ক্রিসিল জানিয়েছে, ভারতে ভোজ্য তেলের চাহিদার ১০% সূর্যমুখী। যার ৬০% আমদানি করতে হয়। বছরে এ দেশ যে ২২-২৩ লক্ষ টন কেনে তার ৭০ শতাংশই জোগায় ইউক্রেন।
প্রতীকী ছবি।
পরিবহণের জ্বালানি তেলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে হেঁশেলে অপরিহার্য ভোজ্য তেলের দাম। বৃহস্পতিবার সেই উদ্বেগে ইন্ধন জুগিয়ে আর্থিক উপদেষ্টা ক্রিসিলের সমীক্ষা জানাল, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে ভারতে অশোধিত সূর্যমুখী তেলের আমদানি আজ থেকে শুরু হওয়া নতুন অর্থবর্ষে ২৫% কমতে পারে। এই তেল প্রয়োজনের ৯০ শতাংশই ইউক্রেন এবং রাশিয়া থেকে কেনে এ দেশ। ফলে জোগানের ঘাটতি তার দামকে আরও ঠেলে তুলবে বলে আশঙ্কা। ভোজ্য তেলের মধ্যে সব থেকে বেশি ব্যবহৃত পাম তেল ইতিমধ্যেই আগুন। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, সূর্যমুখী তেলের জোগান কমলে বাড়তি চাহিদা তৈরি হবে পাম এবং অন্যান্যগুলির। তখন সরবরাহে গলদ থাকলে মাত্রাছাড়াতে পারে সব ভোজ্য তেলের দামই।
এই পরিস্থিতিতে সেগুলির ঊর্ধ্বমুখী দামে লাগাম টানতে ফের পদক্ষেপ করেছে কেন্দ্র। সে জন্য সমস্ত রাজ্যের জন্য বাজারে ভোজ্য তেল এবং তৈল বীজের মজুত নিয়ন্ত্রণের বিধি আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়েছে তারা। বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, শোধনাগারগুলি ভোজ্য তেল মজুত করতে পারবে ৯০ দিন পর্যন্ত, খুচরো ব্যবসায়ী এবং দোকানগুলি সাকুল্যে ৩০ কুইন্টাল পর্যন্ত এবং পাইকারি ব্যবসায়ীরা ৫০০ কুইন্টাল পর্যন্ত। ডিপোগুলিতে ১০০০ কুইন্টালের বেশি রাখা চলবে না। তেলের বীজের ক্ষেত্রেও খুচরো ও পাইকারি বিক্রেতারা রাখতে পারবেন যথাক্রমে ১০০ কুইন্টাল এবং ২০০০ কুইন্টাল। আর খাদ্যপ্রক্রিয়াকরণ সংস্থাগুলির ক্ষেত্রে তা হবে ৯০ দিন। সরকারের আশা, এর ফলে বেআইনি মজুতদারি ও কালোবাজারি বন্ধ হবে। দাম নিয়ন্ত্রণে থাকবে। এ দিন বিভিন্ন রাজ্য ও সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠকের পরে কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমরও জানিয়েছেন, দেশে সূর্যমুখীর উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করবে সরকার।
পেট্রল-ডিজ়েলের বাড়তে থাকা দর এবং যাতায়াতের পাশাপাশি নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দামে তার প্রতিফলন ক্রমশ কঠিন করে তুলছে সাধারণ রোজগেরে মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্ত মানুষের জীবন। করোনাকালে যাঁদের অনেকের রুজি-রোজগারই কমেছে। এমন অবস্থায় খাওয়া-খরচ আরও বেড়েছে রান্নার গ্যাস এবং রান্নার তেলের দামে। দেশে সব থেকে বেশি বিক্রি হয় যে ভোজ্যতেল, সেই পাম অয়েলের দাম এ বছর এক লাফে বেড়েছে ৪৫%।
ক্রিসিল জানিয়েছে, ভারতে ভোজ্য তেলের চাহিদার ১০% সূর্যমুখী। যার ৬০% আমদানি করতে হয়। বছরে এ দেশ যে ২২-২৩ লক্ষ টন কেনে তার ৭০ শতাংশই জোগায় ইউক্রেন। ২০% রাশিয়া। বাকিটা আসে আর্জেন্টিনা ও অন্যান্য দেশ থেকে। সংস্থাটির বক্তব্য, রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত আমদানিতে ৪-৬ লক্ষ টন ঘাটতি তৈরি করতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy