Advertisement
E-Paper

রেড কর্নার নোটিস জারি নীরবের নামে

মুম্বইয়ে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে চার্জশিটের ভিত্তিতে নীরব ছাড়াও তাঁর ভাই নীশল ও তাঁদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী সুভাষ পরবের নামেও ওই নোটিস জারি করেছে ইন্টারপোল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৮ ০৫:৫১
নীরব মোদী। ফাইল চিত্র।

নীরব মোদী। ফাইল চিত্র।

নীরব মোদীকে দেশে ফেরাতে ইন্টারপোলের দ্বারস্থ হয়েছিল সিবিআই। তাতে সাড়া দিয়েই পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক (পিএনবি) প্রতারণা কাণ্ডের ওই মূল অভিযুক্তের বিরুদ্ধে রেড কর্নার নোটিস জারি করল ইন্টারপোল। যার অর্থ, এ বার ইন্টারপোলের যে কোনও সদস্য দেশ থেকেই তাঁকে গ্রেফতার করতে পারবে পুলিশ। মুম্বইয়ে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে চার্জশিটের ভিত্তিতে নীরব ছাড়াও তাঁর ভাই নীশল ও তাঁদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী সুভাষ পরবের নামেও ওই নোটিস জারি করেছে ইন্টারপোল। এর ফলে আগামী দিনে অভিযুক্তদের ধরা সহজ হবে বলে দাবি কেন্দ্রের। কিন্তু বিরোধীদের অভিযোগ, আগে তো নীরবদের দেশ ছেড়ে পালাতে সাহায্যই করেছে মোদী সরকার।

ইন্টারপোলের নিয়ম মানে ১৯২টি দেশ। সূত্রের খবর, গত ২৯ জুন ওই নোটিস জারি হলেও, আজ বিষয়টি সামনে আনা হয়েছে। নোটিসে ইন্টারপোল সদস্য দেশগুলিকে জানিয়েছে, ভারতে অভিযুক্ত ওই ব্যক্তিকে যদি তাদের সীমানার মধ্যে দেখা যায়, তা হলে অবিলম্বে গ্রেফতার বা আটক করতে হবে। তার পরে তাঁকে ইন্টারপোলের মধ্যস্থতায় প্রত্যর্পণের দাবি জানাতে পারবে দিল্লি।

গত মাসের শুরুতে ইন্টারপোলের কাছে নীরব, নীশল, সুভাষ— তিন জনের বিরুদ্ধেই রেড কর্নার নোটিস জারির দাবি জানিয়েছিল সিবিআই। দেরিতে হলেও তাতে পদক্ষেপ করে ইন্টারপোল। তারা নীরবদের বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ এনেছে।

ফিরে দেখা

২৯ জানুয়ারি: নীরব মোদী ও তাঁর মামা মেহুল চোক্সীর বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ পিএনবি-র।

৫ ফেব্রুয়ারি: তদন্ত শুরু সিবিআইয়ের।

১৪ ফেব্রুয়ারি: সিবিআই জানাল, প্রতারণার অঙ্ক প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা। পিএনবি-র দেওয়া গ্যারান্টি ভাঙিয়ে অন্য ব্যাঙ্কের বিদেশি শাখা থেকে ধার নেওয়ার অভিযোগ নীরবের সংস্থার বিরুদ্ধে।

১৫ ফেব্রুয়ারি: পিএনবি অভিযোগ আনার আগেই দেশ ছাড়েন মোদী ও চোক্সী, জানাল সিবিআই।

১৭ ফেব্রুয়ারি: নীরবের বাড়ি ও অফিস থেকে ৫৬৭৪ কোটি টাকার হিরে, সোনার গয়না আটক ইডি-র।

২০ ফেব্রুয়ারি: পিএনবি-কে চিঠি লিখে নীরবের দাবি, তাদের নেওয়া ধারের অঙ্ক অনেক কম।

২৭ ফেব্রুয়ারি: মার্কিন মুলুকে দেউলিয়া ঘোষণা নীরবের সংস্থার।

৭ মার্চ: দিল্লি হাইকোর্টে মামলা ঠুকলেন নীরব।

৯ মার্চ: মোদী, চোক্সীর ১০৭টি সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু।

৮ এপ্রিল: মামা-ভাগ্নের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি সিবিআইয়ের।

১৪ মে: নীরবের বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের চার্জশিট।

২৪ মে: চার্জশিট পেশ ইডি-রও।

২ জুলাই: নীরব, তাঁর ভাই নীশল মোদী এবং তাঁর সংস্থার এক কর্মী সুভাষ পরবের বিরুদ্ধে রেড কর্নার নোটিস জারি করল ইন্টারপোল।

বিজেপি নেতৃত্ব একে সরকারের বড় সাফল্য হিসেবে তুলে ধরতে মরিয়া। কিন্তু বিরোধীদের প্রশ্ন, নোটিস জারি হতে এত দেরি হল কেন? সেই সুযোগে তো বিভিন্ন দেশে গা-ঢাকা দেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন নীরব। সিবিআই সূত্রের খবর, লন্ডন, হংকং আমেরিকা, প্যারিস ঘুরে আপাতত বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে লুকিয়ে রয়েছেন নীরব।

এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রকে দুষে বিরোধীদের অভিযোগ, যে ভাবে ব্রাসেলসে গা-ঢাকা দেওয়ার পরে রেড কর্নার নোটিস জারি হল, তার মধ্যে ষড়যন্ত্রের আভাস রয়েছে। কংগ্রেসের দাবি, নীরব যাতে উধাও হতে পারেন, সে জন্য কেন্দ্রের একাংশ সক্রিয় ছিল। তাই ফেব্রুয়ারিতে পাসপোর্ট বাতিল করা সত্ত্বেও তাঁকে ধরতে ইন্টারপোলের কাছে সে ভাবে তদ্বির করা হয়নি। পাসপোর্ট বাতিলের প্রায় চার মাস পরে ইন্টারপোলের দ্বারস্থ হয় সিবিআই। নীরবের পাঁচটি পাসপোর্ট থাকার কথা জানিয়েছে ইন্টারপোলও। দিয়েছে সেগুলির বিস্তারিত তথ্যও।

সিবিআইও স্বীকার করেছে, পাসপোর্ট বাতিলের পরেও সেটি নিয়েই লন্ডন, আমেরিকা প্যারিস, হংকং ঘুরেছেন নীরব। তাদের অবশ্য দাবি, পাসপোর্ট বাতিলের পরেই তারা ইন্টারপোলের কাছে নোটিস জারির আবেদন করেছিল। পাঠানো হয়েছিল আদালতের কাগজও। কিন্তু এই বিষয়ে সবুজ সঙ্কেত দিতে অযথা দেরি করে তারা। সে জন্যই নীরব ব্রাসেলসে পালানোর সুযোগ পান।

Nirav Modi PNB Scam নীরব মোদী
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy