Advertisement
E-Paper

স্বল্প সঞ্চয়ে সুদ ছাঁটাই নিয়ে মোদীকে আক্রমণ রাহুলের

স্বল্প সঞ্চয়ে সুদ কমানো নিয়ে কেন্দ্রকে বিঁধতে এ বার মাঠে নামলেন কংগ্রেস ভাইস প্রেসিডেন্ট রাহুল গাঁধী। শনিবার একের পর এক টুইটে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চাঁছাছোলা আক্রমণ করেছেন তিনি। উস্‌কে দিয়েছেন মধ্যবিত্তের কষ্টের সঞ্চয়ে সরকারের হানা দেওয়ার অভিযোগকে। তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে সুদে কোপের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি তুলেছে সঙ্ঘ পরিবারের কর্মী সংগঠন ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘও (বিএমএস)।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৬ ০২:৪৫

স্বল্প সঞ্চয়ে সুদ কমানো নিয়ে কেন্দ্রকে বিঁধতে এ বার মাঠে নামলেন কংগ্রেস ভাইস প্রেসিডেন্ট রাহুল গাঁধী। শনিবার একের পর এক টুইটে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চাঁছাছোলা আক্রমণ করেছেন তিনি। উস্‌কে দিয়েছেন মধ্যবিত্তের কষ্টের সঞ্চয়ে সরকারের হানা দেওয়ার অভিযোগকে। তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে সুদে কোপের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি তুলেছে সঙ্ঘ পরিবারের কর্মী সংগঠন ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘও (বিএমএস)।

কেন্দ্রের অবশ্য গোড়া থেকেই দাবি, প্রতিবার মার্চে স্বল্প সঞ্চয়ে সুদের হার ঘোষণা করা হয়। এ বারও তা করা হয়েছে বাজারের (মূলত সরকারি ঋণপত্র) রিটার্নের কথা মাথায় রেখে। এর দরুন আগামী দিনে ঋণে সুদ কমার রাস্তা প্রশস্ত হবে বলেও তাদের দাবি।

শুক্রবারই আমজনতা, বিশেষত অবসর নেওয়া মানুষের রাতের ঘুম কেড়ে স্বল্প সঞ্চয়ে সুদ এক ধাক্কায় অনেকখানি কমিয়ে দিয়েছে কেন্দ্র। কোপ পড়েছে পিপিএফ, কিষাণ বিকাশ পত্র (কেভিপি) থেকে শুরু করে ডাকঘরের প্রায় সমস্ত প্রকল্পে। এই নিয়ে এ দিন মোদীকে বিঁধে রাহুলের টুইট, ‘‘পিপিএফ, কেভিপি-সহ স্বল্প সঞ্চয়ে সুদ ছাঁটাই। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে রোজগার করা মধ্যবিত্তকে ফের আক্রমণ করল মোদী সরকার।’’ একই সঙ্গে হুঁশিয়ারি, ‘‘কৃষক, গরিবদের ডোবানোর পরে এ বার মধ্যবিত্তদের ডোবাচ্ছে কেন্দ্র। মোদীজি, আমজনতা কিন্তু আপনার ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের রাজনীতি ধরে ফেলছে!’’

অনেকে বলছেন, সুদ কমানোর সিদ্ধান্তে প্রবল ক্ষোভ দানা বেঁধেছে আমজনতার বড় অংশের মধ্যে। হতাশ অবসরপ্রাপ্তরা। তা মাথায় রেখে গতকালই এর বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিল কংগ্রেস। এ দিন নিজে মাঠে নেমে সেই আক্রমণকে আরও ধারালো করতে চেয়েছেন রাহুল।

কেন্দ্রের অস্বস্তি বাড়িয়ে শুক্রবারের মতো এ দিনও সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছে বিএমএস। তাদের দাবি, মোদী সরকার যে বাজার অর্থনীতির পথে হাঁটার চেষ্টা করছে, ভারতে তা অচল। সাধারণ সম্পাদক ব্রিজেশ উপাধ্যায় বলেন, ‘‘দীর্ঘ মেয়াদি ও স্বল্প সঞ্চয়ে বিএমএস সুদ কমানোর বিরোধী। আমরা চাই, সাধারণ মানুষের কথা মাথায় রেখে এই সিদ্ধান্ত ফিরে দেখুক কেন্দ্র।’’ উল্লেখ্য, গতকালও তিনি আনন্দবাজারকে বলেন, ‘‘মানুষকে চিরাচরিত সঞ্চয়ে নিরুৎসাহ করে শেয়ার বাজারের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। আর্থিক নীতির আমূল বদল দরকার।’’

কেন্দ্রের দাবি, স্বল্প সঞ্চয়ের সুদ যে এ বার বাজারের (মূলত সরকারি ঋণপত্র) রিটার্নের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে ঠিক করা হবে, তা আগেই জানিয়েছিল তারা। বলেছিল, তিন মাস অন্তর সুদ ফিরে দেখার কথা। তাদের যুক্তি, ঝিমিয়ে পড়া অর্থনীতির চাকায় গতি ফেরাতে কয়েক দফায় ১২৫ বেসিস পয়েন্ট সুদ (রেপো রেট) ছাঁটাই করেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। কিন্তু ওই সময়ে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলি সুদ কমিয়েছে ৭০ বেসিস পয়েন্ট মতো। অর্থাৎ, শীর্ষ ব্যাঙ্কের সুদ ছাঁটাইয়ের সুফল পুরোপুরি পৌঁছয়নি সাধারণ মানুষের দরজায়। এ প্রসঙ্গে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলির যুক্তি ছিল, স্বল্প সঞ্চয়ে সুদ চড়া। তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমানতে সুদ গুনতে হচ্ছে তাদের। কমানো যাচ্ছে না তহবিল সংগ্রহের খরচ। ফলে ছাঁটাই করা সম্ভব হচ্ছে না ঋণে সুদের হারও। কেন্দ্রের আশা, স্বল্প সঞ্চয়ে সুদ নামলে, তহবিল সংগ্রহের খরচ কমবে ব্যাঙ্কগুলির। সে ক্ষেত্রে ঋণে সুদ কমলে, কিছুটা হাল্কা হবে বাড়িঋণ, গাড়িঋণের মাসিক কিস্তি। ধারের বোঝা কমবে কেন্দ্র এবং রাজ্যগুলির। গতি বাড়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে অর্থনীতির চাকাতেও।

কেন্দ্রের দ্বিতীয় যুক্তি ছিল, সরকারি ঋণপত্রের রিটার্নের তুলনায় বেশি হারে স্বল্প সঞ্চয়ে যে সুদ দেওয়া হত, তা আসলে ঘুরপথে ভর্তুকি। ফলে সুদ ছাঁটাই করে আদপে ভর্তুকির বোঝাই কমাতে চেয়েছে তারা।

কিন্তু এই সওয়ালে সন্তুষ্ট নন আমজনতার বড অংশ। পিপিএফে সুদ ৮.৭% থেকে কমে হচ্ছে ৮.১%। কেভিপিতে ৮.৭% থেকে নেমে আসছে ৭.৮ শতাংশে। অনেকটা কম সুদ মিলবে পাঁচ বছরের এনএসসি থেকে শুরু করে ডাকঘরের সমস্ত মেয়াদি আমানতে। রেয়াত করা হয়নি শিশুকন্যা ও প্রবীণদের প্রকল্পকেও। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই ক্ষোভ দানা বেঁধেছে অনেকের মধ্যে। আর তা আঁচ করেই এখন কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাচ্ছে বিরোধী দল ও কর্মী সংগঠনগুলি।

ShortTermInvestment RahulGandhi NarendraModi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy