মটর এবং মুসুর ডালের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে এ বার বড় সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্র। বিনা শুল্কে হলুদ মটর আমদানির সময়সীমা তিন মাস বৃদ্ধি করল নরেন্দ্র মোদী সরকার। অন্যদিকে মুসুর ডালে কমছে আমদানি শুল্ক। ফলে খুচরো বাজারের এই দু’টি ডালের দাম বৃদ্ধির তেমন আশঙ্কা নেই। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে আপাতত স্বস্তিতে আমজনতা।
হলুদ মটর ও মুসুর ডালের আমদানি শুল্ক নিয়ে সম্প্রতি একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক। সেখানে বলা হয়েছে, চলতি বছরের ৩১ মে পর্যন্ত আমদানি করা হলুদ মটরে কোনও শুল্ক নেবে না সরকার। এ ছাড়া মুসুর ডালের ক্ষেত্রে পাঁচ শতাংশ হ্রাস করা হয়েছে আমদানি শুল্ক। সরকারের যুক্তি এতে খুচরো বাজারে নিয়ন্ত্রণে থাকবে ডালের দাম।
মূলত কানাডা, রাশিয়া এবং অস্ট্রেলিয়া থেকে হলুদ মটর আমদানি করে নয়াদিল্লি। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ছোলার ডালের বিকল্প হিসাবে মটর ডালকে তুলে ধরতে এর উপর আমদানি শুল্ক মকুব করে কেন্দ্র। এর সময়সীমা চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ধার্য করা হয়েছিল। চলতি আর্থিক বছর (পড়ুন ২০২৪-’২৫) শেষ হওয়ার মুখে যা বৃদ্ধি করল সরকার।
২০১৭ সালে ছোলার উৎপাদন কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়ে সরকার। ওই সময় থেকে ছোলার ডাল আমদানি করা শুরু করে নয়াদিল্লি। পাশাপাশি, সংশ্লিষ্ট ফসলটির উৎপাদন বৃদ্ধির দিকে নজর দিয়েছিল প্রশাসন। ফলে ছোলার ডালের আমদানির উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে মোদী সরকার।
গত বছর রেকর্ড পরিমাণ ডাল আমদানি করে ভারত। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, তার মধ্যে হলুদ মটরের পরিমাণ ছিল ৩০ লক্ষ টন। এ দেশের আমজনতা বছরে প্রায় ২৯ মেট্রিক টন ডাল খেয়ে থাকেন। এর মধ্যে সাধারণত ১৫ থেকে ১৮ শতাংশ বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়।
বর্তমানে হলুদ মটর উৎপাদনে কেজি প্রতি ৩২ থেকে ৩৫ টাকা খরচ হয়। তবে এর থেকে তৈরি ডালের দাম খুচরো বাজারে কেজিতে ৪০ টাকা। অন্যান্য ডালগুলির দর ৯০-১৬০টাকা/কেজির মধ্যে ঘোরাফেরা করতে দেখা গিয়েছে।
ঘরোয়া বাজারে সরবরাহ বৃদ্ধির জন্য ২০২১ সালের জুলাই মাসে মুসুর ডালের উপর মূল আমদানি শুল্ক শূন্যে নামিয়ে এনেছিল মোদী সরকার। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে কৃষি অবকাঠামো সেসের তালিকা থেকেও সংশ্লিষ্ট ডালটিকে বের করে দেয় কেন্দ্র। ওই সেসের পরিমাণ ছিল ১০ শতাংশ। কিন্তু পরবর্তী সময়ে এই সেস বেশ কয়েকবার বৃদ্ধি করা হয়েছে। বর্তমানে মুসুর ডালের উপর মৌলিক শুল্ক পাঁচ শতাংশ এবং উন্নয়ন সেস পাঁচ শতাংশ রয়েছে।