আরবিআই গভর্নর শক্তিকান্ত দাস। —ফাইল চিত্র।
দেশে সুদের হার আপাতত কমার সম্ভাবনা দেখছে না রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। শুক্রবার কৌটিল্য ইকনমিক কনক্লেভে এসে আরবিআই গভর্নর শক্তিকান্ত দাস বরং ঝুঁকি বহাল থাকার ইঙ্গিতই দিয়েছেন। বলেছেন, চড়তে থাকা অশোধিত তেলের দাম এবং অশান্ত পশ্চিম এশিয়ার প্রেক্ষিতে অনিশ্চিত বিশ্ব অর্থনীতির ধাক্কা লাগার কথা। তাঁর বার্তা, চড়া সুদের জমানা কত দিন চলবে, সেটা শুধু সময় বলতে পারে। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের দায়িত্ব শুধু মূল্যবৃদ্ধিকে ৪ শতাংশে নামানো। সে জন্য তাঁরা বাড়তি সতর্ক। এমনকি তেমন প্রয়োজন পড়লে যে কোনও পদক্ষেপ করতে পিছপা হবেন না।
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, যে কোনও পদক্ষেপ বলতে হয়তো প্রয়োজনে সুদ বৃদ্ধির ইঙ্গিতই দিয়েছেন শক্তিকান্ত। ঋণনীতিতেও দিয়েছিলেন। বিশেষত ফের যেহেতু বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম বাড়ছে। ফলে মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কাও বহাল। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, অদূর ভবিষ্যতে যে ঋণগ্রহীতা সাধারণ মানুষের চড়া সুদের হাত থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার সম্ভাবনা চোখে পড়ছে না, এতে সেটা স্পষ্ট হল।
আজ শক্তিকান্ত বলেন, সুদ এখন চড়াই থাকবে। কত দিন ধরে চড়া থাকবে, সেটা বলতে পারবে শুধু সময় এবং বিশ্বের ঘটনাসমূহ। দেশে মূল্যবৃদ্ধির হার লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে না-আসা পর্যন্তও সুদ কমানো সম্ভব নয়। তাঁর কথায়, “মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আরবিআই বাড়তি সজাগ। তাকে নামাতে সব রকম পদক্ষেপ করতে প্রস্তুত। আমাদের লক্ষ্য, মূল্যবৃদ্ধির হারকে ৪ শতাংশে নামানো। একে বাগে আনতে পদক্ষেপ করার ক্ষেত্রে আত্মসন্তুষ্টির কোনও জায়গা নেই।’’
শুক্রবারই প্রকাশিত হয়েছে এ মাসের গোড়ায় অনুষ্ঠিত হওয়া ঋণনীতি কমিটির তিন দিনব্যাপী বৈঠকের কার্যবিবরণী। সেখানেও দেখা গিয়েছে শক্তিকান্ত-সহ কমিটির সব সদস্য সুদ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বাড়তি সতর্কতার কথা বলেছেন। ডেপুটি গভর্নর মাইকেল দেবব্রত পাত্রের বক্তব্য ছিল, মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের পূর্বাভাস কতটা বাস্তবায়িত হচ্ছে তা দেখার জন্য সেপ্টেম্বর এবং অক্টোবরের দামে নজর রাখা জরুরি। পূর্বাভাস মিলে গেলে আর্থিক বৃদ্ধির গতি বাড়াতে দীর্ঘমেয়াদি ঋণনীতি গ্রহণে উদ্যোগী হতে পারবে শীর্ষ ব্যাঙ্ক।
আরবিআই গত বছরের মে মাস থেকে টানা মোট ২৫০ বেসিস পয়েন্ট রেপো রেট (যে সুদে ব্যাঙ্কগুলিকে ধার দেয় তারা) বাড়িয়েছে। এর ফলে ঋণ এবং আমানতেও সুদের হার বেড়েছে। এ দিন শক্তিকান্ত বলেন, আপাতত সুদ বাড়ানো হচ্ছে না। তবে ওই ২৫০ বেসিস পয়েন্ট সুদ বৃদ্ধি যাতে ব্যাঙ্কগুলি ঋণ এবং আমানতে পুরোপুরি কার্যকর করে, তা নিশ্চিত করা হচ্ছে। এ দিন অবশ্য ভারতের অর্থনীতি মজবুত বলে আশ্বাস দিয়েছেন শক্তিকান্ত। তবে বিশ্ব অর্থনীতির ঝাপ্টা থেকে গা বাঁচানো যে কঠিন, সেই আশঙ্কা লুকোননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy