Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

সত্যম কাণ্ডে সাত বছরের জেল রাজুর

সত্যম কেলেঙ্কারির প্রধান অভিযুক্ত বি রামলিঙ্গ রাজু ও তাঁর ভাই বি রাম রাজুকে সাত বছর সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিল বিশেষ আদালত। সঙ্গে সাড়ে পাঁচ কোটি টাকার জরিমানা। বৃহস্পতিবার আদালত সাত বছরের জন্য জেলে যাওয়ার রায় দিয়েছে সংস্থার প্রাক্তন সিএফও বদলামণি শ্রীনিবাস, প্রাইসওয়াটারহাউস কুপার্সের তরফে প্রাক্তন হিসাব পরীক্ষক (অডিটর) এস গোপালকৃষ্ণন এবং টি শ্রীনিবাস সমেত আরও ৮ জনকে। সেই সঙ্গে ২৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানাও দিতে বলা হয়েছে তাঁদের।

আদালত ছাড়ছেন রাজু (মাঝে)। ছবি: এএফপি

আদালত ছাড়ছেন রাজু (মাঝে)। ছবি: এএফপি

সংবাদ সংস্থা
হায়দরাবাদ শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৫ ০২:১৯
Share: Save:

সত্যম কেলেঙ্কারির প্রধান অভিযুক্ত বি রামলিঙ্গ রাজু ও তাঁর ভাই বি রাম রাজুকে সাত বছর সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিল বিশেষ আদালত। সঙ্গে সাড়ে পাঁচ কোটি টাকার জরিমানা।

বৃহস্পতিবার আদালত সাত বছরের জন্য জেলে যাওয়ার রায় দিয়েছে সংস্থার প্রাক্তন সিএফও বদলামণি শ্রীনিবাস, প্রাইসওয়াটারহাউস কুপার্সের তরফে প্রাক্তন হিসাব পরীক্ষক (অডিটর) এস গোপালকৃষ্ণন এবং টি শ্রীনিবাস সমেত আরও ৮ জনকে। সেই সঙ্গে ২৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানাও দিতে বলা হয়েছে তাঁদের।

২০০৯ সালের জানুয়ারিতে রামলিঙ্গ রাজুর বিস্ফোরক ই-মেল স্বীকারোক্তির পরেই সামনে আসে সত্যম কেলেঙ্কারি। সেখানে তিনি স্বীকার করেন যে, বছরের পর বছর সত্যমের ব্যবসা, বরাত ও মুনাফার অঙ্ক বাড়িয়ে দেখিয়েছেন তাঁরা। তখন ৭,৮০০ কোটির ওই আর্থিক জালিয়াতি দেশের বৃহত্তম কর্পোরেট কেলেঙ্কারির ‘তকমা’ পেয়েছিল। পরে সিবিআই কর্তারা জানান, আসলে ওই অঙ্ক ১৪ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি।

এই কেলেঙ্কারির প্রধান অভিযুক্ত হিসেবেই ২০০৯ সালের এপ্রিলে রাজুর বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে সিবিআই। জেলে যেতে হয় তাঁকে। দেড় বছরেরও বেশি জেলে থাকার পরে ২০১০ সালের অগস্টে তাঁকে মূলত অসুস্থতার কারণে জামিনে মুক্তি দেয় অন্ধ্রপ্রদেশ হাইকোর্ট। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাজুকে ফের জেলেরই সাজা শুনিয়েছে আদালত। তাঁর আইনজীবী অবশ্য জানিয়েছেন, শাস্তি কমানোর আর্জির পাশাপাশি এই রায়ের বিরুদ্ধে শীঘ্রই উচ্চতর আদালতে যাবেন তাঁরা।

তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের আইকন থেকে জালিয়াতির অভিযোগে জেলযাত্রী। প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টনের প্রশংসা কুড়নো থেকে প্রতারণা ও ফৌজদারি চক্রান্তের ধারায় অভিযুক্ত। হার্ভার্ড বিজনেস স্কুলের এই প্রাক্তনীর এমন উল্কার গতিতে পতন রীতিমতো চমকে দেওয়ার মতো। তবুও এ দিন আদালতের রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন সিআইআই প্রেসিডেন্ট সুমিত মজুমদার-সহ অনেকে। তাঁদের আশা, এই রায় আগামী দিনে কর্পোরেট কেলেঙ্কারিতে রাশ টানতে কিছুটা সহায়ক হবে।

বিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে ‘ওয়াই-টু-কে’ সমস্যা নিয়ে তোলপাড় হচ্ছিল তথ্যপ্রযুক্তি দুনিয়া। আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল যে, ২০০০ সাল এলেই তার শেষ দুই অক্ষর ‘০০’-কে ১৯০০ সালের শেষ দু’অক্ষরের থেকে আলাদা করে চিনতে পারবে না কম্পিউটার। ফলে হারিয়ে যাবে বিপুল তথ্য। সমস্যা তৈরি হবে দুনিয়া জুড়ে। এই সমস্যার সমাধান খুঁজেই দ্রুত উঠে আসে সত্যম। হয়ে ওঠে দেশের চতুর্থ বৃহত্তম তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা। কিন্তু ২০০০ সাল পেরোনোর কিছু পর থেকেই বরাতে ভাটা শুরু হয়। তখনই সংখ্যায় ওই কারচুপি শুরু করেন রাজু। সঙ্গে জমি ব্যবসায় রাতারাতি মুনাফার লোভও ডোবায় তাঁকে। তিনি তখন নিজেই বলেছিলেন, ‘‘বাঘের পিঠে চড়ে বসেছি। প্রাণ না-খুইয়ে কী ভাবে নামব, জানা নেই।’’

মহীন্দ্রা গোষ্ঠী কিনে নেওয়ার পরে খাদের কিনারা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে রাজুর হাতে গড়া সংস্থা সত্যম। কিন্তু সব না-খুইয়ে বাঘের পিঠ থেকে আর নামতে পারেননি রাজু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE