রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে দক্ষ কর্মীর অভাব রয়েছে বলে বহু দিন ধরেই সতর্ক করছেন বিশেষজ্ঞেরা। শুক্রবার এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দফতরের মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়ের কাছে অভিযোগ জানালেন বিভিন্ন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার শীর্ষকর্তারা। আর সেই আলাপচারিতার সূত্রেই সামনে এল, এই ফাঁক দূর করার জন্য বছর দেড়েক আগে বিশেষজ্ঞেরা মৌলানা আবুল কালাম আজাদ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে একটি প্রস্তাব জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু সেটি নিয়ে এখনও নাড়াচাড়াই হয়নি।
এ দিন টিসিএস, ক্যাপজেমিনি, ব্রিটিশ টেলিকমের মতো সংস্থার কর্তারা দক্ষ কর্মীর অভাবের কথা জানান মন্ত্রীকে। আক্ষেপ করে বলেন, রাজ্য তথ্যপ্রযুক্তিতে জোর দিলেও শিল্পের চাহিদা মতো তৈরি কর্মীর ঘাটতি রয়েছে বাংলায়। সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ সন্দীপ সেনগুপ্ত জানান, একাধিক ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞেরা তৎকালীন শিক্ষা সচিব মণীশ জৈনের সঙ্গে দক্ষ তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীর ঘাটতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার পরে ওই রিপোর্ট জমা দিয়েছিলেন। তাতে ইঞ্জিনিয়ারিং-এর পাঠ্যসূচিতে কী কী বদল প্রয়োজন, তা বলা হয়েছিল। পড়ুয়াদের ‘সফ্ট স্কিল’ (কথাবার্তা, সংযোগ বা ব্যক্তিত্ব) উন্নত করা-সহ আরও নানা পরামর্শ ছিল। কিন্তু বছর দেড়েক পরেও সুপারিশ কার্যকর করা হয়নি। তা পড়েই আছে। ফলে প্রশ্ন উঠছে, পাঠ্যসূচি যুগোপযোগী না হলে কর্মীরা দক্ষ হবেন কী করে?
সন্দীপের বার্তা, তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্র যে ভাবে প্রতিদিন বদলাচ্ছে, তাতে তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে পাঠ্যসূচি পরিবর্তন জরুরি। না হলে একাংশ কাজই পাবেন না, কিংবা পেলেও অচিরেই চাকরি যাবে। তাঁর কথায়, ‘‘রাজ্যের স্বার্থেই অবিলম্বে ইঞ্জিনিয়ারিং পাঠ্যক্রমের পাঠ্যসূচিকে আরও আধুনিক করে তোলা হোক।’’
বাবুল এবং তথ্যপ্রযুক্তির দফতরের সচিব অনুপ আগরওয়াল জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে শীঘ্রই পদক্ষেপ করবে রাজ্য। যথাযথ প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য পাঠ্যসূচি পরিবর্তনের সুপারিশগুলি ফের তাঁদের কাছে জমা দিতে অনুরোধ করেন মন্ত্রী-সচিব। দক্ষ কর্মী তৈরির জন্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প নিয়েও আলোচনা হয়। বাবুল বলেন, ‘‘তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্র প্রতিনিয়ত বদলাচ্ছে। আমরা তা মাথায় রেখেছি। কোনও জায়গায় ফাঁক থাকলে তা সরাসরি আমাদের জানান। সাধ্য মতো চেষ্টা করব।’’ সেই সঙ্গে মন্তব্য, সব কাজ সরকার করবে না। শিল্পকেও এগিয়ে আসতে হবে। সংস্থাগুলিকে কর্মীদের আধুনিক মানের প্রশিক্ষণ দেওয়া কিংবা নতুন সংস্থাগুলির দায়িত্ব নেওয়ার আর্জিও জানান তিনি।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)