Advertisement
E-Paper

ঘুষ কাণ্ডে গ্রেফতার স্যামসাং প্রধান

অবশেষে গ্রেফতার হলেন স্যামসাং গোষ্ঠীর প্রধান জে ওয়াই লি। যিনি দক্ষিণ কোরীয় বহুজাতিকটির প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের তৃতীয় প্রজন্মের প্রতিনিধি, ভাইস চেয়ারম্যানও। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ব্যবসায় সুবিধা পেতে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট পার্ক গুন হে-র দীর্ঘ দিনের বন্ধু চোয়ে সুন সিল-কে ঘুষ দেওয়ার।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০২:১৯
জে ওয়াই লি

জে ওয়াই লি

অবশেষে গ্রেফতার হলেন স্যামসাং গোষ্ঠীর প্রধান জে ওয়াই লি। যিনি দক্ষিণ কোরীয় বহুজাতিকটির প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের তৃতীয় প্রজন্মের প্রতিনিধি, ভাইস চেয়ারম্যানও। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ব্যবসায় সুবিধা পেতে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট পার্ক গুন হে-র দীর্ঘ দিনের বন্ধু চোয়ে সুন সিল-কে ঘুষ দেওয়ার। যে অভিযোগের জেরে ইতিমধ্যেই ইমপিচ করা হয়েছে পার্ককে। নামে এখনও প্রেসিডেন্ট থাকলেও, কেড়ে নেওয়া হয়েছে সব ক্ষমতা। আর জেলে যেতে হয়েছে সিলকে।

এই ঘুষ-কাণ্ডের জন্য বৃহস্পতিবারই সোলের কেন্দ্রীয় জেলা আদালতে দীর্ঘ আট ঘণ্টা জেরার পরে আটক করা হয়েছিল লি-কে। শুক্রবার গ্রেফতার করা হল। ফলে সারা দুনিয়ায় এক ডাকে চেনা সংস্থার শীর্ষ কর্তার ঠাঁই হয়েছে জেলের কুঠুরিতে। ৪০ লক্ষ ডলারের প্রাসাদে যিনি রাজকীয় আরামে অভ্যস্ত, তাঁকে শুতে হচ্ছে মাটিতে। খেতে হচ্ছে বন্দিদের জন্য বরাদ্দ সাধারণ খাবার। স্নান করতে হচ্ছে লাগোয়া একচিলতে বাথরুমে। মাথায় প্রবল দুশ্চিন্তা পার্কেরও। ক্ষমতা ইতিমধ্যেই গিয়েছে। এ বার পার্লামেন্টও বিপক্ষে গেলে, তিনিই হবেন দক্ষিণ কোরিয়ার ভোটে জেতা প্রথম প্রেসিডেন্ট, যাঁকে ইমপিচ হয়ে সরতে হবে।

২০১৫ সালে গোষ্ঠীর দুই সংস্থা স্যামসাং সিঅ্যান্ডটি এবং চেইল ইন্ডাস্ট্রিজ মেশানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল স্যামসাং। সরকারি আইনজীবীদের অভিযোগ, সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের এতে আপত্তি ছিল। তখনই সিলের তৈরি অসরকারি সংস্থাকে ৩.৭৭ কোটি ডলার ঘুষ দিয়েছিল স্যামসাং। তার বিনিময়ে দক্ষিণ কোরিয়ার সরকারি পেনশন তহবিল (যারা স্যামসাঙের অন্যতম বড় শেয়ারহোল্ডার) এতে অনুমোদন দেয়। এ ছাড়াও, সিলের মেয়ের ঘোড়সওয়ারির ট্রেনিংয়ের জন্য কয়েক কোটি ইউরো দিয়েছিল সংস্থাটি। যদিও এই সব অভিযোগ আগাগোড়া অস্বীকার করেছেন লি এবং স্যামসাং।

পার্ক গুন হে

এই পুরো ঘটনাটির মধ্যে আবার জয়ললিতা-শশীকলার সম্পর্কের মিল পাচ্ছেন অনেকে। কারণ, পার্কের চার দশকের বন্ধু সিলের বিরুদ্ধে অর্থের বিনিময়ে বেশ কিছু সংস্থা ও ব্যক্তিকে বাড়তি সুবিধা পাইয়ে দেওয়া, জালিয়াতির মতো নানা অভিযোগ উঠেছে। বলা হয়েছে, কোনও সরকারি পদে না-থেকেও শুধু প্রেসিডেন্টের বন্ধু হওয়ার সুযোগ নিয়ে ঘুষ নিতে তিনি তৈরি করেছিলেন ভুঁইফোড় সংস্থা। এ ভাবে তিনি ও তাঁর পরিবার বিপুল সম্পত্তির অধিকারীও হয়েছেন বলে অভিযোগ। টাকার বদলে সরকারি সুবিধা দেওয়ার অভিযোগে তাই জড়িয়েছেন পার্কও। ঠিক যে ভাবে দুর্নীতি কেলেঙ্কারিতে তামিলনাড়ুর প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতার সঙ্গে বারবার নাম জড়িয়েছে তাঁর ঘনিষ্ঠ বান্ধবী শশিকলার।

স্যামসাং কর্ণধারদের সঙ্গে আইনের বিবাদ নতুন নয়। লি-র বাবা, স্যামসাঙের বর্তমান চেয়ারম্যান লি কুন হি-ও আগে আইনি ঝামেলায় জড়িয়েছেন। একই সমস্যা পোহাতে হয়েছে সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা লি বাইয়ুন চুল-কেও। তবে তাঁদের জেলে যেতে হয়নি। তাই লি-র গ্রেফতারির পরে অনেকে প্রশ্ন তুলছেন স্যামসাং গোষ্ঠীর ভবিষ্যৎ নিয়ে। যেহেতু ২০১৪ সাল থেকে এর প্রায় সমস্ত দায়িত্বই সামলাচ্ছিলেন তিনি।

এমনিতে এই গোষ্ঠীর ব্যবসার অঙ্ক দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় আয়ের ২০%। কিন্তু গ্যালাক্সি নোট-৭ কাণ্ডে তারা বড় ধাক্কা খেয়েছে। কড়া টক্কর চলছে অ্যাপলের সঙ্গে। ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে বেশ কিছু চিনা সংস্থা। এই অবস্থায় অনেকের প্রশ্ন, পেশাদার ম্যানেজাররা হয়তো রোজকার কাজ চালাবেন। কিন্তু বড় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রক্রিয়া আটকে বা শ্লথ হয়ে যাবে না তো? বিদেশে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে হবে না তো স্যামসাংকে? বিশ্বের নজর এখন সে দিকেই।

Park Geun-hye Jay Y. Lee Samsung Scam
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy