন। তাঁর দাবি, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিকে মূলধন জোগানোর জন্য বন্ড ছাড়তে গিয়ে ফি বছর ৯,০০০ কোটি টাকার মতো সুদ গুনতে হবে। ৭% সুদ ধরলে, বছরে মোট সুদের বোঝা ও রকমই দাঁড়ায়। কিন্তু তেমনই সেই দাওয়াই কাজে দেবে ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা এবং তার হাত ধরে দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে। কারণ, ব্যাঙ্ক চাঙ্গা হলে, তাদের পক্ষে ধার দেওয়া সহজ হবে। বাড়বে বেসরকারি বিনিয়োগ আর বৃদ্ধির হারও।

মাথাব্যথা


বন্ড ছেড়ে টাকা তোলার দায় নিতে হলে, কঠিন হতে পারে রাজকোষ ঘাটতিকে লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে বেঁধে রাখা। কিংবা সে জন্য বরাদ্দ ছাঁটতে হতে পারে অন্য প্রকল্প থেকে


জরুরি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক পরিচালন ব্যবস্থার সংস্কার। প্রয়োজন আরও পেশাদারিত্ব। তা হবে কি?

এ দিন এই একই যুক্তির প্রতিচ্ছবি স্টেট ব্যাঙ্কের গবেষণা শাখার রিপোর্টে। তাদের যুক্তি, সুদের বোঝা ৮,০০০ কোটি হওয়া মানে তা জিডিপি-র ০.০৭%। কিন্তু ওই অঙ্ক গোনা অর্থনীতির চাকা ঘোরানোর পক্ষে সহায়ক হবে বলে মনে করছে তারা। কিন্তু এই সব কিছুর পরেও মূল্যায়ন সংস্থার মাথাব্যথার কারণ হয়ে থেকেছে ঘাটতি।

একই সঙ্গে নানা আর্থিক ও উপদেষ্টা সংস্থার পরামর্শ, এই মূলধন হাতে পাওয়ার পরে নিজেদের পরিচালন ব্যবস্থা সংস্কারে মন দিতে হবে ব্যাঙ্কগুলিকে। যাতে আকাশছোঁয়া ঋণ খেলাপের মতো সমস্যা ফের দেখা না দেয়। নইলে মূলধন ঢালা জলে যেতে পারে বলে তাদের আশঙ্কা।

Recapitalisation Bank Fitch Ratings ফিচ রেটিংস
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy