Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
গীতাঞ্জলির ব্যালান্স শিট বাজেয়াপ্ত

পিএনবি-কাণ্ডে শিকড় খুঁজতে হানা দেশ জুড়ে

কলকাতায় নীরব মোদীর মামা মেহুল চোকসির গীতাঞ্জলি ও নক্ষত্র জুয়েলার্সের ছ’টি দোকানে হানা দেন ইডি অফিসারেরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০২:৪৫
Share: Save:

নীরব কাণ্ডের তদন্তে নেমে আজ দেশ জুড়ে ৪৫টি স্থানে তল্লাশি চালাল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। এর মধ্যে কলকাতায় নীরব মোদীর মামা মেহুল চোকসির গীতাঞ্জলি ও নক্ষত্র জুয়েলার্সের ছ’টি দোকানে হানা দেন ইডি অফিসারেরা। পাশাপাশি, দিল্লি, মুম্বই, পটনা, আমদাবাদ, গুয়াহাটি ইত্যাদি শহরেও তল্লাশি চলে। বেশি রাতের খবর, সিবিআই মুম্বইয়ে পিএনবির ব্র্যাডি হাউস শাখা ঘিরে ফেলেছে।

তদন্তে ইডি ও আয়কর দফতর জানতে পেরেছে, পিএনবির ১১,৪০০ কোটি টাকা সরাতে দেশ-বিদেশে ২০০টি বেনামি সংস্থাকে ব্যবহার করা হয়। আজ গীতাঞ্জলি গোষ্ঠীর ১৮টি সহযোগী সংস্থার ব্যালান্স শিট বাজেয়াপ্ত করেছে সিবিআই। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে কম্পিউটার সার্ভারও, যা ঘেঁটে ওই দুর্নীতির শিকড় কতটা গভীরে তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। শনিবার পিএনবির দুই অফিসার গোকুলনাথ শেট্টি ও মনোজ খারাটকে গ্রেফতার করে সিবিআই। অভিযোগ, তাঁদের যোগসাজশেই নীরব ও তাঁর সংস্থা পিএনবি থেকে মোটা অঙ্কের ঋণ পেতে ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি বা লেটার অব আন্ডারটেকিং হাতিয়ে নেন। তদন্তে প্রকাশ, ব্যাঙ্কের নিয়ম অনুয়ায়ী পাথর-গয়নার জন্য ওই আন্ডারটেকিংয়ের মেয়াদ থাকে ৯০ দিন। কিন্তু সিবিআই এফআইআরে জানিয়েছে, ২০১৭ থেকে নিয়মের বাইরে গিয়ে একাধিক নথির মেয়াদ বাড়িয়ে ১২ মাস করা হয়। সেগুলির অধিকাংশের মেয়াদ শেষ হওয়ার ছিল এ মাসের শেষ সপ্তাহে।

প্রশ্ন উঠেছে বার্ষিক অডিটে ইচ্ছে করে ওই ‘ভুল’ এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। সিবিআই-ইডি দু’পক্ষেরই মত, ব্যাঙ্কের কোনও প্রভাবশালী ব্যক্তির সরাসরি হস্তক্ষেপ ছাড়া এটা সম্ভব হত না।

• টাকা সরাতে হাতিয়ার দেশ-বিদেশের ২০০টি বেনামি সংস্থা

• ওই টাকায় হিরে, সোনা, দামি পাথর ছাড়াও কেনা হয়েছে জমি ও বাড়ি

• মোটা ঋণ পেতে নিয়ম ভেঙে ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি আদায়

• ব্যাঙ্কের প্রভাবশালী ব্যক্তির সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগ

• জাল তথ্য দিয়ে ব্যাঙ্কের বিদেশি শাখা থেকে বিপুল অঙ্কের ঋণ হাতানো

• যোগসাজশে অন্য ব্যাঙ্কও জড়িত, দাবি সিবিআইয়ের

• একই সুরে অভিযোগ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের

বিদেশের ব্যাঙ্কে নীরব-মেহুলের সংস্থাকে টাকা ধার দিতে সুইফ্ট মেসেজিং ব্যবস্থা ব্যবহার করা হত, তাতেই জালিয়াতি করতেন অফিসারেরা। মেসেজিংয়ে রেফারেন্স নম্বর একই রেখে কৌশলে টাকার অঙ্ক বাড়িয়ে দেওয়া হত। বাহরিন, ফ্রাঙ্কফুর্ট, হংকং, মারিশাসের মতো দেশে কানাড়া, এলাহাবাদ, অ্যাক্সিস ব্যাঙ্ক ও এসবিআইয়ে ওই মেসেজ পাঠানো হত। পরে সে টাকা বেনামি সংস্থার মাধ্যমে তুলতেন নীরবরা।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, ঘটনার সঙ্গে অন্যান্য ব্যাঙ্কও জড়িত। সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না সিবিআইও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE